ঠাকুরগাঁওয়ে রাণীশংকৈল উপজেলায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় খাইরুল ইসলাম (৫৫) নামে এক নৈশপ্রহরীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার উপজেলার নেকমরদ ইউনিয়নের বামনবাড়ী এলাকার একটি ভুট্টাক্ষেত থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। 

নিহত খাইরুল ইসলাম ইউনিয়নের ভবানন্দপুর এলাকার বাসিন্দা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় শামসুদ্দিন হাসকিং মিলে নৈশপ্রহরী হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রতিদিনের মতো খাইরুল হাসকিং মিলে কাজে যান। রাতের কোনো এক সময় তাঁকে হত্যা করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। সকালে ভুট্টাক্ষেতে লাশ দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দিলে তারা লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।

রাতে শামসুদ্দিনের হাসকিং মিলে চুরির ঘটনাও ঘটেছে। এতে বাধা দেওয়ায় তাঁকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। খাইরুল নৈশপ্রহরীর পাশাপাশি নেকমরদ এলাকায় মতিন মার্কেট মসজিদে ইমামতি করতেন।

রাণীশংকৈল থানার ওসি আরশেদুল হক বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হাসকিং মিলের দুই গেটের চারটি তালা কাটা অবস্থায় পেয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মিলের মূল্যবান যন্ত্রাংশ চুরি দেখে ফেলায় তাঁকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। 

নিহত খাইরুলের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে জানিয়ে ওসি বলেন, সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার কাজ করছে পুলিশ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঠ ক রগ ও

এছাড়াও পড়ুন:

খাদি কাপড়ের জিআই স্বীকৃতিতে আনন্দে ভাসছেন কুমিল্লাবাসী

কুমিল্লার ঐতিহ্যের স্মারক খাদি কাপড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় আনন্দিত জেলার মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন, অবশেষে পেয়েছেন সেই সুখবর। গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে স্বীকৃতির এই সনদ দেওয়া হয়।

কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকার রামঘাটলা থেকে শুরু করে রাজগঞ্জ পর্যন্ত অন্তত ৩০০ খাদি পোশাকের দোকান। কান্দিরপাড়ের খাদি বসুন্ধরা দোকানের স্বত্বাধিকারী জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, শৈল্পিক ছোঁয়ায় কুমিল্লার খাদি এখন দেশ-বিদেশে বেশ সমাদৃত। ঐতিহ্যের খাদিতে এখন লেগেছে আধুনিকতা ও নান্দনিকতার ছোঁয়া। শত বছরের বেশি পুরোনো খাদির আরও অনেক আগেই জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া উচিত ছিল। অবশেষে স্বীকৃতি মিলেছে, এতেই আনন্দিত সবাই।

একই এলাকার খাদি জ্যোৎস্না স্টোরের মালিক তপন পাল বলেন, ‘কুমিল্লার প্রতিটি মানুষ খাদির এমন স্বীকৃতিতে আনন্দিত। শত বছর পার হলেও এখনো দেশ-বিদেশে খাদি কাপড়ের ব্যাপক চাহিদা।’

কুমিল্লার ইতিহাস গবেষক আহসানুল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, ১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধীর ডাকে সমগ্র ভারতবর্ষে অসহযোগ আন্দোলনের সময় কুমিল্লায় খাদিশিল্প প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ওই সময় বিদেশি পণ্য বর্জন করার জন্য আওয়াজ ওঠে। সর্বত্র এক আওয়াজ ‘মোটা কাপড়-মোটা ভাত’। সে সময় ভারতবর্ষের মানুষ দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে খাদি পোশাক ব্যবহার শুরু করেছিলেন। খাদের (গর্তে) চরকায় বসে এ কাপড় তৈরি করা হয় বলে এর নামকরণ হয় ‘খাদি’। শুরুতে মহাত্মা গান্ধী নিজেও কুমিল্লায় এসে খাদের চরকায় বসে খাদি কাপড় তৈরিতে উৎসাহ দেন।

এই গবেষক আরও বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারত পৃষ্ঠপোষকতা প্রত্যাহার করে নিলে কুমিল্লার খাদিশিল্প সংকটে পড়ে। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হাল ধরেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) প্রতিষ্ঠাতা আখতার হামিদ খান।

কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, জেলা প্রশাসনের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় গত বছর কুমিল্লার রসমালাই জিআই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কুমিল্লার খাদি ও বিজয়পুরের মৃৎশিল্পের জিআই স্বীকৃতির জন্য তখন থেকেই কাজ শুরু হয়। কুমিল্লার ‘ব্র্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত তিনটি পণ্যের মধ্যে দুটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। যে একটি বাকি আছে, সেটিও দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বীকৃতি পাবে বলে তিনি আশাবাদী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ