কিংবদন্তি খেলোয়াড়কে মরণোত্তর ক্ষমার ঘোষণা ট্রাম্পের
Published: 1st, March 2025 GMT
সুখবরটা যখন এল, তখন তিনি পৃথিবীতে নেই। গত বছর সেপ্টেম্বরে ৮৩ বছর বয়সে মারা গেছেন আমেরিকার বেসবল তারকা পিট রোজ। তিনি খেলায় বাজি ধরে আজীবন নিষিদ্ধ হন এবং পরে কর ফাঁকির দায়ে কারাবরণও করেছিলেন।
রোজ মারা যাওয়ার কয়েক মাস পরই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁকে মরণোত্তর ক্ষমা করার ঘোষণা দিলেন। মেজর লিগ বেসবলে (এমএলবি) সর্বকালের সর্বোচ্চ হিটের মালিক রোজকে হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথে বলেছেন, ‘আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আমি পিট রোজের ক্ষমার আদেশে স্বাক্ষর করব, যার বেসবলে বাজি ধরা উচিত ছিল না, তবে তিনি তো শুধু নিজের দলের জয়ের পক্ষেই বাজি ধরেছিলেন। বেসবল, যা এখন ধ্বংসের পথে, ঢিলেমি ছেড়ে পিট রোজকে বেসবলের হল অব ফেমে নির্বাচিত করা উচিত। যদিও অনেক দেরি হয়ে গেছে।’
আরও পড়ুনডোনাল্ড ট্রাম্প কোন ফুটবল ক্লাবের সমর্থক২১ জানুয়ারি ২০২৫খেলোয়াড়ি জীবনে ‘শার্লি হাসল’ তকমায় পরিচিত ছিলেন রোজ। কঠোর পরিশ্রম এবং দৃঢ় মানসিকতার জন্যও ছিলেন বিখ্যাত। এমএলবি ক্যারিয়ারের অনেক রেকর্ডই এই কিংবদন্তির দখলে।
রোজ সর্বকালের সর্বোচ্চ ৪২৫৬টি হিট করে মেজর লিগ বেসবলের রেকর্ড গড়েছিলেন, যা আজও কেউ ভাঙতে পারেনি। বেসবলে ‘হিট’ এমন একটি ব্যাটিং পারফরম্যান্স যেখানে ব্যাটসম্যান মাঠের বৈধ জায়গায় বল পাঠিয়ে নিরাপদে এক বা একাধিক বেস অতিক্রম করেন।
আরও পড়ুনট্রাম্প টুইটারে কোন ক্রিকেটারকে অনুসরণ করতেন?০৯ জানুয়ারি ২০২১রোজ ১৯৮৯ সালে সিনসিনাটি রেডসের ম্যানেজার হিসেবে বাজি ধরার জন্য স্থায়ীভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বেসবল থেকে নিষিদ্ধ হন। এর দুই বছর পর তিনি জায়গা হারান হল অব ফেম থেকে। তখন হল অব ফেমে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ তালিকায় থাকা খেলোয়াড়দের বিবেচনার রাখা হয়নি।
বাজি ধরার কথা শুরুতে স্বীকার করেননি রোজ। তবে ২০০৪ সালে তিনি দোষ স্বীকার করেন। তখনই রোজ জানিয়েছিলেন, সব সময় তাঁর দলের জয়ের পক্ষে বাজি ধরতেন, কখনোই তাঁদের হারের পক্ষে নয়। এ ছাড়া কর ফাঁকির কারণে ১৯৯০ ও ১৯৯১ সালের প্রথম দিকে পাঁচ মাসের জন্য কারাবরণও করেছিলেন রোজ।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।