পাবনার সাঁথিয়ায় সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে যানবাহনে ডাকাতির ঘটনায় মামলা হয়েছে। শনিবার (১ মার্চ) রাতে মামলাটি দায়ের হয়। মামলার বাদী হয়েছেন শাহীন মন্ডল নামে এক ভুক্তভোগী। 

এদিকে, গণমাধ্যমে অনেকগুলো গাড়িতে ডাকাতির ঘটনা উল্লেখ করা হলেও পুলিশের দাবি, মাত্র তিনটি গাড়িতে ডাকাতি হয়েছে।

আরো পড়ুন: সাঁথিয়ায় সড়কে গাছ ফেলে যানবাহনে ডাকাতি

আরো পড়ুন:

গ্রাহকদের টাকা হাতিয়ে নেওয়া মামলার ৫ আসামি কারাগারে 

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ৩

সাঁথিয়া থানার ওসি সাইদুর রহমান বলেন, “ডাকাতির ঘটনায় ভুক্তভোগী ও ক্ষতিগ্রস্ত শাহীন মন্ডল নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে নাম না জানা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। ভুক্তভোগী শাহীন মন্ডল পাবনা সদর উপজেলার টিকরী গ্রামের মৃত মুন্তাজ মন্ডলের ছেলে। মামলা করার সময় শাহীন মন্ডলের সঙ্গে ভুক্তভোগী আরো ৫-৬ এসেছিলেন।”

মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে ওসি সাইদুর রহমান বলেন, “শাহীন মন্ডল দাবি করেছেন, ঢাকা থেকে মাইক্রোসে তারা পাবনায় গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন। পথিমধ্যে সাঁথিয়া তলট ব্রিজের পাশে ছেচানিয়া এলাকায় ডাকাতের কবলে পড়েন। ডাকাতদল তাদের নগদ টাকা, মোবাইল লুট করে নিয়ে গেছে।”

তিনি আরো বলেন, “ডাকাত দল আশপাশের আরো ৫-৬টি যানবাহনে হানা দেয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। ডাকাতদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”

এদিকে, ঠিক কতটি যানবাহনে ডাকাতি হয়েছে তা নিয়ে চলছে আলোচনা। ডাকাতি ঘটনার প্রত্যক্ষদশী ও ভুক্তভোগীদের ভাষ্যমতে, গত শুক্রবার রাতে ঘটনার সময় গাড়ি জড়ো হয়েছিল অন্তত ৩০টি। তার মধ্যে ১৫ থেকে ২০টি গাড়িতে ডাকাতদল ডাকাতি করতে পেরেছে। পেছনে থাকা গাড়ির চালকরা অবস্থা খারাপ বুঝতে পেরে দ্রুত গাড়ি ঘুরিয়ে নিয়ে চলে যান।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও সিএনজি অটোরিকশা চালক সাঁথিয়ার রফিকুল ইসলাম বলেন, “ওই সময় গাড়ির আলোতে দেখে মনে হয়েছে, ট্রাক, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, সিএনজি অটোরিকশা মিলে ২৫ থেকে ৩০টি যানবাহন ছিল। তার মধ্যে ১৫ থেকে ২০টি গাড়িতে ওরা ডাকাতি করতে পেরেছে। যারা পরে এসে পেছনের দিকে ছিল তারা অবস্থা খারাপ বুঝতে পেরে দ্রুত গাড়ি ঘুরিয়ে নিয়ে চলে যান।’

পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) মশিউর রহমান মন্ডলের দাবি মাত্র ৩টি গাড়িতে ডাকাতি হয়েছে। তিনি বলেন, “আমাদের তথ্য মতে একটি হায়েচ, একটি সিএনজি অটোরিকশা ও একটি মোটরসাইকেলে ডাকাতি হয়। এর মধ্যে হায়েচে এক প্রবাসী ছিলেন। তিনি বিদেশ থেকে বাড়ি আসছিলেন, তার কাছ থেকে একটি লাগেজ, সিএনজি অটোরিকশার যাত্রীর কাছ থেকে একটি মোবাইল ও মোটরসাইকেল চালকের কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন নিয়েছে ডাকাতরা। এর বাইরে আর কোনো গাড়ি ডাকাতি হয়নি। শিগগির ডাকাতদলকে গ্রেপ্তার করা হবে।”

ঢাকা/শাহীন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড ক ত র ঘটন র ঘটন য় স এনজ

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ