নির্বাচনে যত দেরি, ক্ষতি তত বেশি: আমীর খসরু
Published: 3rd, March 2025 GMT
নির্বাচনে যত দেরি হবে, দেশ তত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, নির্বাচন যত দেরি করবে, দেশ তত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে, দেশে শান্তিশৃঙ্খলা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, দেশের দ্রব্যমূল্যের বিষয়টি দিন দিন খারাপ হচ্ছে, সেটা আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে।
আজ সোমবার জাতীয়তাবাদী কর আইনজীবী ফোরামের নবনির্বাচিত কমিটিকে নিয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এ কথা বলেন।
আমীর খসরু বলেন, ‘আমরা মনে করি, দেশের মানুষের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে দ্রুততম সময়ে গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরিয়ে আনতে হবে। একেকটা দিন যাচ্ছে গণতান্ত্রিক সরকার ব্যতীত, একেকটা সমস্যা বাড়ছে। এর থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হলো গণতান্ত্রিক অর্ডারের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে জবাবদিহি নিশ্চিত করা।’ তিনি বলেন, দায়বদ্ধ সরকার, যাদের পলিটিক্যাল ওয়েট থাকবে, যাদের পলিটিক্যাল মোবিলাইজেশন ক্যাপাসিটি থাকবে, যাদের পেছনে জনগণের সমর্থন থাকবে, তারাই এ সমস্যার সমাধান করতে পারে।
বিএনপি নেতা আমীর খসরু বলেন, পুলিশ, র্যাব ও সরকারি কর্মকর্তারা জনগণের সমর্থন ছাড়া কোনো কিছুর সমাধান করতে পারবেন না।
নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যে সম্ভব কি না, জানতে চাইলে আমীর খসরু বলেন, নির্বাচন জুন মাসের মধ্যে সম্ভব। নির্বাচন কমিশন যেটা বলছে, তাদের প্রস্তুতি সম্পর্কে কোনো সন্দেহ প্রকাশ করছে না। নির্বাচনের বিষয়টা সরকারকে বলতে হবে। সরকারের পলিটিক্যাল উইল (রাজনৈতিক ইচ্ছা) থাকতে হবে, ইচ্ছা থাকতে হবে এবং সেটার অপেক্ষায় জনগণ আছে।
এর আগে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ কর আইনজীবী ফোরামের নবনির্বাচিত নেতারা জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করেন। এ সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, কর আইনজীবী ফোরামের সভাপতি মাহবুবুস সালেকীন, সাধারণ সম্পাদক আবু নাসের মেসবাহ উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিতে সংগ্রাম, শপথ যুব সংসদের সদস্যদের
জ্বালানি অধিকার প্রতিষ্ঠায় সংগ্রাম করার অঙ্গীকার করেছেন ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) মনোনীত যুব সংসদের সদস্যরা। তাঁরা বলেছেন, জ্বালানি নিরাপত্তা জনগণের মৌলিক অধিকার। জ্বালানি খাতে জনগণের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে—এটাই সংগ্রামের অঙ্গীকার। জ্বালানি সুবিচার প্রতিষ্ঠা করা হবে।
ক্যাব আয়োজিত প্রথম জ্বালানি যুব সংসদীয় অধিবেশনের শেষ দিনে আজ শনিবার এমন ঘোষণা পাঠ করে শপথ নেওয়া হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে শুক্রবার শুরু হওয়া দুই দিনের এ সংসদ শেষ হয় আজ।
শপথে আরও বলা হয়, জ্বালানি সংস্কার এই জ্বালানি অপরাধীদের বিচার দাবিকে জন–আন্দোলনের পর্যায়ে উন্নীত করা হবে। জ্বালানি রূপান্তরে ক্যাবের ১৩ দফা বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা হবে।
যুব সংসদের শেষ অধিবেশনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, নিম্ন আয়ের মানুষের এলাকায় লোডশেডিং একটা পরিচিত শব্দ। তারা শিক্ষিত না হলেও এটা জানে। একটা অসমতা রয়ে গেছে। আবার কৃষিতে বিদ্যুতের যে দাম, মাছ চাষ বা পোলট্রি খাতে সেই দামে দেওয়া হয় না। এটা করতে হলে ৪০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত ভর্তুকি দিতে হবে সরকারকে। অর্থ মন্ত্রণালয় রাজি হয়েছে। এখন বিইআরসির অনুমোদন লাগবে।
যুব সংসদের সপ্তম অধিবেশনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বাড়িয়ে টাকা লুটপাট করাই ছিল ফ্যাসিবাদের সময় মূল কাজ। গত সরকার নিজেদের পকেটে টাকা ঢোকাতে সেদিকে নজর দিয়েছে। পৃথিবীকে বাঁচাতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করতেই হবে। বিএনপির ৩১ দফায় স্পষ্ট করে নবায়নযোগ্য জ্বালানির কথা বলা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকার লুণ্ঠনের উদ্দেশ্যে জ্বালানি খাতে দায়মুক্তির আইন করেছে দাবি করে ওই আইন বিলোপের দাবি জানান রুহুল কবির রিজভী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) জিএস এস এম ফরহাদ বলেন, শুধু জ্বালানি নয়, সব খাতেই সমস্যা আছে। রাজনৈতিক নেতা যদি অসৎ হয়, অস্বাভাবিক উপায়ে নেতা হন, সবকিছু তাঁরা অস্বাভাবিক উপায়ে করেন।
যুব সংসদের শেষ অধিবেশনে দুই দিনের সংসদের সারাংশ তুলে ধরা হয়।এতে বলা হয়, এতে ১০০ ‘সংসদ সদস্য’–এর অংশগ্রহণে ১৯টি প্রবন্ধ উপস্থাপনা ছিল দুই দিনের যুব সংসদে। এক হাজার নিবন্ধিত শিক্ষার্থী নিয়ে গত এক বছরে নানা কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে এই সংসদ সদস্যদের বাছাই করা হয়।
দুই দিনের যুব সংসদে অংশ নেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মোট আটটি অধিবেশনে জ্বালানি খাতের আলাদা আলাদা বিষয়ের ওপর বেশ কিছু নিবন্ধ তুলে ধরা হয়। এতে বিদ্যুৎ খাতের ক্যাপাসিটি চার্জ বা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভাড়ার সমালোচনা করা হয়। জ্বালানি রূপান্তরে ক্যাবের ১৩ দফা দাবির প্রতি সমর্থন জানান অংশগ্রহণকারীরা।
শেষ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম। তিনি বলেন, জ্বালানি খাতে জনগণের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা হলে জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিত হবে।পরবর্তী যে সরকার ক্ষমতায় আসবে, তারা এ আন্দোলনের দাবি মেনে নেবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।