নির্বাচনে যত দেরি হবে, দেশ তত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, নির্বাচন যত দেরি করবে, দেশ তত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে, দেশে শান্তিশৃঙ্খলা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, দেশের দ্রব্যমূল্যের বিষয়টি দিন দিন খারাপ হচ্ছে, সেটা আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে।

আজ সোমবার জাতীয়তাবাদী কর আইনজীবী ফোরামের নবনির্বাচিত কমিটিকে নিয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এ কথা বলেন।

আমীর খসরু বলেন, ‘আমরা মনে করি, দেশের মানুষের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে দ্রুততম সময়ে গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরিয়ে আনতে হবে। একেকটা দিন যাচ্ছে গণতান্ত্রিক সরকার ব্যতীত, একেকটা সমস্যা বাড়ছে। এর থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হলো গণতান্ত্রিক অর্ডারের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে জবাবদিহি নিশ্চিত করা।’ তিনি বলেন, দায়বদ্ধ সরকার, যাদের পলিটিক্যাল ওয়েট থাকবে, যাদের পলিটিক্যাল মোবিলাইজেশন ক্যাপাসিটি থাকবে, যাদের পেছনে জনগণের সমর্থন থাকবে, তারাই এ সমস্যার সমাধান করতে পারে।

বিএনপি নেতা আমীর খসরু বলেন, পুলিশ, র‌্যাব ও সরকারি কর্মকর্তারা জনগণের সমর্থন ছাড়া কোনো কিছুর সমাধান করতে পারবেন না।

নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যে সম্ভব কি না, জানতে চাইলে আমীর খসরু বলেন, নির্বাচন জুন মাসের মধ্যে সম্ভব। নির্বাচন কমিশন যেটা বলছে, তাদের প্রস্তুতি সম্পর্কে কোনো সন্দেহ প্রকাশ করছে না। নির্বাচনের বিষয়টা সরকারকে বলতে হবে। সরকারের পলিটিক্যাল উইল (রাজনৈতিক ইচ্ছা) থাকতে হবে, ইচ্ছা থাকতে হবে এবং সেটার অপেক্ষায় জনগণ আছে।

এর আগে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ কর আইনজীবী ফোরামের নবনির্বাচিত নেতারা জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করেন। এ সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, কর আইনজীবী ফোরামের সভাপতি মাহবুবুস সালেকীন, সাধারণ সম্পাদক আবু নাসের মেসবাহ উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

দক্ষিণ ভারতের নিষ্পেষিত মুসলিম নারীদের কণ্ঠস্বর

বানু মুশতাক বললেন, ‘মানুষ ও তার মৌলিক স্বভাব সবখানেই একই ধরনের। এটাই আমার লেখার উদ্দেশ্য। আমার বিষয়বস্তু নারী, প্রান্তিক মানুষ, কণ্ঠহীন সমাজের কণ্ঠস্বর হওয়া।’

বানু মুশতাকের মাধ্যমে এ বছরই প্রথম কোনো ছোটগল্প সংকলন বুকার জিতেছে। আবার কন্নড় ভাষাতেও এসেছে প্রথম বুকার। হার্ট ল্যাম্প ইংরেজি ভাষায় অনূদিত বানু মুশতাকের প্রথম বই। তাঁর বয়স এখন ৭৭ বছর।

বানু মুশতাক একজন আইনজীবী, সমাজকর্মী ও লেখক। ১৯৮১ সাল থেকে তিনি গল্প লিখছেন। হার্ট ল্যাম্প তাঁর বিভিন্ন সময়ে লেখা গল্পের একটি সংকলন। তাঁর গল্পে দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটকের মুসলিম নারীদের জীবনের গল্প ফুটে উঠেছে। সেখানে দেখানো হয়েছে, তাঁরা কীভাবে পারিবারিক রীতির জাঁতাকলে পড়েন।

বানু মুশতাক বলেন, ‘হ্যাঁ, মেয়েরা, আজও তারা অবহেলিত। আর ঘর থেকেই এর শুরু।’

তাঁর অনুবাদক দীপা ভাস্তি বলেন, ‘এই গল্পগুলো একটি সুনির্দিষ্ট অঞ্চলের সুনির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের প্রেক্ষাপটে রচিত হলেও একেবারে সর্বজনীন।’

একজন আইনজীবী ও সমাজকর্মী হিসেবে তাঁর কাজ লেখালেখিতে কী প্রভাব ফেলে—এ প্রশ্নের জবাবে বানু মুশতাক বলেন, ‘কেউ যখন কোনো আইনি সমস্যা নিয়ে আমার কাছে আসে, তখন তারা তাদের সব অনুভূতি ভাগ করে নিতে চায়। সেসব তাড়না আমার মধ্যে ক্রমাগত বাড়তে থাকে। তারপর একদিন ছোটগল্পে পরিণত হয়।’

কিন্তু আইনি মামলা নাহয় সমস্যার সমাধান করতে পারে, ছোটগল্প কি পারে? ‘অবশ্যই। কারণ নীরবতা কোনো সমাধান নয়। তারা যে পাল্টা লড়াই করতে পারে, সেই দৃষ্টিভঙ্গি আমি গল্পের মাধ্যমে দিয়েছি।’

বানু মুশতাকের ‘কালো গোখরারা’ গল্পে একজন নারীকে জানানো হয়েছে, ইসলাম নারীদের শিক্ষিত হওয়ার এবং কাজ করার কথা বলেছে। কিন্তু সমাজ সুবিধার জন্য তাদের সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখে। গল্পে আমি বলেছি, নিজের অধিকারের কথা বলো।’ বলেন বানু মুশতাক।

বানু মুশতাকের গল্পে কমেডিও আছে। তাঁর ভাষ্য, ‘এই স্টাইল ব্যবহারের কারণ আমি ক্ষমতাকাঠামোর মুখে সত্য বলছি। পিতৃতন্ত্র, রাজনীতি, ধর্ম—সব একসঙ্গে মিলিয়েই ক্ষমতাকাঠামো। খুব গম্ভীর সুরে কথাটি বললে এর পরিণতি যা–ই হোক না কেন, আমি দায়বদ্ধ থাকব। তাই আমি ব্যঙ্গাত্মক মোচড় দিই। সেলফ সেন্সরশিপের বদলে এই কৌশল ব্যবহার করি।’ 

অনুবাদক ভাস্তি বলেন, ‘নারীরা যে পুরুষদের দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে, রসিকতা করে এই গল্পে সেটাই বোঝানো হয়েছে।’

বানু মুশতাক বান্দায়া সাহিত্যের (কন্নড়ের প্রতিবাদী সাহিত্য আন্দোলন) ঐতিহ্যে লিখেছেন। ১৯৭০–এর দশকে লেখকেরা ছিলেন ‘বেশির ভাগ পুরুষ এবং উচ্চবর্ণের’। সে আন্দোলনের স্লোগান ছিল, ‘লেখক হলে আপনিও একজন যোদ্ধা’। এটি নারী ও সংখ্যালঘু লেখকদের নিজস্ব পরিচয়ে লিখতে উত্সাহিত করেছিল।

দ্য গার্ডিয়ান থেকে সংক্ষেপিত অনুবাদ 

রবিউল কমল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দণ্ডাদেশ বহালের রায়ের বিরুদ্ধে ১০ আসামির আপিল ও লিভ টু আপিল
  • রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে জনগণের হিস্যা কোথায়
  • যে ‘ধর্মীয় অনুপ্রেরণায়’ ইরানে এই হামলা চালাল ইসরায়েল
  • দক্ষিণ ভারতের নিষ্পেষিত মুসলিম নারীদের কণ্ঠস্বর
  • প্রধান উপদেষ্টা অনেক বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন: ফখরুল
  • ইউনূস-তারেকের বৈঠক দেশের মানুষের জন্য স্বস্তির বার্তা, আশার আলো
  • বর্তমান সংকটে হবস, রবীন্দ্রনাথ ও অমর্ত্য সেন যেখানে প্রাসঙ্গিক
  • ড. ইউনূস ও তারেকের বৈঠক জাতির জন্য স্বস্তির বার্তা: ১২ দলীয় জোট
  • লন্ডনে ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠককে স্বাগত জানাল জেএসডি
  • রেফারেন্স ও মতামতপ্রক্রিয়া নিয়ে রিট খারিজ, আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন