জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানালেন জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতারা
Published: 4th, March 2025 GMT
সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা–কর্মীরা। আজ মঙ্গলবার সকাল আটটায় জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তাঁরা। রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রতিষ্ঠার পর প্রথম কর্মসূচির অংশ হিসেবে তাঁরা মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন।
আজ সকাল সাড়ে সাতটার দিকে দুটি ডাবল ডেকার বাসে করে স্মৃতিসৌধে আসেন দলের নেতা-কর্মীরা। এরপর স্লোগান দিতে দিতে তাঁরা স্মৃতিসৌধের বেদিতে যান এবং পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন দলেন সদস্যসচিব আখতার হোসেন, আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।
আখতার হোসেন দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা করে বলেন, ‘১৯৭১ সালে লাখ লাখ শহীদের জীবনের বিনিময়ে যে স্বাধীনতা এসেছে, যার মূলমন্ত্র ছিল সাম্য ও সামাজিক সুবিচারের বাংলাদেশ। গত ৫৪ বছরে তা অধরা থেকে গেছে। আমরা এনসিপির নেতা-কর্মীরা অঙ্গীকারবদ্ধ, সেই বাংলাদেশ নির্মাণে কাজ করে যাব।’
আখতার হোসেন আরও বলেন, ‘সারা বাংলাদেশে আমাদের অনেকগুলো প্রস্তাবনার জায়গা রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম, বাংলাদেশ পুরো বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। ঢাকা শহরকে গ্লোবাল সাউথের প্রধান হিসেবে দেখা। এমন অনেকগুলো স্বপ্ন নিয়ে আমরা এগোচ্ছি। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমরা বিশ্বাস করি, নতুন একটি সংবিধানের বাস্তবতা রয়েছে। এর ভিত্তিতে আমরা গণপরিষদ নির্বাচনের কথা বলেছি। একই সঙ্গে সে গণপরিষদ নির্বাচনে যাঁরা জয়ী হবেন, তাঁরা সংসদ সদস্য হিসেবে ভূমিকা পালন করবেন—এমন প্রস্তাবনাও আমাদের আছে। অল্প সময়ের মধ্যে সারা দেশে জেলা ও উপজেলায় জাতীয় নাগরিক পার্টি কার্যক্রম বিস্তৃত করবে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘শত শত বাস আসছে, পা ফেলানোর জায়গা নাই’
টাঙ্গাইলের কালিহাতীর নারান্দিয়ার বাসিন্দা শেফালী বেগম। সাভারের বাইপাইল এলাকার একটি গার্মেন্টসে চাকরি করেন তিনি। ঈদুল আজহার ছুটি শেষ হওয়ায় শনিবার (১৪ জুন) বিকেলে প্রায় চার ঘণ্টা কালিহাতীর এলেঙ্গায় বাসের জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন এই নারী। বাসে উঠতে না পেরে কর্মস্থলে যেতে তাকে উঠতে হয় পিকআপ ভ্যানে। ২০০ টাকার জায়গায় ৩৫০ টাকা ভাড়া দিয়ে রওনা হন গন্তব্যে।
যাত্রা শুরুর আগে শেফালী বলেন, “গরম ও সড়কের ধুলাবালিতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। সড়কে চার ঘণ্টা দাঁড়িয় থেকে উপায় না পেয়ে পিকআপে করে ঢাকায় যেতে হচ্ছে।”
শুধু শেফালী নয়, তার মতো লাখ লাখ মানুষ আজ দিনভর ভোগান্তি নিয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে দিয়ে ঢাকায় কর্মস্থলে ফিরছেন। শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে শত শত মানুষকে গণপরিবহনের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়। কেউ ২ ঘণ্টা, কেউ ৩ ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছিলেন গণপরিবহনের জন্য।
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে মহাসড়কে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের চাপ
সিরাজগঞ্জে গাড়ির অপেক্ষায় কর্মস্থলে ফেরা মানুষ
জুলেখা বেগম বলেন, “আড়াই ঘণ্টার বেশি সময় বাসের জন্য অপেক্ষা করছি। উত্তরবঙ্গ থেকে শত শত বাস আসছে, কিন্তু কোনো বাসেই পা ফেলানোর মতো জায়গা নাই। গরমও সহ্য হচ্ছে না।”
কর্মস্থলে ফিরতে বাসের অপেক্ষায় থাকা যাত্রীদের একাংশ
ইকবাল আলী বলেন, “মহাসড়কে ভোগান্তি ছাড়া কিছুই দেখছি না। পরিবহনগুলোতে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।”
হারুন মিয়া নামে এক ট্রাক চালক বলেন, “সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল থেকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পর্যন্ত আসতে ১০ ঘণ্টার বেশি সময় লেগেছে। স্বাভাবিক সময় লাগে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা।”
এর আগে, গতকাল শুক্রবার মধ্যরাত থেকে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ, একাধিক সড়ক দুর্ঘটনা ও যানবাহন বিকল হওয়ায় যমুনা সেতুর টোলপ্লাজা থেকে টাঙ্গাইলের রাবনা পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে তা কমে ১৪ কিলোমিটারে আসে। এছাড়া, মহাসড়কে গণপরিবহনের সংকট থাকায় কয়েক গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খোলা ট্রাক ও পিকআপে গন্তব্যে যাচ্ছে মানুষ। সব মিলিয়ে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪৯ হাজার ১৮২টি যানবাহন যমুনা সেতা পারাপার করেছে। এ থেকে টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৪৩ লাখ ১৩ হাজার ২০০ টাকা।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, “মহাসড়কে যানজট নিরসনে পুলিশ কাজ করছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।”
ঢাকা/কাওছার/মাসুদ