২০২২ সালের এই দিনে থাইল্যান্ডের কোহ সামুইয়ে ছুটি কাটাতে গিয়ে মারা যান শেন ওয়ার্ন। অস্ট্রেলিয়ার স্পিন জাদুকরের জীবন ছিল বর্ণিল, যে জীবন ছাপিয়ে গিয়েছিল ক্রিকেটকেও। যে জীবন ছুঁয়ে গিয়েছিল অনেককেই। মৃত্যুবার্ষিকীতে কিংবদন্তিকে স্মরণ...
আপনি হয়তো লিয়াম লিভিংস্টোন।
টি-টোয়েন্টির এই ম্যাচ-আপের যুগে বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের সামনে যেমন অফ স্পিনার, ডানহাতি এলে আবার হয়ে পড়েন লেগ স্পিনার। ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোতে তাই ইংলিশ অলরাউন্ডারের চাহিদা বেশ চড়া, মেট্রোরেল আসার আগে ঢাকার সিএনজির মতো। লিভিংস্টোনের জার্সি নম্বর ২৩। তাঁর লেগ স্পিন কিংবা ওই ২৩ নম্বর জার্সির কারণ একটিই—শেন ওয়ার্ন।
হতে পারে, আপনি ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা।
একদিকে মুত্তিয়া মুরালিধরন, তাঁর দেশের স্পিন জাদুকর। আরেক দিকে সে মুরালিধরনকে একসময় ‘চাকার’ ট্যাগ দিতে যাদের প্রবল ‘অবদান’ ছিল, সেই দেশের আরেক জাদুকর—ওয়ার্ন। দুজন যতই বন্ধু হোন না কেন, দুজনের মধ্যে কে সেরা—একটা প্রজন্মের হয়তো অনেক ঘণ্টা ব্যয় হয়েছে সে বিতর্কে। কিন্তু হাসারাঙ্গা এত কিছুর ধার না ধেরে নির্দ্বিধায় বলে দিতে পারেন, তাঁর কাছে বিশ্বের সেরা স্পিনার একজনই—ওয়ার্ন।
অথবা আপনি হয়তো মেসন ক্রেন।
২০০৫ সালে ক্রেনের বয়স আট। সেবারের অ্যাশেজ দেখতে দেখতে ওয়ার্নের বোলিংয়ের মোহে পড়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন লেগ স্পিনার হবেন। ১৩ বছর পর ক্রেনের টেস্ট অভিষেক সিডনিতে। সেই এসসিজি, যেখানে ওয়ার্ন বিদায় বলেছিলেন টেস্ট ক্রিকেটকে। গত মাসে ২৭ পূর্ণ করা ক্রেন এরপর আর সুযোগ পাননি এখন পর্যন্ত টেস্ট ক্রিকেট খেলার, ‘ওয়ান টেস্ট ওয়ান্ডার’ হয়ে থাকবেন কি না—তা সময় বলবে।
ক্রেন এমনিতে খেলেন হ্যাম্পশায়ারে, যেটি ওয়ার্নের কাউন্টি দল, যাদের মাঠ হ্যাম্পশায়ার বোওলে ওয়ার্নের নামে একটা স্ট্যান্ড আছে। ক্রিকেটারদের ডাইনিং রুমে আগে একটা কোলাজ ছিল হ্যাম্পশায়ারের কিংবদন্তিদের। এখন সেই কোলাজের জায়গায় ওয়ার্নের বড় একটা ছবি, সঙ্গে তাঁর বিখ্যাত একটা উক্তি—‘হাল ছেড়ো না, কখনোই হাল ছেড়ো না।’
হ্যাম্পশায়ার ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি ব্লাস্ট শুরু করেছিল টানা চারটি ম্যাচ হেরে। কিন্তু তারা হাল ছাড়েনি, পরে ঠিকই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ক্রেন জানেন, তাঁদের ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করেছিল ওয়ার্নের ওই ছবি আর উক্তিটাও।
হয়তো আপনার নাম পিটার হ্যাটজগলু।
মেলবোর্নে করোনাভাইরাসের কোনো এক ঢেউয়ে চলছে লকডাউন। একদিন সাহস করে ইনস্টাগ্রামের ডিএমে হ্যাটজগলু নক করে বসলেন ওয়ার্নকে। উদ্দেশ্য—লেগ স্পিন নিয়ে কথা বলা। তত দিনে বিগ ব্যাশের সৌজন্যে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট হ্যাটজগলুর নামটা একটু-আধটু জানে। কিন্তু ওয়ার্ন রিপ্লাই দেবেন, কেপিএমজির মতো বিখ্যাত কোম্পানির হয়ে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা পরামর্শক হিসেবে কাজ করা হ্যাটজগলুও এমনটা ভাবেননি।
শুধু যে রিপ্লাই পেলেন, তা নয়। পার্থের হয়ে বিগ ব্যাশ জেতার পর আবার মেসেজ চালাচালি শুরু হলো ওয়ার্নের সঙ্গে। ওয়ার্ন পরামর্শ দিলেন শীতে ইংল্যান্ডে গিয়ে ক্লাব ক্রিকেট খেলতে। তাহলে হানড্রেডে একটা সুযোগ মিলতে পারে। ওয়ার্ন তখন হানড্রেডের দল লন্ডন স্পিরিটের কোচ।
যখন ইংল্যান্ডের হ্যাম্পশায়ারে খেলতেন ওয়ার্ন.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চুইঝাল চাষে সাফল্য পেয়ে প্রবাসফেরত শাহ আলম বললেন, ‘আর বিদেশে যাব না’
সিরাজগঞ্জে বাণিজ্যিকভাবে চুইঝাল চাষ করে সাফল্যের দেখা পেয়েছেন বিদেশফেরত এক ব্যক্তি। জেলায় মসলাজাতীয় ফসল চুইঝালের সফল বাণিজ্যিক চাষ এটিই প্রথম। এই সফলতায় বর্তমানে এলাকার কৃষক, তরুণ ও যুবকেরা চুইঝাল চাষ করতে আগ্রহী হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
ওই ব্যক্তির নাম শাহ আলম (৪৫)। তিনি সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়নের নিয়ামতপুর গ্রামের শুকুর আলীর বড় ছেলে। প্রায় এক যুগ সৌদি আরবে প্রবাসজীবন কাটিয়ে গ্রামে ফিরে ২০২২ সালে সিরাজগঞ্জে চুইঝাল চাষের উদ্যোগ নেন তিনি।
সম্প্রতি এক দুপুরে শাহ আলমের চুইঝালের খেতে গিয়ে দেখা যায়, জমি থেকে ফসল উত্তোলন করা হচ্ছে। বেশ কিছু স্থানে সমূলে চুইঝাল গাছগুলো তুলে বিভিন্ন স্থানে স্তূপ করে রাখা হয়েছে। খুলনাসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে পাইকারেরা গিয়ে এসব চুইঝাল কিনে নিচ্ছেন।
জানতে চাইলে শাহ আলম বলেন, ‘বিদেশে থাকা অবস্থাতেই ইউটিউবে খুলনা এলাকায় চুইঝাল চাষে কৃষকদের সফলতা দেখে আমার আগ্রহ সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে খুলনা এলাকায় চুইঝালের চারা উৎপাদকারী একটি নার্সারির মালিকের সঙ্গে কথা হয়। তিনি আমাকে বেশ উদ্বুদ্ধ করেছেন। এরপর দেশে ফিরে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) সমন্বিত কৃষি ইউনিটের (কৃষি খাত) আওতায় উচ্চমূল্যের মসলাজাতীয় ফসল উৎপাদন প্রদর্শনী বাস্তবায়নকারী স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের (এনডিপি) সহায়তায় চুইঝালের চাষ শুরু করি। ২০২২ সালের ৩০ আগস্ট বাড়ির পাশে ৩৩ শতক জমি ৩ বছরের জন্য ৬০ হাজার টাকায় ইজারা নিয়ে এগুলোর চাষ শুরু করা হয়।’
শাহ আলমের দাবি, চুইঝাল চাষ শুরু থেকে এ পর্যন্ত তাঁর খরচ হয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার টাকা। অন্যদিকে চলতি বছর দুই ধাপে ৭ লাখ ৩৭ হাজার টাকার চুইঝাল বিক্রি করেছেন।
সিরাজগঞ্জে বাণিজ্যিকভাবে চুইঝাল চাষ করে সফল হওয়ার দাবি করেছেন প্রবাসফেরত শাহ আলম