তল্লাশির নামে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের ছেলে তানভীর ইমামের সাবেক স্ত্রীর গুলশানের বাসায় গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে একদল লোক ঢুকে পড়েছেন। পুলিশ ওই ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে। তাঁরা হলেন শাকিল খন্দকার (২৪), জুয়েল খন্দকার (৪৮) ও শাকিল আহমেদ (২৮)। জুয়েল খন্দকারের ছেলে হলেন শাকিল খন্দকার।

আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং বলেছে, গুলশানের ওই বাসায় বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ, অস্ত্র ও আওয়ামী লীগের দোসরদের লুকিয়ে রাখা হয়েছে, এমন তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল মধ্যরাতে ‘তল্লাশির’ নামে ২০ থেকে ২৫ জন লোক দরজা ভেঙে বাসায় ঢুকে পড়েন। তাঁরা তল্লাশির অজুহাতে বাসায় ঢুকে মালামাল তছনছ, ভাঙচুর ও লুটপাটের চেষ্টা করেন।

জাতীয় জরুরি সেবা–৯৯৯ নম্বরে খবর পেয়ে দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে গুলশান জোনের পুলিশের উপকমিশনার (ডিসি), থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। সেখান থেকে শাকিল খন্দকার, জুয়েল খন্দকার ও শাকিল আহমেদ নামের তিন ব্যক্তিকে আটক করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে।

প্রেস উইং থেকে বলা হয়, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে শাকিল আহমেদ একসময় ওই বাসায় কেয়ারটেকারের (তত্ত্বাবধায়ক) কাজ করতেন। তিনিই মূলত জনতাকে ২০০ থেকে ৩০০ কোটি টাকা পাওয়া যেতে পারে, এমন তথ‍্য দিয়ে বাসায় তল্লাশি চালাতে উসকানি দেন।

প্রেস উইং থেকে আরও বলা হয়, এর আগে গত পরশু রাত সাড়ে ১০টার দিকেও একই অজুহাতে একদল জনতা বাসায় ঢোকার চেষ্টা করেন। পরে পুলিশ এসে তাঁদের বুঝিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই মর্মে আবারও সতর্ক করছে যে কেউ যেন আইন নিজের হাতে তুলে না নেয়। কোথাও কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে যেন সঙ্গে সঙ্গে নিকটবর্তী থানাকে জানায়। সরকার দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সচেষ্ট রয়েছে এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে বদ্ধপরিকর।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ব্যানার, তদন্তের দাবিতে প্রক্টর অফিসে একদল শিক্ষার্থী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কলাভবনের ‘শ্যাডোতে’ নিষিদ্ধঘোষিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একটি ব্যানারের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এর প্রতিবাদে শুক্রবার রাতে একদল শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেন। তবে শেষ পর্যন্ত মিছিল কর্মসূচি স্থগিত করে ৯-১০ জন শিক্ষার্থীর একটি দল সহকারী প্রক্টরদের সঙ্গে আলোচনা করে।

আলোচনা শেষে রাত ৯টার দিকে প্রক্টর অফিসের সামনে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের ব্যানার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জন্য লজ্জাজনক। তারা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্য সেন হল সংসদের সহসভাপতি (ভিপি) আজিজুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের আনাগোনা আমাদের বারবার ব্যথিত করছে। প্রশাসনের কাছে যখনই জানতে চাই, তারা বলে, তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু সেই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সম্পর্কে আমরা আজও জানতে পারিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী শেখ হাসিনার পক্ষে মিছিল করেছেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন তাঁদের বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। (২০২৪ সালের) ১৫ জুলাই হামলায় জড়িত ছাত্রলীগের বিচার এখনো পর্যন্ত আমরা দেখতে পাইনি।’

আজিজুল হক বলেন, ‘আমরা দেখতে পাই আমাদের প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা রাতের বেলা কলাভবনে বসে বাদাম খান। তাঁদের কাজ কি বাদাম খাওয়া? নাকি পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা? সেই প্রশ্ন আজকে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে রেখেছি।’

এই ছাত্রনেতা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আশ্বস্ত করেছে, একটি তদন্ত কমিটি গঠন করবে এবং পরবর্তী সময়ে সেই প্রতিবেদন তাঁদের কাছে পেশ করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ব্যানার, তদন্তের দাবিতে প্রক্টর অফিসে একদল শিক্ষার্থী