খাদ্যসহ বিভিন্ন শিল্পে ব্যবহার ছাড়াও লবণ মানবদেহের এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান; যার নির্দিষ্ট মাত্রায় হেরফের হলে মস্তিষ্ক, কিডনি, হৃদ্‌যন্ত্রের মতো অঙ্গ বিকলসহ জীবনসংশয় পর্যন্ত হতে পারে। তাই এই খনিজ বস্তুটি সস্তা হলেও এর ব্যবহারে থাকতে হয় অতি সতর্ক। অথচ নিয়ন্ত্রণকারী প্রশাসনের প্রায় নাকের ডগায় এই অতি জরুরি ও অতি বিপজ্জনক খনিজ পণ্যটির অপব্যবহার ঘটে চলেছে। ফলে মাটির ওপর ও নিচের প্রাণপ্রকৃতির সর্বনাশ হচ্ছে; পাশাপাশি লাখো মানুষের জীবন বিষিয়ে ওঠার উপক্রম হয়েছে।

এক মৌসুমে কুতুবদিয়ায় ৩ লাখ টন লবণ উৎপাদন করে যে লাভ হচ্ছে, পরিবেশ ধ্বংসের কারণে কৃষি, স্বাস্থ্যসহ নানা পেশার লাখো মানুষের ক্ষতি হচ্ছে দশ গুণ বেশিফজলুল কাদের চৌধুরী, সভাপতি, ধরা, কক্সবাজার

প্রথম আলোর দীর্ঘদিনের অনুসন্ধানে এমনই এক ঘটনার আদ্যোপান্ত জানা গেছে কক্সবাজারের সাগরদ্বীপ কুতুবদিয়া উপজেলায়। প্রায় সাত বছর হলো এখানে ধুম পড়ে গেছে গভীর নলকূপ দিয়ে ভূগর্ভস্থ পানি তুলে লবণ উৎপাদনের। অথচ মাটির বাঁধ দিয়ে ঘেরা কুতুবদিয়ার চারদিকেই লোনাপানির অথই সাগর। সেখানে কেন মাটির গভীর থেকে পানি তুলে লবণ তৈরি করতে হবে? এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গিয়ে পাওয়া যায় এমন এক কাহিনি, যার পরতে পরতে ওত পেতে আছে অশনিসংকেত।

রোদে শুকিয়ে লবণ চাষ হয়ে আসছে দেশের উপকূলীয় জেলাগুলোয়। কিন্তু কুতুবদিয়ায় গভীর নলকূপের পানি দিয়ে লবণ উৎপাদনের পদ্ধতি কোনো বৈজ্ঞানিক গবেষণা বা উদ্ভাবনের মাধ্যমে হয়নি। এর ইতিহাস খুঁজতে গিয়ে জানা যায় এক মজার ঘটনা।

২০১৭ সালেও সাগর চ্যানেল থেকে সৃষ্ট খালের পানি দিয়ে লবণ উৎপাদন করতেন কুতুবদিয়ার দক্ষিণ ধুরং ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সিকদারপাড়ার দরবারঘাটের সাদেকুল ইসলাম। সরকারের কাছ থেকে এসব খাল ইজারা নিয়ে লবণচাষিদের লোনাপানি সরবরাহ করতেন এলাকার কিছু মানুষ। নওশাদ নামে এ রকমই একজনের কাছ থেকে লোনাপানি কিনে লবণ চাষ করে আসছিলেন সাদেকুল ইসলাম। প্রতি কানি (৪০ শতক) জমিতে লোনাপানি নিতে তাঁকে দিতে হতো ৪ হাজার টাকা হিসাবে ৮ কানিতে ৩২ হাজার টাকা।

জমি সমতল করে তার ওপর বিছানো হয় পলিথিন। ভূগর্ভস্থ পানি রাখা হয় পলিথিনের ওপর। পানি শুকিয়ে হয় লবণ। সম্প্রতি কক্সবাজারের কুতুবদিয়ার লেমশীখালী ইউনিয়নের দরবারঘাট এলাকায়.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মুন্সীগঞ্জে ড্রেনের ভেতরে মিলল ২৩টি ককটেল, আটক ১

মুন্সীগঞ্জে ড্রেনের ভেতর তিনটি প্লাস্টিকের বালতিতে লুকিয়ে রাখা ২৩টি ককটেল উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ সময় ঘটনাস্থলের পাশে আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যানের বোনের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ককটেল তৈরির সরঞ্জাম জব্দ করে তারা। পাশাপাশি মোহাম্মদ হাসান নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।

রবিবার (২ অক্টোবর) বিকেলে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার বৈখর অনির্বাণ প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকার ড্রেন থেকে ককটেলগুলো উদ্ধার হয়। মুন্সীগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এম সাইফুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আরো পড়ুন:

অভয়নগরে দুই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ককটেল হামলা, আহত ৩

দিনাজপুরে পুকুর পাড় থেকে গ্রেনেড উদ্ধার 

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনের ঢাকনা খোলেন স্থানীয়রা। এ সময় তারা প্লাস্টিকের বালতিতে তুষ দিয়ে ঢেকে রাখা অবস্থায় কিছু বস্তু দেখতে পান। পাশাপাশি তিনটি ড্রেনের ঢাকনা খুলে তারা একই চিত্র দেখেন। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ড্রেনের ভেতর থেকে তিনটি বালতিতে রাখা ২৩টি তাজা ককটেল উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে হাসানকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। 

আটক হাসান মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিপন হোসেন পাটোয়ারীর ভাগ্নি জামাই বলে জানিয়েছে পুলিশ।

মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি এম সাইফুল আলম জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ককটেলগুলো উদ্ধার করে। এ সময় মোল্লাকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান রিপন পাটোয়ারির বোন সেলিনা বেগমের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ককটেল তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে হাসান নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

ঢাকা/রতন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ