স্বামীর জামিনের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়ে ডেকে এনে অন্তঃসত্ত্বাকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ
Published: 9th, March 2025 GMT
নরসিংদীতে স্বামীর জামিনের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়ে গৃহবধূকে তিন দিন আটকে রেখে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শনিবার রাতে ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে সদর উপজেলার মাধবদী থানায় মামলা করেছেন।
মামলায় দুজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। গতকাল বিকেলে ওই গৃহবধূর অভিযোগ পেয়ে ইকবাল হোসেন নামের একজনকে আটক করে পুলিশ। পরে তাঁকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
এজাহারভুক্ত দুই আসামি হলেন নরসিংদী সদর উপজেলার পাঁচদোনা ইউনিয়নের জয়নাল আবেদীনের ছেলে ইকবাল হোসেন (৪৩) ও আবদুল মোতালেবের ছেলে পাপ্পু মিয়া (২৯)।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, ওই গৃহবধূ সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ১৫ ফেব্রুয়ারি মাধবদী থানা-পুলিশ তাঁর স্বামীকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে নরসিংদী কারাগারে পাঠানো হয়। ১৯ ফেব্রুয়ারি সকাল সাতটায় গৃহবধূর মুঠোফোনে কল করেন ইকবাল হোসেন। ওই সময় তিনি বলেন, ‘পাপ্পু নামের এক উকিল আছে, তোর স্বামীর জামিন করিয়ে দিতে পারবে। পাঁচদোনা আয়, কথা বলব।’ তাঁর কথামতো সকাল আটটার দিকে পাঁচদোনা মোড়ে গেলে ইকবাল গৃহবধূকে একটি কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে আরও চারজন ছিলেন। ইকবাল তাঁকে উকিল পাপ্পুর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। পরে গৃহবধূর কাছ থেকে মুঠোফোনটি কেড়ে নিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। তিন দিন আটকে রেখে ওই পাঁচজন একাধিকবার ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন। শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে ২১ ফেব্রুয়ারি বেলা তিনটার দিকে ইকবাল গৃহবধূকে বাড়ির সামনে রেখে আসেন।
ওই গৃহবধূর ভাষ্য, ধর্ষণের ঘটনা কাউকে জানালে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিলেন ইকবাল। ভয়-আতঙ্কে ঘটনা কাউকে জানাননি তিনি। তাঁর স্বামী জামিন পেয়ে বাড়ি ফিরে তাঁর শরীর খারাপের কারণ জানতে চান। ৭ মার্চ ঘটনার বিস্তারিত স্বামীকে জানান তিনি। এরপরই স্বামী, স্বজনসহ গতকাল দুপুরে মাধবদী থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।
মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, ওই গৃহবধূকে তিন দিন আটকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। এরই মধ্যে একজন আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ হবধ ক গ হবধ র ইকব ল
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে সহপাঠীর সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ
সিলেটের জকিগঞ্জে সহপাঠীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে দশম শ্রেণির এক ছাত্রী (১৬) দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা প্রথমে দুই শিক্ষার্থীর ছবি ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন বলে এ ঘটনায় করা মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
গত শনিবার সকালে উপজেলার বারহাল ইউনিয়নের পরিত্যক্ত একটি ইটভাটায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কিশোরী আজ বুধবার সকালে জকিগঞ্জ থানায় মামলা করেছে।
মামলায় আসামি হিসেবে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁরা হলেন উপজেলার বারহাল ইউনিয়নের নিদনপুর গ্রামের ইমরান আহমদ (২৩), খিলগ্রামের তানজিদ আহমদ (১৮), মাইজগ্রামের শাকের আহমদ (২৪), একই গ্রামের শাকিল আহমদ (২১) ও মনতৈল গ্রামের মুমিন আহমদ (২০)।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী ২৬ জুলাই সকালে বারহাল ইউনিয়নের একটি পরিত্যক্ত ইটভাটায় এক সহপাঠীকে নিয়ে বেড়াতে যায়। সেখানে অভিযুক্ত পাঁচ তরুণ গোপনে তাঁদের ছবি ধারণ করেন। পরে ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করেন। পরে দুজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ সময় অভিযুক্ত তরুণেরা দুই শিক্ষার্থীকে বিষয়টি কাউকে জানানো হলে তাঁদের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে ভয় দেখান।
এদিকে ঘটনার তিন দিন পর বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে এলাকার একটি পক্ষ বিষয়টি সালিস বৈঠকে মীমাংসার চেষ্টা করছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। তবে গতকাল মঙ্গলবার রাতে জকিগঞ্জ থানা-পুলিশ ওই স্কুলছাত্রীকে তার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগ দিতে বিলম্ব ও বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় অভিযুক্ত তরুণেরা গা ঢাকা দিয়েছেন। এ ছাড়া জকিগঞ্জ ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় অভিযুক্ত তরুণেরা অবৈধ পথে সীমান্ত পাড়ি দিতে পারেন বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় লোকজন।
জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাতে খবর পেয়ে পুলিশ ভুক্তভোগীকে তার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে। আজ সকালে মামলা হওয়ার পর থেকে আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে।