কানাডায় শুরু হলো মার্কিন পণ্য বয়কট, কতটা ক্ষতি হবে মার্কিন কোম্পানির
Published: 10th, March 2025 GMT
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে কানাডায়। কানাডাবাসীদের ক্ষোভের কারণে সে দেশে মার্কিন কোম্পানির ব্যবসা মার খাবে বলে আশঙ্কা।
কানাডার পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত ২ এপ্রিল পর্যন্ত সাময়িক স্থগিত রেখেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু ইতিমধ্যে কানাডায় যুক্তরাষ্ট্রের অনেক পণ্য, বিশেষ করে বিভিন্ন ধরনের পানীয়ের বিক্রি বন্ধ হয়ে গেছে। খবর সিএনবিসির
আশঙ্কা করা হচ্ছে, কানাডার ক্রেতাদের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়তে পারে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্য, মাংস ও গাড়ি। মার্কিন হোটেল ও বিমান পরিবহন কোম্পানিগুলোও চাপের মুখে পড়তে পারে। এর ফলে কানাডায় যুক্তরাষ্ট্রের বিলাসী পণ্যের বিক্রি মার খেতে পারে। বহুল পরিচিত ব্র্যান্ডগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কানাডার বিতরণ থেকে মার্কিন পণ্যের ব্র্যান্ডগুলো সরানোর সিদ্ধান্ত ‘বাই কানাডীয় সেন্টিমেন্ট বা কানাডার পণ্য কিনুন—এই অনুভূতির পালে হাওয়া দেবে।
জ্যাক ড্যানিয়েলসের মূল কোম্পানি ব্রাউন ফরম্যানের প্রধান নির্বাহী লসন হুইটিং জানিয়েছেন, কানাডার অনেক বিপণিবিতানের তাক থেকে এই হুইস্কি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তিনি মনে করছেন, এই ঘটনা পাল্টা শুল্ক আরোপের চেয়ে বেশি খারাপ। সম্প্রতি তিনি বলেছেন, এটা বিক্রি একেবারে বন্ধ করে দেওয়া ২৫ শতাংশ শুল্কের প্রতিবাদে যা একেবারেই অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
জ্যাক ড্যানিয়েলসের মোট বিক্রির মাত্র ১ শতাংশ হয় কানাডায়। তাই এই প্রতিক্রিয়া সামলে নেওয়া যাবে বলে জানিয়েও হুইটিং বলছেন, ‘কানাডার কিছু ক্রেতা জ্যাক ড্যানিয়েলসের বোতল কিনতে পারবেন না। কানাডায় জ্যাক ড্যানিয়েলস বড় ও জনপ্রিয় ব্র্যান্ড। তাই দেখতে হবে, এটা কীভাবে ও কত দিন চলে। ক্যালিফোর্নিয়ার ওয়াইন শিল্পও কানাডার গ্রাহকদের প্রত্যাঘাত নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন।
ওয়াইন ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট ও সিইও রবার্ট পি কচ বলেন, মার্কিন ওয়াইনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাজার হচ্ছে কানাডা। কানাডায় বছরে ১ দশমিক ১ বিলিয়ন বা ১১০ কোটি ডলারের বেশি খুচরা ওয়াইন বিক্রি হয়। শুল্ক ও শুল্কের হুমকি এমন কঠিন সময়ে এসেছে, যখন এই শিল্প নজিরবিহীন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন।
পরামর্শক সংস্থা কিয়ার্নির জ্যেষ্ঠ অংশীদার গ্রেগ পর্টেল জানিয়েছেন, কানাডার পণ্য বয়কট অন্যান্য মার্কিন কোম্পানিও চিন্তিত। তিনি বলেন, ‘উদ্ভূত বাণিজ্যযুদ্ধের পরিস্থিতিতে মার্কিন কোম্পানিগুলোর জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপনা পর্যায়ে অস্বস্তি তৈরি করছে। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিক্রি বন্ধ হয়ে যাওয়াটা কখনোই ভালো নয়। আর তা যদি সংশ্লিষ্ট কোম্পানির নিয়ন্ত্রণের বাইরে অন্য কারণে হয়, তা আরও সমস্যার।
তথ্যানুসারে, কানাডার মোট ভোগ্যপণ্য আমদানির একটা বড় অংশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে এলেও বেশির ভাগ মার্কিন কোম্পানির মোট রপ্তানিতে কানাডার অংশীদারি তেমন একটা নয়। এখন কানাডার মানুষ রেগে গিয়ে কোলগেট টুথপেস্ট বয়কট করলে গ্রিন বেভারের মতো কানাডীয় ব্র্যান্ড লাভবান হবে। তবে কোলগেট-পালমোলিভেরর মোট ব্যবসার মাত্র ২৫ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রসহ গোটা উত্তর আমেরিকা থেকে আসে। তাই কোনো একটি দেশে বয়কটের ডাক দেওয়া হলে যুক্তরাষ্ট্রের বড় ভোগ্যপণ্য কোম্পানিগুলোর ব্যবসায় খুব একটা প্রভাব পড়ার কথা নয়।
তবে অনেক দেশ একযোগে মার্কিন পণ্য বয়কটের রাস্তায় হাঁটলে বা শুল্ক বাড়ালে মার্কিন কোম্পানিগুলো ক্ষতির মুখে পড়বে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ য ক ড য ন য় লস ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
‘বউ পেটানো’ অভিনেতার দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন
সৈয়দা আলিজা সুলতানের সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন পাকিস্তানের জনপ্রিয় অভিনেতা ফিরোজ খান। তাদের এই সংসার ভেঙে গেছে। আলিজা অভিযোগ করেছিলেন, তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন ফিরোজ। কেবল তাই নয়, শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের ছবিও প্রকাশ করেছিলেন। এরপর তোপের মুখে পড়েন ফিরোজ খান। নেটিজেনদের অনেকে তাকে ‘বউ পেটানো’ অভিনেতার তকমাও দেন।
প্রথম সংসার ভাঙার প্রায় দুই বছর পর ডা. জয়নবের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ফিরোজ খান। এদিকে, সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন ছড়িয়েছে। মূলত, বিনোদনভিত্তিক একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ডা. জয়নবের ইনস্টাগ্রাম পোস্টের স্ক্রিনশট শেয়ার করা হয়। তারপরই শুরু হয় ফিরোজ খানের সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদের গুঞ্জন। দ্রুত সময়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে জয়নবের অভিযোগের স্ক্রিনশট।
ডা. জয়নব কথিত এই নোটে বলেন, “আমি আমার সহনসীমার শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছি। অবিরাম মানসিক চাপ ও উদ্বেগে ক্লান্ত। এমন একজন মানুষের সঙ্গে সম্পর্কে আছি, যে আমাকে বিশ্বাস করে না। আমি সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমি এখন ক্লান্ত। প্রতিটি কথোপকথন একটা লড়াইয়ের মতো লাগে, প্রতিটি মতবিরোধ যেন যুদ্ধ। এমন আচরণের শিকার হয়ে আমি ক্লান্ত। আমি যখন তাকে কিছু বলি, সে আমার উপর রাগ ঝাড়ে।”
স্ত্রী জয়নবের সঙ্গে ফিরোজ খান
সুখ স্মৃতিগুলো কষ্টে ঢাকা পড়ে গিয়েছে। এমন মন্তব্য করে জয়নব বলেন, “সত্যি বলতে, আমরা একসঙ্গে যে স্মৃতিগুলো তৈরি করেছিলাম, তা এখন কষ্ট ও আঘাতে ঢাকা পড়ে গেছে। আমি অসংখ্যবার তাকে ক্ষমা করেছি। কিন্তু সেই ক্ষতগুলো কখনো পুরোপুরি সারেনি। বুঝতে পারছি, আমি এক ধরণের মানসিক অস্থিরতার মধ্যে বাস করছি, একটা সম্পর্কে আটকে আছি, যা আমার জীবনের শক্তি শুষে নিচ্ছে। আমি জানি, আমি এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। আমি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও কোমলতার যোগ্য। সবকিছু ঠিক আছে—আমি আর এই ভান করতে চাই না।”
ডিভোর্সের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে জয়নব বলেন “এমন বিষাক্ত একটা সম্পর্কের জন্য আমি আমার সুখ ত্যাগ করেছি। আমি এখন নিজের জন্য, নিজের মানসিক সুস্থতার জন্য দাঁড়াচ্ছি। বেদনা ও কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে, আমি আমার জীবনের এই অধ্যায় (বিবাহিত জীবন) শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি ডিভোর্স নিচ্ছি। কারণ আমি জানি, এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। জীবনের নতুন অধ্যায় শুরুর জন্য আমি প্রস্তুত, যেখানে আমাকে মূল্য দেওয়া হবে, সম্মান করা হবে, ভালোবাসা হবে।”
জয়নবের এই ‘ডিভোর্স নোট’ নিয়ে যখন জোর চর্চা চলছে, তখন মুখে কুলুপ এঁটেছেন ফিরোজ খান। তবে এর আগে ফিরোজ খানের অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে দেওয়া একটি পোস্টে দেখা যায়। তাতে জয়নবের বিরুদ্ধে ‘ব্ল্যাকমেইল’ ও ‘মানসিক চাপের’ অভিযোগ তোলেন। যদিও পরবর্তীতে পোস্টটি মুছে ফেলা হয়। পাশাপাশি এই অভিনেতা জানান, তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছিল।
ডা. জয়নব
তবে সংসার ভাঙার গুঞ্জনে সরাসরি কোনো বক্তব্য দেননি ফিরোজ খান কিংবা তার স্ত্রী ডা. জয়নব। তবে বিনোদনভিত্তিক যে পেজ থেকে জয়নবের ‘ডিভোস নোট’ ছড়ানো হয়েছে, সেই পোস্টে মন্তব্য করেছেন তিনি। তাতে জয়নব লেখেন, “এই ধরনের পেজগুলো আনফলো করুন অথবা রিপোর্ট করুন। এই ধরনের পেজ থেকে ভুয়া খবর ছড়িয়ে মানুষকে বিরক্ত করা হচ্ছে। সত্যি বলছি, আমি জানি না কীভাবে তারা আমার স্টোরিতে পোস্টটি করার অ্যাকসেস পেয়েছে। এই পোস্ট আমি কখনো করিনি।”
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথম স্ত্রী সৈয়দ আলিজা সুলতানের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় ফিরোজ খানের। এ সংসারে সুলতান খান ও ফাতিমা খান নামে দুই সন্তান রয়েছে। বর্তমানে দুই সন্তানের দায়িত্ব নিয়ে আদালতে মামলা লড়ছেন এই প্রাক্তন দম্পতি। ২০২৪ সালে ডা. জয়নবকে বিয়ে করেন ফিরোজ খান।
ঢাকা/শান্ত