চার মাসেই পদত্যাগ প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর
Published: 10th, March 2025 GMT
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করা প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ড. এম আমিনুল ইসলাম পদত্যাগ করেছেন। গতকাল সোমবার তিনি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে তাঁর পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়ে নিজেই সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। দায়িত্ব পাওয়ার চার মাসের মধ্যে পদত্যাগ করলেন তিনি।
জানতে চাইলে পদত্যাগের কারণ সম্পর্কে কোনো কিছু জানাতে রাজি হননি আমিনুল ইসলাম। শুধু বলেন, আমি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছি। কী কারণে পদত্যাগ করেছি, তা নিয়ে কিছু জানাতে চাচ্ছি না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের পরামর্শ অনুযায়ীই ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই উপাচার্য।
গত বছরের ১০ নভেম্বর প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ পান অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম। একই সঙ্গে তাঁকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এতদিন শিক্ষা ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছিলেন অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। গত ৫ মার্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে সরে যান তিনি। ওই দিন নতুন শিক্ষা উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ও মানবাধিকারকর্মী ড.
এর আগের দিন আমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, নতুন উপদেষ্টা হিসেবে তিনি শপথ নিতে যাচ্ছেন। এটি নিয়ে তিনি ফেসবুকে স্ট্যাটাসও দেন। তাঁর এ বক্তব্য বিতর্কের জন্ম দেয়। পরদিন নতুন শিক্ষা উপদেষ্টা যোগ দিলেও সেই অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন তিনি।
পদত্যাগপত্র মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়ে দেওয়ার পর গতকাল ড. আমিনুল ইসলামকে অনেকটা বিষণ্ন মনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ত্যাগ করতে দেখা যায়। মন্ত্রণালয়ের রীতি অনুযায়ী, কোনো উপদেষ্টা বা মন্ত্রী পদত্যাগ বা দায়িত্ব হস্তান্তর করলে তাঁকে মন্ত্রণালয় থেকে বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়। কিন্তু গতকাল তাঁর বিদায় ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। মন্ত্রণালয়ে তাঁর বিদায়ের শেষ মুহূর্তে শিক্ষা উপদেষ্টা, মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগের সচিব, পিএস, এমনকি তাঁর দপ্তরের কোনো কর্মকর্তাও আসেননি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো জানায়, মন্ত্রণালয়ে তিনি গত চার মাসে অনেকটা হতাশা বোধ করছিলেন। আমিনুল ইসলামকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হলেও তাঁর কাছে কোনো ফাইল দেওয়া হতো না। মন্ত্রণালয়ের নীতি নির্ধারণে তাঁর কোনো ভূমিকা রাখার সুযোগ ছিল না। বিভিন্ন সময়ে তিনি এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে আক্ষেপও করেছেন। এসব নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে কথা বলতে গেলে তাঁকে দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এসব কারণেই তিনি পদত্যাগ করেন।
সরকারের আরেকটি সূত্র বলছে, গত সপ্তাহে অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ স্বেচ্ছায় শিক্ষা উপদেষ্টার পদ ছাড়তে চাইলে অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম ভেবেছিলেন, তাঁকেই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হবে। কিন্তু তাঁকে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। এটা তার জন্য একটা অপমান। এই কষ্ট থেকে শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরারকে যেদিন মন্ত্রণালয়ে বরণ করা হয়, সেদিনও তিনি উপস্থিত ছিলেন না।
তবে পদত্যাগ করলেও কোনো না কোনোভাবে শিক্ষার সঙ্গে থাকবেন বলে জানান তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন আনিসুজ্জামান চৌধুরী গতকাল প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টার নতুন বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। তাঁকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। গতকালই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
এতে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা আনিসুজ্জামান চৌধুরীকে প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগদান করেছেন। রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, উপদেষ্টাকে সহায়তা দেওয়ার জন্য তাঁকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতা অর্পণ করা হলো।
আনিসুজ্জামান চৌধুরী বর্তমানে ওয়েস্টার্ন সিডনি ইউনিভার্সিটির স্কুল অব সোশ্যাল সায়েন্সেস অ্যান্ড সাইকোলজি এবং অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্স ফোর্স একাডেমি, ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলসের স্কুল অব বিজনেসে অতিথি অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচনে জোরালো ভূমিকা পালন করবে আনসার: ডিজি
আসন্ন জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা জোরালো ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।
সোমবার (৩ নভেম্বর) জাতীয় নির্বাচনে আনসার-ভিডিপির ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তা মহড়া ও চতুর্থ ধাপের আনসার কোম্পানি প্লাটুন সদস্যদের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেছেন বাহিনীর মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল আব্দুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ।
তিনি বলেছেন, আনসার সদস্যরা ভোট কেন্দ্রগুলোর প্রথম প্রতিরক্ষা স্তর হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তারা ভোট কেন্দ্রের অভ্যন্তরে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রের নিরাপত্তা এবং ভোটাধিকার প্রয়োগের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিতে কাজ করবেন।
ডিজি আরো বলেন, সাধারণত নির্বাচনে প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে অস্ত্রধারী এবং অস্ত্রবিহীন নারী ও পুরুষ আনসার সদস্যদের সমন্বয়ে একটি দল মোতায়েন করা হয়। আনসার বাহিনী জনগণের নিরাপত্তা ও আস্থার প্রতীক হয়ে কাজ করবে এবং নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন নিশ্চিত করা হবে।তিনি
জানান, আনসার বাহিনী প্রথমবারের মতো ডিজিটাল মনিটরিং সিস্টেম চালু করেছে, যেখানে প্রতিটি সদস্য সদর দপ্তরের সঙ্গে ডিজিটাল সিস্টেমে যুক্ত থাকবেন।
ঢাকা/এমআর/রফিক