Samakal:
2025-08-01@21:56:49 GMT

মুক্তি মেলেনি

Published: 10th, March 2025 GMT

মুক্তি মেলেনি

রাত ১টা। বসন্তের রাতেও কেন যেন বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। নীরব নিশ্চুপ চারপাশ। ঘুমিয়ে গেছে কর্মমুখর শহর। থেমে গেছে সব কোলাহল। তবুও রাজ্যের হতাশা নিয়ে জেগে আছে ঊর্মিলা। 
মুক্তি যখন দিলেই তখন এত দেরিতে কেন মুক্তি দিলে? এমন মুক্তি তো আমি চাইনি– যে মুক্তি আমায় শান্তি দেয়নি একদণ্ড, দেয়নি মনের খুশিতে সুনীল আকাশে স্বাধীনভাবে ডানা মেলে উড়ে চলার অধিকার। বরং তুমি আমায় বন্দি করে রাখ বুকের প্রকোষ্ঠে, না পাওয়ার বেদনায় যখন গভীর রাতে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদবে তখন না হয় আমি ব্যথা হয়ে ঝরব সাড়ে পাঁচ প্রহর। আলো আঁধারিয়া চিলেকোঠা রুমের আবছা আলোয় টেবিল ল্যাম্পের উষ্ণ তাপে শখের ডায়েরিতে এই কয়েক লাইন লিখতেই খানিকটা হাঁপিয়ে উঠল ঊর্মিলা। 
আজ সেই দিন যেদিন একে অপরের কাছাকাছি এসেছিল ঊর্মিলা আর রাজন। একটা  নির্লিপ্ত শীতের বিকেলে টিএসসিতে প্রথম দেখা হয়েছিল। তারপর কত স্বপ্ন কত আশা আর হাজারো কমিটমেন্টের ঘেরাটোপে ছুটে চলা। অতঃপর তিন মাস সংসারজীবনের ইতি ঘটিয়ে দু’জনের মুক্তি। আজ এই নিশুতি রাতে সেসব ভাবতে গিয়ে ছলছল করে উঠছে ঊর্মিলার চোখ। হাতের অপর পিঠে চোখটা খানিক মুছে আবারও ডায়েরির বুকে স্মৃতির পশরা সাজিয়ে বসল সে।
মুক্তির স্বাদ আমার কাছে মহার্ঘ্য অমৃত, তবু তো গর্ব করে বলতে পারি কেউ আমায় ভালোবেসেছিল খুব গোপনে। মুক্তির স্বাদ দিতে পারেনি। এ মুক্তি তো আমি চাইনি। কভু চাইনি এমন স্বাধীনতা। এক প্রহরে তোমার যত্ন নিয়ে না হয় বেড়ে উঠব তোমার মতো করে। আরেক প্রহরে না হয় ছুঁইয়ে দিও আমার আঙুল, সেখানে না হয় আমি অটুট বন্ধনের স্বাদ খুঁজে নেব। বাকি সাড়ে তিন প্রহর তোলা থাক তোমার প্রতিটি শ্বাস-প্রশ্বাসে, রক্তকণিকায় কিংবা প্রতিটি চোখের পলকে। আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রাখ আমায় তোমার অস্তিত্বজুড়ে, বেঁচে থাকুক আমার প্রথম প্রেম।
তুমি কি জান– তোমার জৌলুসহীন মুক্তি আমায় কপটতা শেখায় কিন্তু প্রেম শেখাতে পারেনি কোনোদিন। পারনি নিঃস্বার্থভাবে আমায় একটু ছুঁইয়ে দিতে কিংবা ওই রক্তগোলাপ অধরে আলতো একটা চুম্বন দিতে। মুক্তি দিয়েও আমায় অদৃশ্য শিকলে কেন বন্দি করে রাখলে? মুক্ত করা প্রেমে এত জ্বালা, এত বিষাদ থাকে কেন? তুমি কি তা বলতে পার? জানি পারবে না যুক্তিতে মুক্তি মিললেও, আদতে মুক্তির কোনোদিন মুক্তি মেলেনি।
আমার কিন্তু সেটা জানা ছিল না। সে তো হৃদয়ের তোমার মুক্ত করে দেওয়া প্রেম আজকাল বড্ড স্বার্থবাদী হয়ে গেছে.

.. লেখা শেষ না করেই উঠে দাঁড়াল ঊর্মিলা। রুম থেকে বেরিয়ে ছাদের কার্নিশ ধরে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকল। বিদ্যুৎ চমকানোর সঙ্গে সঙ্গে মেঘের গর্জনটা বেশ বেড়েছে। পরক্ষণেই নিচতলা থেকে শোনা গেল কয়েকটি বেওয়ারিশ কুকুরের ডাক। v
সুহৃদ ঢাকা

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রহর

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ