কক্সবাজারে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ইউএনডিপির সঙ্গে কাজ করবে জাপান
Published: 11th, March 2025 GMT
কক্সবাজারে টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি’র (ইউএনডিপি) সঙ্গে কাজ করবে জাপান সরকার।
ঢাকায় অবস্থিত জাপান দূতাবাসে সোমবার (মার্চ ১০) এই উদ্দ্যেশ্যে চুক্তি স্বাক্ষর করে দুই পক্ষ।
“সাস্টেনেবল সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট” নামে এই প্রকল্পটি কক্সবাজারে বসবাসরত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ও স্থানীয় সম্প্রদায়ের মাঝে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অবস্থার উন্নতি সাধন করে সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করবে এবং এর পাশাপাশি অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করবে।
স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী ১ লাখ ৬০ হাজার রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মানুষ ও ৬০ হাজার স্থানীয় মানুষের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশকে ১.
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ও শরণার্থী শিবিরের কাছে অবস্থিত স্থানীয় মানুষের জীবনমান উন্নয়নে এই প্রকল্প ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করেন তাকাহাশি নাওকি।
তাকাহাশি আশা ব্যক্ত করেন, “রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে এই প্রকল্পটি সাজানো হয়েছে। আমি আশা করি, এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে এই অঞ্চলের মানুষের মাঝে বর্জ্য বিষয়ক জনসচেতনতার পাশাপাশি, জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধি হবে এবং তাদের অর্থ উপার্জনের পথও তৈরি হবে। দিনশেষে এটি একটি স্বাস্থ্যকর, লিঙ্গ ও জলবায়ু উপযোগী সামাজিক বাস্তুসংস্থান তৈরিতে সাহায্য করবে। জাপান এই ধরনের টেকসই উদ্যোগে জড়িত থাকতে সবসময় আগ্রহী। তাই নিজেরা সহায়তা করার পাশাপাশি ইউএনডিপি’র মতো আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে এসব বিষয়ে সহযোগিতা করে যাবে।”
জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার অংশীদারমূলক কাজের প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, “টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা শুধু মানুষের জন্য না, পরিবেশের জন্যও খুব গুরুত্বপূর্ণ। জাপান-ইউএনডিপি’র অংশীদারমূলক কাজ শুধুমাত্র বর্তমান সময়ে রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগণের জন্য না, বরং ভবিষ্যতেও মানুষ কিভাবে পরিবেশের ক্ষতি না করে বর্জ্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারে সেইটা নিয়ে কাজ করবে। কক্সবাজারে পরিষ্কার ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ প্রতিষ্ঠায় স্থানীয় জনগণের পরামর্শ অনুযায়ী নতুন নতুন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে আমরা কাজ করব।”
২০১৭ সালের আগস্ট মাসে শুরু হওয়া রোহিঙ্গা সংকটের শুরু থেকেই জাপান বাংলাদেশকে সহায়তা করে আসছে। নতুন এই আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি দেশটি বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ সরকার, ইউএনডিপি ও জাতিংসঘের অন্যান্য সংস্থার ও নানা জাতীয় সংস্থাকে ২৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দিয়ে সহায়তা করেছে।
ঢাকা/হাসান/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউএনড প ক জ করব
এছাড়াও পড়ুন:
‘অরেঞ্জ বন্ড অন্তর্ভুক্তিমূলক পুঁজিবাজার তৈরির সুযোগ দিচ্ছে’
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বলেছেন, “অরেঞ্জ বন্ড অন্তর্ভুক্তিমূলক পুঁজিবাজার তৈরির সুযোগ করে দিচ্ছে, যা দেশের নারীদের প্রান্তিক ও পরনির্ভরশীল অবস্থান থেকে উদ্যোক্তা কিংবা নেতৃত্বের অবস্থানে উন্নীত করতে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে।”
সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিএসইসির মাল্টিপারপাস হলে নারীর ক্ষমতায়নে অরেঞ্জ বন্ডের উদ্যোগ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় তিনি কর্মশালার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন এবং কর্মশালার সর্বাত্মক সাফল্য কামনা করেন।
আরো পড়ুন:
যমুনা অয়েলের ৯ মাসে মুনাফা বেড়েছে ৩৭.৭৮ শতাংশ
সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সের ১২ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা
খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বলেন, “নারীর ক্ষমতায়ন কেবল একটি নৈতিক বাধ্যবাধকতা নয়-এটি একটি অর্থনৈতিক প্রয়োজনীয়তা। বর্তমানে নারীরা দেশের শ্রমশক্তির প্রায় ৪১ শতাংশ হলেও, মাত্র ৬ শতাংশ নারীর আনুষ্ঠানিক অর্থায়নের সুযোগ রয়েছে। নারী ক্ষমতায়নের জন্য নারী-নেতৃত্বাধীন উদ্যোগগুলিতে অর্থায়ন নিশ্চিতকরণ ও বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে অরেঞ্জ বন্ডকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। ক্ষুদ্রঋণের জনক ও নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের পথিকৃৎ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের ‘থ্রি জিরো তত্ত্ব' বা শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য নেট কার্বন নির্গমন বিষয়ের যে ভিশন তার ক্ষেত্রে সেতু হিসেবে কাজ করতে পারে অরেঞ্জ বন্ড।
বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বিএসইসির কমিশনার ফারজানা লালারুখের সভাপতিত্বে কর্মশালাটির সূচনা হয়। বিএসইসির মাল্টিপারপাস হলে আয়োজিত উক্ত কর্মশালায় বিএসইসির কর্মকর্তা এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ব্যাংক, ইউএনডিপি, আইএফসি বাংলাদেশ ও পুঁজিবাজারের ইস্যু ম্যানেজার প্রতিষ্ঠানসমূহসহ বন্ড বাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
কর্মশালায় বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। উক্ত প্রবন্ধে দেশের টেকসই বন্ড মার্কেটের উন্নয়নের জন্য বিএসইসির গৃহীত উদ্যোগসমূহ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা, ইউএনডিপির সাথে বিএসইসির সমঝোতা স্মারক, দেশে অরেঞ্জ বন্ডের সম্ভাবনা সম্পন্ন খাতসমূহ, অরেঞ্জ বন্ড ইস্যুর ক্ষেত্রে রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্কসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়।
এছাড়া কর্মশালায় ইউসিবি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও তানজিম আলমগীরের সঞ্চালনায় একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত প্যানেল আলোচনায় অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব একেএম সোহেল, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব কামরুল হক মারুফ, বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান, ইউএনডিপি বাংলাদেশের প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট ড. মালিহা মোজাম্মেল, আইএফসি বাংলাদেশের ইএসজি অফিসার মিজ লোপা রহমান অংশ নেন।
প্যানেল আলোচনায় দেশের বন্ড মার্কেটের নানাদিক নিয়ে আলোকপাত করা হয়। এছাড়া কর্মশালায় একটি উন্মুক্ত আলোচনা সভা হয়। সভায় দেশের বন্ড মার্কেট এবং বিশেষত অরেঞ্জ বন্ড এর সুযোগ, সম্ভাবনা, চ্যালেঞ্জ ও করণীয়সহ বিভিন্ন বিষয়ে অংশগ্রহণকারীরা প্রশ্ন ও পরামর্শ প্রদান করেন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়া ইমপ্যাক্ট ইনভেস্টমেন্ট এক্সচেঞ্জের (আইআইএক্স) প্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশি আমেরিকান উদ্যোক্তা অধ্যাপক দুরীন শাহনাজের পক্ষ হতে ইমপ্যাক্ট ইনভেস্টমেন্ট এক্সচেঞ্জের পরিচালক দেবাশীষ রায় ও লাইটক্যাসল পার্টনার্সের সিইও বিজন ইসলাম কর্মশালায় অরেঞ্জ বন্ড ও বন্ড মার্কেটের বিভিন্ন প্রসঙ্গে আলোচনা করেন।
বিএসইসির কমিশনার ফারজানা লালারুখ উক্ত কর্মশালায় সমাপনী বক্তব্যে বলেন, “নারীরা দেশের জনগোষ্ঠীর অর্ধেক এবং তাদের দ্বারাই দেশের অর্ধেক অর্থনীতি ও কর্মশক্তি গঠিত। তাই নারীদের সাথে নিয়েই উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে এগোতে হবে এবং এক্ষেত্রে অরেঞ্জ বন্ড বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। পুঁজিবাজার দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি এবং এখানে ইক্যুইটি ভিত্তিক পণ্যের পাশাপাশি আরো বিভিন্ন বৈচিত্রপূর্ণ পণ্য থাকা উচিত যা বাজারের বৈচিত্রায়ন করবে এবং বাজারকে আরো টেকসই রূপ দিবে। এক্ষেত্রে অরেঞ্জ বন্ড কার্যকরি ভূমিকা রাখতে পারে।”
ঢাকা/এনটি/এসবি