কানাডার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের পর আর দেরি করেনি। টরন্টোর একটি পানশালা তাদের মেনু থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সব পণ্য সরিয়ে নেয়।

এর অর্থ দাঁড়াচ্ছে, পানশালায় পানীয়সহ সব ধরনের খাবার অবশ্যই হতে হবে কানাডার উৎপাদিত। তবে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের বিকল্প কোনো পণ্য যদি কানাডার না থাকে, তাহলে ইউরোপের অন্য কোনো দেশ বা মেক্সিকোর খাবার রাখা হবে। কোনোভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের নয়।

টরন্টোর ম্যাডিসন অ্যাভিনিউ নামের পানশালার ব্যবস্থাপক লিয়া রুসেল বলছিলেন, মার্কিন পণ্য বর্জন নিয়ে চিন্তাভাবনার কিছু নেই। তিনি বলেন, বিষয়টি এখন এমন যে এটাকে পরিবর্তন করা বেশ কঠিন হবে। এমনকি মার্কিন শুল্ক না থাকলেও পণ্য বর্জন অব্যাহত থাকতে পারে।

রুসেল গত বৃহস্পতিবার বিবিসিকে বলেন, ‘আমি আনন্দিত যে আমরা মার্কিন পণ্য থেকে মুক্ত হচ্ছি এবং স্থানীয় ব্যবসাকে সহায়তা করার পথে এগোচ্ছি। আমি মনে করি, এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডার ওপর শুল্কারোপ এবং সার্বভৌমত্ব নিয়ে হুমকি দেওয়ার পর দেশটিতে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ট্রাম্পের পদক্ষেপে কানাডার অর্থনীতিতে অপ্রত্যাশিত প্রভাব পড়তে পারে। তবে ট্রাম্প পুরো মাত্রায় বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু করলে কানাডার পক্ষে সেটি এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই।

মলসন কানাডিয়ান বিয়ারের একসময় বিজ্ঞাপন করেছিলেন কানাডার অভিনেতা জেফ ডগলাস, যাতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি কানাডীয়’। সম্প্রতি কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হিসেবে যুক্ত হতে বলেছিলেন ট্রাম্প। ওই বিষয়টিকে মাথায় রেখে জেফ ইউটিউবে একটি ভিডিও বানিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আরও এমন বিষয় কানাডায় দেখা যাচ্ছে, যা অনেকটা প্রতীকী। যেমন মন্ট্রিয়লের একটি ক্যাফে তাদের মেনুতে ‘আমেরিকানো’ পরিবর্তন করে ‘কানাডিয়ানো’ করেছে। ক্যাফের মালিকেরা বলছেন, দেশ ও মানুষের প্রতি সমর্থন জানাতে তাঁরা এই প্রতীকী পরিবর্তন এনেছেন।

ওই ভিডিওতে জেফ ঘোষণা দেন, ‘আমরা ৫১তম কোনো কিছুই না।’ তাঁর ওই ভিডিও কানাডায় ভাইরাল হয়ে গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আরও এমন বিষয় কানাডায় দেখা যাচ্ছে, যা অনেকটা প্রতীকী। যেমন মন্ট্রিয়লের একটি ক্যাফে তাদের মেনুতে ‘আমেরিকানো’ পরিবর্তন করে ‘কানাডিয়ানো’ করেছে। ক্যাফের মালিকেরা বলছেন, দেশ ও মানুষের প্রতি সমর্থন জানাতে তাঁরা এই প্রতীকী পরিবর্তন এনেছেন।

এমনকি কানাডার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল সিবিসি মানুষের মধ্যে দেশপ্রেম জাগিয়ে তুলতে একটি অনুষ্ঠান সম্প্রচার শুরু করেছে। এতে কানাডার নাগরিকদের প্রশ্ন করা হয়, ট্রাম্প যে বারবার কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন, সেটা নিয়ে তাঁরা কী মনে করেন।

এই অনুষ্ঠানে প্রশ্নের জবাবে কানাডার মানুষ ট্রাম্পকে ‘বিশ্বাসঘাতক’, ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’, ‘বেইমান’ বলে আখ্যায়িত করেন।

অবশ্য চলতি সপ্তাহে ট্রাম্প কানাডার কিছু পণ্যের ওপর থেকে আরোপিত শুল্ক তুলে নিয়েছেন। আবার কিছু কিছু শুল্ক ২ এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিত করেছেন। তাতে কানাডার মানুষের ক্ষোভ কমেনি। অনেক কানাডীয় বলছেন, ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গেছে।

গত বৃহস্পতিবার ট্রাম্প শুল্ক স্থগিত করার সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি সিএনএনকে বলেন, ‘আমাদেরকে ৫১তম অঙ্গরাজ্য, আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে গভর্নর বলে ট্রাম্প প্রশাসন কানাডার প্রতি ব্যাপক মাত্রায় অসম্মান দেখিয়েছে।’

কানাডার সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ প্রদেশের নেতা ডাউ ফোর্ড যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অঙ্গরাজ্যে বিদ্যুৎ রপ্তানির ওপর শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ১৫ লাখ বাড়ির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্কারোপ করা হবে বলে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন।

কানাডার সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ প্রদেশের নেতা ডাউ ফোর্ড যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অঙ্গরাজ্যে বিদ্যুৎ রপ্তানির ওপর শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ১৫ লাখ বাড়ির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্কারোপ করা হবে বলে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন।

স্থানীয় এক বেতারকে ট্রাম্পের এসব পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে ডাউ ফোর্ড বলেন, ‘আমি মার্কিন নাগরিকদের কথা ভেবে আতঙ্কিত হচ্ছি। কারণ, মার্কিন নাগরিক বা যুক্তরাষ্ট্রের কোনো নির্বাচিত কর্মকর্তা নন—একজন মাত্র ব্যক্তির কারণে এত কিছু হচ্ছে।

ফোর্ড বলেন, ‘তিনি তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের, ঘনিষ্ঠ মিত্রদের পেছনে লেগেছেন। এতে উভয় পক্ষের অর্থনীতি বিপর্যস্ত অবস্থার মধ্যে পড়তে যাচ্ছে।’

কানাডার নাগরিকেরা সে দেশের সরকারের পাল্টা শুল্কারোপকে পুরোপুরি সমর্থন জানাচ্ছেন। তাঁরা বলছেন, যত দিন যুক্তরাষ্ট্র শুল্কারোপ বাতিল না করছে, তত দিন কানাডার সরকারের উদ্যোগের প্রতি তাঁদের সমর্থন থাকবে।

টরন্টোর লিকার কন্ট্রোল বোর্ড অব অন্টারিওর দোকানি অ্যান্ড্রু বলছিলেন, ‘প্রতি রাতে আপনি ঘুমাতে যাচ্ছেন এবং আপনার কোনো ধারণাই নেই যে আপনি কোথায় আছেন, কী অবস্থান নিচ্ছেন।’ অ্যান্ড্রুর পানশালায় যুক্তরাষ্ট্রের কেন্টাকি থেকে আসা বোরবর্ন হুইস্কি রাখা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অ্যান্ড্রু প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘ট্রাম্প অবশ্য বলেছেন, তিনি শুল্ক আরোপ কিছুটা বিলম্ব করবেন। কিন্তু তাঁর এই কথার কী অর্থ থাকতে পারে?’

যুক্তরাষ্ট্র যদি ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ বলবৎ রাখে, তাহলে লাখ লাখ মানুষ চাকরি হারাতে পারেন। অর্থনীতিবিদেরা আশঙ্কা করছেন, এই অবস্থা চলতে থাকলে মহামন্দা দেখা দিতে পারে।

অ্যান্ড্রু বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি পানীয় তত দিন পানশালায় রাখা বন্ধ রাখব, যত দিন না বিষয়টির সুরাহা হচ্ছে।’

ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের পর কানাডায় গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে যেসব প্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগ পণ্য মার্কিন কোম্পানি ও মক্কেলদের কাছে রপ্তানি করা হয়, তারা উদ্বিগ্ন। যুক্তরাষ্ট্র যদি ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ বলবৎ রাখে, তাহলে লাখ লাখ মানুষ চাকরি হারাতে পারেন। অর্থনীতিবিদেরা আশঙ্কা করছেন, এই অবস্থা চলতে থাকলে মহামন্দা দেখা দিতে পারে।

ট্রাম্পের এই শুল্কারোপের প্রভাব যথেষ্ট বিপর্যয়কর হতে পারে। এ কারণেই কিনা কানাডার সরকার ইতিমধ্যে কোভিডের সময়ের মতো উদ্বেগ নিরসনে কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। বিশেষ করে শুল্কারোপের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ ও নীতির সহকারী অধ্যাপক অর্থনীতিবিদ বব গিলেজাউ বলেন, শুল্কারোপ সাময়িক সময়ের জন্য স্থগিত করা হলেও যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, তা যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

আমি আনন্দিত যে আমরা মার্কিন পণ্য থেকে মুক্ত হচ্ছি এবং স্থানীয় ব্যবসাকে সহায়তা করার পথে এগোচ্ছি। আমি মনে করি, এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ—লিয়া রুসেল, ব্যবস্থাপক টরন্টোর ম্যাডিসন অ্যাভিনিউ

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো শুল্কারোপ এবং কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হিসেবে যোগ দেওয়ার ট্রাম্পের পরামর্শের নিন্দা জানিয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার অটোয়ায় গণমাধ্যমকে ট্রুডো বলেন, ‘ট্রাম্প কানাডার অর্থনীতিকে পুরোপুরি বিধ্বস্ত দেখতে চান। কারণ, সেটা হলে কানাডাকে তাঁর দেশের অন্তর্ভুক্ত করা সহজ হবে।’

অধ্যাপক গিলেজিউ বলেন, যাকে সবচেয়ে বন্ধুত্বপূর্ণ ও ঘনিষ্ঠ মিত্র ভেবে থাকে, সেই প্রতিবেশী দেশ থেকে এমন আচরণ কানাডার জন্য গভীর ক্ষত বৈকি।

এই অধ্যাপক বলেন, ‘আমরা কয়েক শ বছর ধরে ঘনিষ্ঠ মিত্র। কানাডার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে আচরণ করছে, কেবল তা নিয়ে তারা হতাশ নন, বরং ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আচরণ নিয়েও তারা হতাশ।

অধ্যাপক গিলেজিউ বলেন, ‘আমরা ভদ্র, সম্মানিত মানুষ। আমরা আমাদের মিত্রদের পাশে দাঁড়াই। কানাডার মানুষের মধ্যে আমরা যে ক্ষোভ দেখছি, সেটার কারণ হচ্ছে মিত্রদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আচরণ।’

কানাডার মার্কিন পণ্য বর্জনের প্রভাব ইতিমধ্যে পড়তে শুরু করেছে। কানাডার গণমাধ্যম গ্লোবাল নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফ্লাইট সেন্টার কানাডার তথ্যমতে গত বছরের জানুয়ারি–ফেব্রুয়ারির তুলনায় চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে কানাডীয়দের ভ্রমণের বুকিং ৪০ শতাংশ কমেছে। স্থলপথে ব্রিটিশ কলাম্বিয়া ও ওয়াশিংটন স্টেটের মধ্যেও কানাডার মানুষের ভ্রমণ বেশ কমে গেছে।

শুল্কারোপের আগে কানাডীয়দের ভ্রমণের প্রধান গন্তব্য ছিল যুক্তরাষ্ট্র। কেবল ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটনশিল্পে কানাডার নাগরিকদের অবদান ছিল প্রায় ২ হাজার ৫০ কোটি মার্কিন ডলার।

এই অবস্থা অব্যাহত থাকবে কি না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে গিলেজাউ বলেন, কানাডার মানুষ সাধারণত প্রতিবেশীর সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়। কিন্তু সেটা না হলে কানাডার ‘অন্য যেকোনো জায়গার’ বন্ধু থাকা দরকার। কানাডার মানুষ সবাই এ বিষয়ে একমত।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ ল জ উ বল ন টরন ট র র পর ক ঘন ষ ঠ ব যবস র ওপর বলছ ন অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ‘ফ্যাসিবাদী আচরণের’ অভিযোগ, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বললেন আসিফ মাহমুদ

একজন উপদেষ্টার বিরুদ্ধে কুমিল্লার মুরাদনগরে ‘ফ্যাসিবাদী আচরণের’ অভিযোগ করেছেন একদল ব্যক্তি। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘মুরাদনগর উপজেলা সনাতন ধর্মাবলম্বী জনতা’ ব্যানারে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। সেখানে মুরাদনগর থেকে আসা সনাতন ধর্মের কয়েকজন কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার বাবা ও চাচাতো ভাইয়ের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের অভযোগ করা হয়। তা ছাড়া পুলিশকে ব্যবহার করে নির্যাতন চালানোর অভিযোগ তুলে এই উপদেষ্টার পদত্যাগও দাবি করেন সংবাদ সম্মেলনকারীরা। তবে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেছেন, অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ মিথ্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এলাকার সাবেক একজন সংসদ সদস্যের অনুসারীরা উদ্দেশ্যমূলকভাবে এসব করছেন।

সংবাদ সম্মেলনে ‘সর্ব ধর্ম মিশন’র প্রচারক পরিচয় দিয়ে দুলাল দেবনাথ বলেন, ‘বিগত ১৫ বছর ইউসুফ আবদুল্লাহর (আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন) নেতৃত্বে সন্ত্রাসী কার্যক্রম করা আওয়ামী লীগের দোসরেরা আজ উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবার ও ভাইয়ের নেতৃত্বে মুরাদনগরে পুনর্বাসিত হওয়ার চেষ্টা করছে এবং কায়কোবাদ (বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ) সাহেবের সুনামকে নষ্ট করার জন্য তারা বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছে। ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে আমরা তার (উপদেষ্টার) পদত্যাগ চাই।’

অভিযোগ করে দুলাল দেবনাথ আরও বলেন, ‘উপদেষ্টা আসিফ ভুঁইয়ার বাবা আজকে আমার বাড়িতে দুজন হিন্দু কমিউনিটির লোক পাঠিয়ে বাধা সৃষ্টি করেছে, আমি যেন এই প্রোগ্রামে না আসতে পারি। এ ছাড়া আমরা মুরাদনগর থেকে ঢাকায় আসার পথে কুমিল্লার দাউদকান্দি টোল প্লাজায় গাড়ির কাগজপত্র চেকের (যাচাই বাছাই) নামে এক ঘণ্টা আটকে রাখা হয়।’

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মুরাদনগর উপজেলা পূজা উদ্‌যাপন কমিটির সহসভাপতি দীন দয়াল পাল। তিনি বলেন, মুরাদনগর উপজেলায় যানজট নিরসনে সাবেক পাঁচবারের এমপি মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দেন। তবে পুলিশকে ব্যবহার করে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবা, চাচাতো ভাই ছাত্রলীগ নেতা–কর্মীদের দিয়ে স্বেচ্ছাসেবকদের মারধর করায়। পরে এই স্বেচ্ছাসেবকদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে থানার সামনে বিক্ষোভ মিছিল হয় এবং সেদিন সেনাবাহিনী ও পুলিশের সঙ্গে রাতভর সালিসও চলে। অথচ রাতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের সালিসে বসে বিষয়টি সমাধান করতে আসা বিএনপি নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা দেয় এবং পবিত্র ঈদ ও রমজানজুড়ে পুরো মুরাদনগরে পুলিশ ও ডিবি আতঙ্ক বিরাজ করে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মুরাদ নগর ইউনিয়ন পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক রঞ্জন রায়, কামাল্লা দেবপরি মন্দির কমপ্লেক্সের সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব কুমার সাহা, নিবাস চন্দ্র ঘোষ, দয়ানন্দ ঠাকুর।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন এর আগেও একটি সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছিল। আমার কাছে যে তথ্য রয়েছে, কয়েকজন সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতাকে সামনে রেখে এটি করা হচ্ছে, যারা সাবেক এমপি কায়কোবাদের সঙ্গে রাজনীতি করেন। সনাতন ধর্মাবলম্বী অনেককে এসি বাসে করে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়েছে এবং তাদের প্রত্যেককে নির্দিষ্ট পরিমাণ একটা অর্থ দেওয়া হয়েছে।’

বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য কায়কোবাদের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেছেন, ‘বরং কায়কোবাদ আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক এমপি জাহাঙ্গীরের সঙ্গে থেকে চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, বালু উত্তোলন, মাটি উত্তোলনের অবৈধ কাজগুলোর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের পুনর্বাসন করছেন এবং সবাইকে নিয়ে রাজনীতি করছেন।’

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘একটা ভিডিওতে দেখেছি, যারা এক সময় কায়কোবাদের ফাঁসি চেয়ে মিছিল করেছিল, তারা এখন কায়কোবাদের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করেন। যদি আপনি মুরাদনগরের সাধারণ মানুষকে জিজ্ঞাসা করেন কী অবস্থা এলাকার? তাহলে তারা চাঁদাবাজ ও মাদক ব্যবসায়ীদের যে অত্যাচার, সে কথা আপনাদের বলবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গুরুত্ব আরোপ
  • অফিসে ঢুকে প্রধান শিক্ষককে জুতাপেটা করার অভিযোগ
  • মাওলানা রঈস উদ্দিন হত্যার বিচার দাবি ১০৪ নাগরিকের
  • গোবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি
  • শারীরিক শাস্তি শিশুর বিকাশে বড় বাধা, বিলোপ জরুরি
  • সন্তানের বন্ধু হতে চাইলে
  • উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ‘ফ্যাসিবাদী আচরণের’ অভিযোগ, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বললেন আসিফ মাহমুদ
  • সবুজ এলাকায় পুলিশের প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার কম হয়
  • গোবিপ্রবিতে কর্মকর্তাদের শৃঙ্খলাবিষয়ক কর্মশালা শুরু
  • মূলধারার শিক্ষার সঙ্গে কারিগরি শিক্ষা সম্পৃক্ত করা দরকার: শিক্ষা উপদেষ্টা