ফিলিস্তিনের গাজায় যেকোনো ধরনের যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকরে স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসকে অস্ত্র সমর্পণ এবং গাজা ছেড়ে যেতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ এ কথা বলেছেন। যুদ্ধবিরতি নিয়ে কাতারের দোহায় চলমান আলোচনায় অংশ নিতে গতকাল সোমবার মধ্যপ্রাচ্যের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার আগে তিনি মন্তব্য করেন।

ফক্স নিউজকে উইটকফ বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত হামাসের সামরিক শাখার অস্তিত্ব থাকবে এবং ইসরায়েলের প্রতি হুমকি তৈরি করবে, তত দিন শান্তি অর্জন সম্ভব নয়। তিনি মূলত ইসরায়েলের দাবির বিষয়টিই পুনর্ব্যক্ত করলেন।

ট্রাম্পের বিশেষ দূত বলেন, ‘গাজা ছেড়ে যাওয়া ছাড়া তাদের জন্য যৌক্তিক ও যুক্তিসংগত কোনো বিকল্প নেই। যদি তারা ছেড়ে যায়, তাহলে আলোচনার মাধ্যমে শান্তি চুক্তিতে পৌঁছানোর সবকিছু আলোচনার টেবিলে আছে বলি আমি মনে করি।’

আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, দোহায় মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে ইসরায়েলের আলোচনা চলছে। মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার, মিসর ও আমেরিকার কূটনীতিকদের মধ্যকার খুবই গোপনীয় বৈঠকের বিষয়ে কিছুই জানা যাচ্ছে না। এর আগে মিসরের কায়রোয় অনুষ্ঠিত বৈঠকে হামাস নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেছে।

দুই পক্ষের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে একটি মাঝামাঝি অবস্থানে আসার চেষ্টা করছে মধ্যস্থতাকারীরা। এখন মূল বিষয় হলো, চলমান যুদ্ধবিরতির মেয়াদ পুরো রমজান মাস পর্যন্ত বাড়ানো হবে, নাকি দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতির বিষয়ে সমঝোতা হবে। হামাস চায় দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি শুরু হোক।

কিন্তু ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির কারণে এখানে জটিলতা তৈরি হয়েছে। ৩১ মার্চ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারকে বাজেট পাস করতে হবে। দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হলে নেতানিয়াহুর কট্টর ডানপন্থী মিত্ররা বাজেট পাস আটকে দিতে পারে। এতে সরকারের পতন হলে ১০০ দিনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। এ পথে হাটতে রাজি নন নেতানিয়াহু। তাই তিনি চলমান যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে আগ্রহী।

এদিকে দোহায় যুদ্ধবিরতির আলোচনার মধ্যেই গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আজ মঙ্গলবার ছয় ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে পাঁচজন নিহত হয়েছেন মধ্য গাজায় নেতজারিম করিডর এলাকায়। এর আগে দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফায় নিহত হন এক নারী। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গাজায় ৪৮ হাজার ৫০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হলেন।

এ ছাড়া ইসরায়েল গাজায় ত্রাণ ও জ্বালানির প্রবেশ এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় দুর্বিষহ পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা। তীব্র শীতের মধ্যে অন্ধকারের মধ্যে তাদের থাকতে হচ্ছে। বন্ধ হয়ে গেছে অনেক বেকারি। অন্যান্য খাদ্যপণ্যের সংকটও দেখা দিয়েছে। পানি শোধনাগার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খাওয়ার পানির তীব্র সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র

এছাড়াও পড়ুন:

রপ্তানিকারকদের সুবিধা বাড়ল, বৈদেশিক মুদ্রার হিসাব থেকে সোয়াপ করে টাকা তোলা যাবে

রপ্তানিকারকদের সুবিধা বাড়ল। এখন থেকে রপ্তানিকারকেরা নিজেদের বৈদেশিক মুদ্রা (এফসি) হিসাব থেকে সোয়াপের মাধ্যমে টাকা তুলতে পারবেন।

আজ সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক এ–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এই প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে অনুমোদিত ডিলার (এডি) ব্যাংকগুলোকে ৩০ দিনের পুলে রক্ষিত বৈদেশিক মুদ্রা এবং রপ্তানিকারকের রিটেনশন কোটা (ইআরকিউ) হিসাবের বিপরীতে বৈদেশিক মুদ্রা-টাকা সোয়াপ চুক্তি করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সোয়াপ কী

সার্কুলার অনুসারে, আলোচ্য সোয়াপ চুক্তি বলতে একটি নির্দিষ্ট হারে ও মেয়াদে টাকার বিনিময়ে বৈদেশিক মুদ্রার স্পট ক্রয় এবং একই সঙ্গে একটি নির্ধারিত তারিখে পুনঃবিক্রয়ের ব্যবস্থাকে বোঝাবে। এ ক্ষেত্রে রপ্তানিকারকের নিজস্ব উৎসের বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবহৃত হবে। সোয়াপের মেয়াদ ইআরকিউ তহবিলের ব্যবহারযোগ্য মেয়াদের বেশি হতে পারবে না এবং ৩০ দিনের পুল তহবিলের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩০ দিন মেয়াদি সোয়াপ করা যাবে।

সার্কুলারে আরও বলা হয়েছে, সোয়াপের হার নির্ধারণে বাজারভিত্তিক বা খরচভিত্তিক সুদ বা মুনাফার পার্থক্য বিবেচনায় নেওয়া যাবে। আলোচ্য সোয়াপ লেনদেনকে ঋণ বা অর্থায়ন সুবিধা হিসেবে গণ্য করা হবে না। সোয়াপের মাধ্যমে প্রাপ্ত টাকা শুধু রপ্তানি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য চলতি মূলধনের চাহিদা মেটাতে ব্যবহার করা যাবে। কোনো ফটকা উদ্দেশ্যে ওই অর্থ ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

শিল্প খাতের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, বাংলাদেশ ব্যাংকের এ উদ্যোগের কারণে রপ্তানিকারকদের স্বল্পমেয়াদি তারল্য চাপ কমাতে সহায়তা করবে। এতে প্রচলিত রপ্তানি ঋণের ওপর নির্ভর না করেও প্রয়োজনীয় কার্যক্রম চালাতে পারবেন। পাশাপাশি এটি বাজারভিত্তিক বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনাকেও উৎসাহিত করবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ