পিরোজপুর মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. বাবুল সরকারের ইয়াবা সেবনের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভাইরাল হওয়ায় ছবিতে দেখা যায়, অশালিন পোশাক পরিহিত এক নারীর সাথে খালিগায়ে বসে তিনি ইয়াবা সেবন করছেন।

ছবিটি মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তার সঙ্গে বসে মাদক সেবনরত নারীর পরিচয় তৎক্ষণাৎ জানা যায়নি।

পিরোজপুর জেলা মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক বাবুল সরকার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর শাখার বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। 

এছাড়া তিনি ছাত্রজীবনে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ক্যাডার ছিলেন। যেকারণে তিনি গত আওয়ামী লীগ সরকার আমলে এই পরিচয়ে বিভিন্ন দপ্তরে প্রভাব রেখে চলতেন।

এ বিষয়ে জানতে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক বাবুল সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে কয়েকবার ফোন দেওয়া হয়। তবে তিনি ফোন রিসিভ না করে বারবার কেটে দেন। এমনকি তার কার্যালয়ে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। তিনি কোথায় আছেন এ বিষয়ে অফিসের কেউই খোঁজ খবর দিতে পারেননি। তারা কোনো বক্তব্য দিতেও রাজি হননি। মোবাইল ফোনে খুদে বার্তা পাঠালেও বাবুল জবাব দেননি।

পিরোজপুর মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক বাপন সেন বলেন, ‘‘আপনারা যেমনটি দেখেছেন, আমরাও তেমনই দেখেছি। উনি আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, তাই এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।”

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) পিরোজপুর জেলা শাখার সভাপতি মনিরুজ্জামান নাসিম আলী বলেন, “যদি এ ঘটনা সত্যি হয়, তবে অনতিবিলম্ব তাকে চাকরিচ্যুত করা হোক।”

পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফুল আলম খান বলেন, “ছবিটি আমি দেখিনি, তবে বিষয়টি শুনেছি। অভিযুক্ত সহকারী পরিচালক বাবুল সরকার এবং তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে সার্ভিস রুল অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো.

হাসান মারুফ বলেন, “মাদক সেবনের ছবি নিয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ হলে গণমাধ্যমকে বিস্তারিত জানানো হবে।”

ঢাকা/তাওহিদুল/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব ব ল সরক র দ রব য ন সহক র

এছাড়াও পড়ুন:

নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।

মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।

এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।  

প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।  কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।

মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।

নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ