গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক লাকী আক্তারের বিরুদ্ধে দেশবিরোধী ও উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগ এনে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার দাবি করেছে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন। 

বুধবার (১২ মার্চ) ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইউসুফ আহমাদ মানসুর ও সাধারণ সম্পাদক শেখ মাহবুবুর রহমান নাহিয়ান স্বাক্ষরিত এক যৌথ বিবৃতিতে এ গ্রেপ্তার জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ২০১৩ সালের শাহবাগ আন্দোলনের সময় লাকী আক্তার ও তার সহযোগীরা ইসলাম, আলেম-ওলামা ও দেশের শান্তিপ্রিয় জনতার সেন্টিমেন্টের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। আজো সে একই অপকৌশলের আশ্রয় নিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। স্বাধীনতার পর থেকে একটি চিহ্নিত গোষ্ঠী দেশের স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে এবং লাকী আক্তার সেই গোষ্ঠীর সক্রিয় সদস্য হিসেবে আবারো প্রকাশ্যে এসেছে। দেশের বিচার ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা এবং খুনি হাসিনার মতো স্বেচ্ছাচারী শাসক তৈরি করতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল তাদের। 

আরো পড়ুন:

লাকি আক্তারের গ্রেপ্তার দাবিতে মধ্যরাতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ফেসবুক স্ট্যাটাসের প্রতিবাদ শিবিরের

তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ জনগণের ধর্মীয় ও নৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বদ্ধপরিকর। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, লাকী আক্তারের মতো দেশবিরোধী অপশক্তিদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো সময়ের দাবি। সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে লাকী আক্তারকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায়, দেশপ্রেমিক ছাত্র-জনতা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।

তারা বলেন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাসী। কিন্তু যদি প্রশাসন নিরব থাকে এবং লাকী আক্তারের অপতৎপরতা বন্ধ না করা হয়, তাহলে আমরা দেশব্যাপী বিক্ষোভ ও গণআন্দোলনের ডাক দিতে বাধ্য হবো।

বিবৃতিতে সর্বস্তরের জনগণকে শাহবাগীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানানো হয় এবং সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ