নিষিদ্ধের চিঠির পরই আফগানিস্তানের সিরিজ বাতিল করল আয়ারল্যান্ড
Published: 12th, March 2025 GMT
আফগানিস্তানের বিপক্ষে নির্ধারিত সিরিজ আকস্মিকভাবে বাতিল করেছে আয়ারল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডাব্লিউ)-এর সাম্প্রতিক চিঠির পরই এই সিদ্ধান্ত আসে।
আইসিসির ভবিষ্যৎ সূচি (এফটিপি) অনুযায়ী, জুলাই মাসে আফগানিস্তানের বিপক্ষে আয়ারল্যান্ডের একটি টেস্ট, তিনটি ওয়ানডে ও তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার কথা ছিল। তবে হঠাৎ করেই আয়ারল্যান্ড এই সিরিজ আয়োজন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয়।
ক্রিকেট আয়ারল্যান্ডের প্রধান নির্বাহী ওয়ারেন ডয়ুট্রোম বলেছেন, আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণেই সিরিজটি বাতিল করা হয়েছে। তার ভাষায়, ‘‘আমাদের বাজেট ব্যবস্থাপনার কৌশলের অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে বোর্ডের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যগুলোর সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষা করা যায়।’’
আরো পড়ুন:
ফেব্রুয়ারির সেরা ক্রিকেটার গিল
৭৫ শতাংশ কমানো হলো পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফি
তবে বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক রয়ে গেছে। বিশেষ করে আফগানিস্তানে নারীদের ক্রিকেট কার্যত নিষিদ্ধ থাকায়, দেশটির ক্রিকেট বোর্ড ও সরকারের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে সমালোচনা চলছিল। মানবাধিকার সংগঠনগুলো আইসিসির কাছে আফগানিস্তানকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে আসছিল।
২০২১ সালে তালেবান সরকার ক্ষমতায় আসার পর আফগান নারীদের ক্রিকেট খেলার অধিকার প্রায় পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে এর আগে অস্ট্রেলিয়াও আফগানিস্তানের বিপক্ষে নির্ধারিত সিরিজ বাতিল করেছিল। এবার হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ৭ মার্চ আইসিসিকে চিঠি দিয়ে আফগানিস্তানকে ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানায়।
এর পাশাপাশি, সম্প্রতি ১৬০ জন ব্রিটিশ রাজনীতিবিদও ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডকে (ইসিবি) আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ বয়কটের আহ্বান জানিয়েছিলেন। ফলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আফগানিস্তানের অবস্থান আরও কঠিন হয়ে উঠছে।
আয়ারল্যান্ডের ক্রিকেট সূচি পুরোপুরি বাতিল হয়নি। সেপ্টেম্বর মাসে তারা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো ঘরের মাঠে একটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে। এছাড়া, মে ও জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওডিআই ও টি-টোয়েন্টি সিরিজও অনুষ্ঠিত হবে। তবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ বাতিল হওয়ায় এটি দেশটির ক্রিকেটের জন্য একটি বড় ধাক্কা।
এখন দেখার বিষয়, আইসিসি এই পরিস্থিতিতে কী সিদ্ধান্ত নেয়। আফগানিস্তান কি আদৌ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টিকে থাকতে পারবে, নাকি মানবাধিকার সংস্থাগুলোর চাপের মুখে নিষেধাজ্ঞার পথে হাঁটবে আইসিসি?
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আফগ ন স ত ন ব ত ল কর আইস স
এছাড়াও পড়ুন:
মামদানির উত্থান থেকে শিক্ষা নিচ্ছেন ইউরোপের বামপন্থীরা
নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির উত্থান ইউরোপের বামপন্থী রাজনীতিকদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। ফ্রান্স, জার্মানিসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে আগামী বছর স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগেই মঙ্গলবার ৪ নভেম্বর নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইউরোপের নেতারা চোখ রাখছেন মামদানির ওপর।
মামদানির নির্বাচনী প্রচার দেখতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের দলীয় কৌশলবিদেরা আগেই আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে নিউইয়র্কে এসেছেন। তাঁদের লক্ষ্য, মামদানিকে কাছ থেকে দেখে তাঁর রাজনীতির কৌশল শেখা। কারণ, মামদানি একেবারে সাধারণ অবস্থান থেকে উঠে এসে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহরের নেতৃত্বের দৌড়ে শীর্ষে পৌঁছেছেন। ইউরোপের রাজনীতিকেরা শিখতে চান, মামদানির তৃণমূলভিত্তিক প্রচারণা নিউইয়র্কে যেমন সফল হয়েছে, সেটি তাঁদের অঞ্চলেও কার্যকর হবে কি না।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বামপন্থীদের জোট দ্য লেফট গ্রুপের ফরাসি সহসভাপতি মানোঁ ওব্রি গত সপ্তাহে নিউইয়র্কে মামদানির প্রচারে অংশ নেন। ওব্রি ও তাঁর দল ফ্রান্স আনবাউড মামদানিকে পরিবর্তনের প্রতীক হিসেবে দেখছেন। তাঁরা মামদানির মডেল অনুসরণ করে ফ্রান্সজুড়ে ২০২৬ সালের পৌরসভা নির্বাচনে বড় প্রভাব ফেলতে চান।
জার্মানির পুঁজিবাদবিরোধী দল দ্য লেফট নিউইয়র্কে চার কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছে। তাঁরা মামদানির প্রচারকৌশলের প্রধান মরিস ক্যাটজসহ বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। দলটির সংসদীয় কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক লিজা ফ্লাউম বলেন, মামদানির মতো কৌশল অনুসরণ করে অতীতে তাঁদের দল ভালো করেছে। জীবনযাত্রার ব্যয় কমানোর বিষয়টি তাঁদের কাছে বেশি গুরুত্ব পেয়েছিল। এর পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে দরজায় দরজায় গিয়ে প্রচারের কৌশল নিয়েছিল তাঁদের দল। ফ্লাউম আশা করেন, বার্লিনে আগামী সেপ্টেম্বরের আইনসভা নির্বাচনে দ্য লেফট মামদানির বর্তমান প্রচারণাকে মডেল হিসেবে ব্যবহার করবে।
এদিকে মেয়র নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকা মামদানি বিদেশে তাঁর প্রচারকৌশল নিয়ে মাতামাতির বিষয়টিকে এখন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। এ প্রসঙ্গে মামদানি বলেন, আপাতত তাঁর মনোযোগ পুরোপুরি স্থানীয় রাজনীতিতে।
ফ্রান্স ও জার্মানির মতোই যুক্তরাজ্যের রাজনীতিকেরা মামদানির প্রচারকৌশল দেখে মুগ্ধ। মামদানির ছোট ছোট ভিডিওতে ব্যক্তিত্ব ও আকর্ষণকে কাজে লাগিয়ে জীবনযাত্রার খরচের বিষয়টি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আবার তাঁকে একই সঙ্গে আপনজন হিসেবেও উপস্থাপন করা হয়েছে।
আরও পড়ুননিউইয়র্কে মেয়র নির্বাচন: সর্বশেষ চার জরিপেও এগিয়ে জোহরান মামদানি৭ ঘণ্টা আগেফ্রান্স আনবাউডের সংসদ সদস্য দানিয়েল ওবোনো বলেন, ‘মামদানির দলীয় নির্বাচনে জয়টাই একটা বড় রাজনৈতিক ঘটনা। শুধু তিনি কী নিয়ে লড়েছেন, তা–ই নয়, বরং কীভাবে লড়েছেন, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর যোগাযোগের কৌশল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহারসহ অনেক কিছুই আমাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’
যুক্তরাজ্যের গ্রিন পার্টির নেতা মোথিন আলি বলেন, বামপন্থীদের এখন শেখা দরকার, কীভাবে মামদানির মতো করে সংক্ষিপ্ত অথচ প্রভাবশালী বার্তা পৌঁছে দিতে হয়। যুক্তরাজ্যের সাবেক লেবার নেতা এবং বর্তমানে ইয়োর পার্টির নেতৃত্বে থাকা জেরেমি করবিনও এক এক্স পোস্টে মামদানির প্রচারে সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেছেন।
আরও পড়ুননিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক আগাম ভোট, তরুণেরা কেন আগাম ভোট দিচ্ছেন৯ ঘণ্টা আগে