বিচার না হওয়ায় বাড়ছে শিশু ও নারী নির্যাতন
Published: 12th, March 2025 GMT
বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে দেশে শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা বাড়ছে। শিশুদের রক্ষা করতে হলে সামাজিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে এবং দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। খুন, ধর্ষণ ও শিশু নির্যাতনের ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবিতে প্রতিবাদী সমাবেশে এসব কথা বলা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের আয়োজনে আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে এই প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। স্লোগান ছিল, খেলাঘর চায় না ‘শিশুদের কান্না’। ছবি এঁকে এবং স্লোগান দিয়ে খেলাঘর আসরের সদস্য শিশুরা অংশ নেয় সমাবেশে। শিশুরা তাদের বক্তব্যে বলে, নিরাপদে স্কুল যেতে চাই, নিরাপদে খেলার মাঠে যেতে চাই।
প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবু সাঈদ। তিনি বলেন, ‘শিশুদের সঙ্গে নিয়ে আজ আমরা পথে দাঁড়িয়েছি। অথচ এই শিশুরা এখনো অনেকে জানেই না এসব ভয়াবহ ঘটনার সত্যিকার অর্থ। খেলাঘর দীর্ঘদিন ধরে শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করছে। দেশজুড়ে যেসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা শুরু হয়েছে, আমরা এর প্রতিকার চাই।’
শিশুদের মুখে হাসি ফোটানোর প্রত্যয় নিয়ে ১৯৫২ সালে খেলাঘর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বলে উল্লেখ করেন সংগঠনের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রথীন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘আপনারা সবই জানেন কী চলছে এখন। শিশু থেকে মাঝবয়সী নারীরা ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতির ফলাফল এসব ঘটনা। আমরা এর নিন্দা জানাই এবং প্রতিকার চাই।’
সভা সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল কবীর। তিনি বলেন, ত্বকী থেকে শুরু করে তিশা হত্যার ঘটনা দেশের বিচারহীনতার সংস্কৃতিরই ফল।
শিশুদের ভবিষ্যৎ রক্ষায় প্রত্যেকের জায়গা থেকে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান বক্তারা। তাঁদের বক্তব্যে উঠে আসে প্রযুক্তির প্রতি আসক্তিতে শিশুদের বইয়ের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হওয়ার কথা। শিশুর প্রতি অন্যায়ে রাষ্ট্রের ছাড় দেওয়ার অভিযোগ। শিশুদের ভবিষ্যৎ রক্ষায় এসব দিকে গুরুত্ব দেওয়ার দাবি জানান বক্তারা। সমাবেশে কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের সদস্যরাও ছাড়াও অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ। তাঁরা শিশু ও নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান এবং ন্যায়বিচারের দাবিতে একযোগে কাজ করার কথা ব্যক্ত করেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
ইসির ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠন করার নির্দেশ
বিতর্কিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার ও সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে এ-সংক্রান্ত আলোচনা শেষে এমন নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ।
এই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, সফররাজ হোসেন ও মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে যে অতীতের তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনে কর্মকর্তাদের ভূমিকা তদন্ত করা এবং তাঁদের জবাবদিহির আওতায় আনা প্রয়োজন।
জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই সনদবৈঠকে কমিশন সদস্যরা জুলাই সনদ তৈরির কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, বেশ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। শিগগিরই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সনদ চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘সবাই জুলাই সনদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আশা করি, আগামী জুলাই মাসের মধ্যে আমরা এটি জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারব।’
‘প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে’বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর লন্ডন সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটির যাঁদের সঙ্গেই দেখা হয়েছে, তাঁরা সংস্কার নিয়ে জানতে চেয়েছেন। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা খুব আগ্রহী। তাঁরা বিস্তারিতভাবে ঐকমত্য কমিশনের কাজ নিয়ে তাঁর (প্রধান উপদেষ্টা) সঙ্গে আলোচনা করেছেন, মতামত দিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যেখানেই গিয়েছি, সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, “আমরা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারব তো?” আমাদের প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। পোস্টাল ব্যালট এবং আর কী কী অপশন আছে, সেগুলো নিয়ে ভাবতে হবে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।’