পঞ্চগড়ে শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার
Published: 13th, March 2025 GMT
পঞ্চগড়ে তিন বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে শরিফুল ইসলাম (৩০) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার বিকেলে পঞ্চগড় পৌরসভার একটি মহল্লা থেকে তাঁকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন স্থানীয় লোকজন।
গতকাল রাতে ভুক্তভোগী শিশুটির পরিবার পঞ্চগড় সদর থানায় শরিফুলের বিরুদ্ধে মামলা করে। শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শরিফুল ইসলাম পেশায় একজন অটোরিকশাচালক। প্রায় পাঁচ বছর আগে স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদ হয়। তখন থেকেই তিনি একা থাকেন।
মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকেলে শিশুটি বাড়ির বাইরের উঠোনে খেলছিল। তার মা বাড়িতে গৃহস্থালির কাজ করছিলেন। প্রতিবেশী শরিফুল কৌশলে শিশুটিকে তাঁর ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করেন। শিশুটির কান্নার আওয়াজ শুনে তার মা শরিফুলের ঘরের কাছে যান। এ সময় শরিফুল ঘর থেকে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। আশপাশের লোকজন ও পরিবারের সদস্যরা শরিফুলকে ধরতে গেলে তিনি ইট ছোড়েন। এতে শিশুটির বাবা আহত হন। একপর্যায়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতে ধরা পড়েন শরিফুল।
শিশুটির বাবা বলেন, ‘শরিফুলের সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নাই। আমার এত ছোট মেয়েটার সঙ্গে সে কেন এমন ঘটনা ঘটাল, কিছুই বুঝতে পারছি না। আমি প্রতিবাদ করে ধরতে গেলে শরিফুল ইট দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করে। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।’
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের চিকিৎসক আবদুল কাদির বলেন, শিশুটি মানসিকভাবে বড় ধরনের আঘাত পেয়েছে। ধর্ষণের বিষয়ে আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে এবং প্রাথমিকভাবে কিছুটা পজিটিভ ফলাফল পাওয়া গেছে। তবে মেডিকেল বোর্ডের মাধ্যমে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। বর্তমানে শিশুটির চিকিৎসা চলছে।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম মাসুদ পারভেজ বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার তাঁকে আদালতে হাজির করা হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঘাড়ব্যথার কারণগুলো কী কী, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা জেনে রাখুন
অনেক কারণে ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য—
১. সারভাইক্যাল স্পন্ডেলোসিস
২. সারভাইক্যাল স্পন্ডেলোসিস
৩. সারভাইক্যাল রিবস
৪. সারভাইক্যাল ক্যানেল স্টেনোসিস বা স্পাইনাল ক্যানাল সরু হওয়া
৫. সারভাইক্যাল ডিস্ক প্রলেপস বা হারনিয়েশন যেখানে হারনিয়াটেড ডিস্ক নার্ভের ওপর চাপ প্রয়োগ করে
৬. মাংসপেশি, হাড়, জোড়া, লিগামেন্ট, ডিস্ক (দুই কশেরুকার মাঝখানে থাকে) ও স্নায়ুর রোগ বা ইনজুরি
৭. অস্বাভাবিক পজিশনে নিদ্রা
৮. উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদ্রোগ
৯. হাড় ও তরুণাস্থির প্রদাহ এবং ক্ষয়
১০. অস্টিওপরোসিস বা হাড়ের ক্ষয় ও ভঙ্গুরতা রোগ
১১. হাড় নরম ও বাঁকা হওয়া
১২. রিউমাটয়েড-আর্থ্রাইটিস ও সেরো নেগেটিভ আর্থ্রাইটিস
১৩. সারভাইক্যাল অস্টিও-আর্থ্রাইটিস
১৪. ফাইব্রোমায়ালজিয়া
১৫. সামনে ঝুঁকে বা পাশে কাত হয়ে ভারী কিছু তুলতে চেষ্টা করা
১৬. হাড়ের ইনফেকশন
১৭. ডিস্কাইটিস (ডিস্কের প্রদাহ)
১৮. পেশাগত কারণে দীর্ঘক্ষণ ঘাড় নিচু বা উঁচু করে রাখলে ইত্যাদি।
উপসর্গ
ঘাড়ব্যথা কাঁধ, বাহু, হাত ও আঙুল পর্যন্ত ছড়াতে পারে।
কাঁধ, বাহু, হাত ও আঙুলে অস্বাভাবিক অনুভূতি বা অবশ ভাব।
বাহু, হাত ও আঙুল দুর্বল হতে পারে।
সব সময় ঘাড় ধরে বা জমে আছে মনে হয়।
ঘাড়ের মুভমেন্ট করলে, ঘাড় নিচু করে ভারী কিছু তোলার পর তীব্র ব্যথা।
হাঁচি, কাশি দিলে বা সামনে ঝুঁকলে ব্যথা বেড়ে যায়।
ব্যথা মাথার পেছন থেকে শুরু হয়ে মাথার সামনে আসতে পারে।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা
ঘাড়ব্যথার কারণ নির্ণয় করার জন্য প্রয়োজনীয় ল্যাবরেটরি পরীক্ষা হতে পারে—রক্তের বিভিন্ন পরীক্ষা, ঘাড়ের এক্স-রে, এমআরআই বা সিটি স্ক্যান।
চিকিৎসা
চিকিৎসা এর কারণগুলোর ওপর নির্ভর করে।
কনজারভেটিভ চিকিৎসা: ১. ব্যথা বা প্রদাহনাশক ওষুধ ২.ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা। বিভিন্ন ধরনের ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা যেমন ম্যানুয়াল বা ম্যানুপুলেশন থেরাপি, থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রোমেডিকেল ইকুইপমেন্ট যেমন ইন্টারফ্যারেনশিয়াল থেরাপি, অতি লোহিত রশ্মি, মাইক্রোওয়েভ ডায়াথারমি, আল্ট্রাসাউন্ড থেরাপি, শর্টওয়েভ ডায়াথার্মি ও ইন্টারমিটেন্ট ট্র্যাকশন ইত্যাদির মাধ্যমে চিকিৎসা করা যায়।
সার্জিক্যাল চিকিৎসা: মেডিকেল চিকিৎসায় ভালো না হলে, ব্যথা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকলে, স্নায়ু সমস্যা দেখা দিলে, বাহু, হাত ও আঙুলে দুর্বলতা এবং অবশ ভাব দেখা দিলে এবং প্রস্রাব বা পায়খানার নিয়ন্ত্রণ না থাকলে দ্রুত সার্জিক্যাল চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।
ঘাড়ব্যথা প্রতিরোধে করণীয়
১. সামনের দিকে ঝুঁকে দীর্ঘক্ষণ কাজ করবেন না।
২. মাথার ওপর কোনো ওজন নেবেন না।
৩. প্রয়োজনীয় বিশ্রাম নিতে হবে।
৪. শক্ত বিছানায় ঘুমাবেন।
৫. শোবার সময় একটা মধ্যম সাইজের বালিশ ব্যবহার করবেন, যার অর্ধেকটুকু মাথা ও অর্ধেকটুকু ঘাড়ের নিচে দেবেন।
৬. তীব্র ব্যথা কমে গেলেও ঘাড় নিচু বা উঁচু করা, মোচড়ানো (টুইসটিং) বন্ধ করা।
৭. সেলুনে কখনোই ঘাড় মটকাবেন না।
৯. কাত হয়ে শুয়ে পড়বেন না বা টেলিভিশন দেখবেন না।
১০. কম্পিউটারে কাজ করার সময় মনিটর চোখের লেভেলে রাখবেন।
১১. গরম প্যাড, গরম পানির বোতল দিয়ে গরম সেঁক দেবেন।
১২. ঘাড়ের পেশি নমনীয় ও শক্তিশালী হওয়ার ব্যায়াম করতে হবে।
এম ইয়াছিন আলী, চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ঢাকা
আরও পড়ুনকাঁধের ব্যথা বা কাঁধ জমে যাওয়ার কারণ ও করণীয়১৭ এপ্রিল ২০২৫