২৫ লাখ মুক্তিপণ দিলেও ছেলে ফেরেনি, মানববন্ধনে পরিবারের আকুতি
Published: 13th, March 2025 GMT
মুক্তিপণের ২৫ লাখ টাকা দিয়েও মিলনকে ফিরে পাননি বাবা। প্রায় ১৮ দিন অতিবাহিত হলেও ছেলেকে ফিরে না পেয়ে ভেঙে পড়েছে পরিবারটি। মিলন হোসেন (২৩) পীরগঞ্জ উপজেলার ৩নং খনগাঁও ইউনিয়নের চাপাপাড়া এলাকার বাসিন্দা পানজাব আলীর ছেলে। তিনি দিনাজপুর পলিটেকনিক কলেজের ছাত্র। অপহৃত হওয়া কলেজ পড়ুয়া সেই শিক্ষার্থীকে দ্রুত ফিরে পেতে ও অপহরণের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুরে ঠাকুরগাঁওবাসীর আয়োজনে এ মানববন্ধনে অংশ নেন মিলনের পরিবারসহ এলাকাবাসীরা। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন শেষে একটি মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে চৌরাস্তাায় এসে ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।
এ সময় অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে মিলনের মা বলেন, ‘‘আমার ছেলেকে অপহরণ করে তারা কোথায় রেখেছে জানি না, কেমন আছে জানি না। অপহরণকারীরা ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়েছিল, আমরা গরিব খেটে খাওয়া পরিবার; সবকিছু বিসর্জন দিয়ে ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়েছি। মুক্তিপণের দাবি পূরণ করার পাঁচদিন অতিবাহিত হলেও তারা আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দেয়নি।’’ দ্রুত ছেলেকে ফিরিয়ে দিতে এবং অপহরণকারীদের আটক করে কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তির দাবি করেন ভুক্তভোগী পরিবারটি।
আরো পড়ুন:
ধর্ষণ ও বিচারহীনতার প্রতিবাদে আইএসইউ শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
মাগুরায় শিশুকে ধর্ষণের প্রতিবাদে যবিপ্রবিতে মানববন্ধন
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮টায় ঠাকুরগাঁও পলিটেকনিকের পেছনে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে নিখোঁজ হন মিলন। ঘটনার দিন রাত ১টার সময় ভুক্তভোগী পরিবারকে মুঠোফোনে অপহরণের বিষয়টি জানায় অপহরণকারীরা। প্রথমে ১২ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তিপণের ৩ লাখ টাকা চায় অপহরণকারীরা। পর দিন দুপুরে ৩ লাখ টাকা দিতে রাজি হয় মিলনের পরিবার। তবে পরে চক্রটি ৫ লাখ টাকা দাবি করে। পরদিন মুক্তিপণ বেড়ে ১০ লাখ হয়। তিন দিন পর ১৫ লাখ চায় চক্রটি। সর্বশেষ ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারী চক্র।
সর্বশেষ ৯ মার্চ রাতে ঠাকুরগাঁও থেকে ঢাকাগামী ১০টার ট্রেনে উঠতে বলে অপহরণকারীরা। এরপর জেলার পীরগঞ্জের সেনুয়া এলাকায় চলন্ত ট্রেন থেকে ২৫ লাখ টাকার ব্যাগটি বাইরে ফেলে দিতে বলে চক্রটি। মিলনের জন্য দুই সেট পোশাকসহ ২৫ লাখ টাকা ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার ১০ মিনিট পর টাকা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে অপহরণকারী চক্র। এরপর দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনে অপহৃত মিলনকে পাওয়া যাবে বলে তথ্য দেয় চক্রটি। কিন্তু স্টেশনে গিয়ে পাওয়া যায়নি তাকে।
ঢাকা/হিমেল/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অপহরণক র র ২৫ ল খ ট ক পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়: নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কর্মসূচি, ছাত্রদলের সভাপতি-সম্পাদককে নোটিশ
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দলীয় ব্যানারে কর্মসূচি পালন করায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গতকাল রোববার ওই চিঠি দেওয়া হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তাঁদের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার প্রক্টর মোখলেসুর রহমান স্বাক্ষরিত নোটিশে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল শাবিপ্রবি শাখা ৮ এপ্রিল ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে একটি মানববন্ধন করে, যা প্রশংসনীয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন এবং ২১ এপ্রিল প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হত্যার প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ব্যানারে মানববন্ধন ও র্যালি করেন, যা কিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকায় একটি শৃঙ্খলাভঙ্গের অপরাধ করেছেন এবং অপরাপর ছাত্রসংগঠনগুলোর ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। তাই আপনাদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রক্টর বরাবর লিখিতভাবে কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।’
গত ১৪ মার্চ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নতুন কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। কমিটিতে সভাপতি হিসেবে সফটওয়্যার প্রকৌশল বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাহাত জামান ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের নাঈম সরকার মনোনীত হন।
গত বছরের ৬ নভেম্বর ক্যাম্পাসে দলীয় ব্যানারে রাজনৈতিক কার্যক্রমে আপাতত নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তবে এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শাখা ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে ক্যাম্পাসে দলীয় ব্যানারে কর্মসূচি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি রাহাত জামান প্রথম আলোকে বলেন, 'যে দুইটা বিষয়ে কর্মসূচি করেছি, সেগুলো জাতীয় ইস্যু। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে লুকিয়ে স্বার্থ হাসিল করতে চাইনি। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাউকে জোর করিনি। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিষেধাজ্ঞা যদি অমান্য হয়ে থাকে, আমরা তিনদিনের মধ্যে শোকজের জবাব দেব।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোখলেসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে শৃঙ্খলাভঙ্গের কাজ অপরাধ হিসেবে বিবেচিত। আইন অমান্য করে কর্মসূচির কারণে ছাত্রদলের নেতাদের শোকজ করা হয়েছে। লিখিতভাবে তাঁদের জবাব পেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।