কিউএস বিষয়ভিত্তিক র্যাঙ্কিং: প্রথমবার স্থান পেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ বিভাগ, এগিয়েছে দুই ক্যাটাগরিতে
Published: 13th, March 2025 GMT
যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা ও গবেষণা সংস্থা কোয়াককোয়ারেলি সায়মন্ডসের (কিউএস) বিষয়ভিত্তিক বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো জায়গা করে নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯টি বিভাগ। গতবছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬টি বিভাগ র্যাঙ্কিংয়ে স্থান পেয়েছিল। গতকাল বুধবার বিষয়ভিত্তিক এই র্যাঙ্কিংয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে কিউএস।
আরও পড়ুনদেশের আরও তিনটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় সরকারি হলো১১ মার্চ ২০২৫কিউএসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ক্যাটাগরিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গত বছরের তুলনায় এ বছর ১০০ ধাপ এগিয়ে বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে ৪০১ থেকে ৪৫০–এর মধ্যে অবস্থান করছে। এই ক্যাটাগরির অন্তর্ভুক্ত কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগ ৫৫১ থেকে ৬০০–এর মধ্যে, ইঞ্জিনিয়ারিং-ইলেকট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিক বিভাগ ৫০১ থেকে ৫৫০ এর মধ্যে, ইঞ্জিনিয়ারিং-মেকানিক্যাল, অ্যারোনেটিক্যাল বিভাগ ৫০১ থেকে ৫৭৫–এর মধ্যে অবস্থান করছে।
সোশ্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট ক্যাটাগরিতে গত বছরের তুলনায় ৫০ ধাপ এগিয়ে বর্তমানে সারাবিশ্বে ৪০১ থেকে ৪৫০–এর মধ্যে অবস্থান করছে। এই ক্যাটাগরির অন্তর্ভুক্ত একাউন্টিং অ্যান্ড ফিন্যান্সে বিভাগ ২৫১ থেকে ৩০০–এর মধ্যে, বিজনেস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ ৪০১ থেকে ৪৫০ এর মধ্যে, ইকোনমিক অ্যান্ড ইকোনমেট্রিকস বিভাগ ৩৫১ থেকে ৪০০–এর মধ্যে, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ ৩০১ থেকে ৩৭৫–এর মধ্যে অবস্থান করছে।
আরও পড়ুনআইইএলটিএস প্রস্তুতি, ইংরেজির স্পষ্ট উচ্চারণের জন্য প্রতিদিন করণীয়৯ ঘণ্টা আগেলাইফ সায়েন্স অ্যান্ড মেডিসিন ক্যাটাগরিতে মেডিসিন বিভাগ ৬৫১ থেকে ৭০০–এর মধ্যে অবস্থান করছে। ন্যাচারাল সায়েন্স ক্যাটাগরিতে ফিজিকস অ্যান্ড অ্যাস্ট্রানোমি বিভাগ ৫৫১ থেকে ৬০০–এর মধ্যে অবস্থান করছে। আর্টস অ্যান্ড হিউমেনিটিস ক্যাটাগরিতে ৫০১ থেকে ৫৫০–এর মধ্যে অবস্থান করছে। বিজ্ঞপ্তি
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অবস থ ন করছ ক উএস
এছাড়াও পড়ুন:
বক্সিং রিংয়ে চ্যাম্পিয়ন জিনাতই, বোনকে উৎসাহ দিতে গ্যালারিতে আফঈদা
কদিন ধরে দেশের ক্রীড়াঙ্গনের আড্ডায় ঘুরেফিরে একটাই নাম জিনাত ফেরদৌস। যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী এই বক্সার প্রথমবারের মতো পা রেখেছেন জাতীয় বক্সিং রিংয়ে। আর প্রথমবারই নিজের জাত চেনালেন।
আজ বিকেলে পল্টনের মোহাম্মদ আলী বক্সিং স্টেডিয়ামে ৫২ কেজি ওজন শ্রেণির ফাইনালে নেমে প্রতিপক্ষ আফরা খন্দকারকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নের মুকুট মাথায় তুলেছেন জিনাত। প্রতিযোগিতার আগেই যাঁর আগমন ঘিরে কৌতূহল ছিল তুঙ্গে, সেই জিনাত রিংয়ে নামতেই যেন বুঝিয়ে দিলেন, অন্যদের চেয়ে কেন তিনি এগিয়ে।
তিন রাউন্ডের লড়াইয়ে শুরু থেকেই জিনাত ছিলেন আক্রমণাত্মক। পাঞ্চে ছিল গতি, রক্ষণে ছিল আত্মবিশ্বাস। অন্যদিকে আফরা খন্দকার চেষ্টা করেছেন রক্ষণ সামলে লড়াইয়ে টিকে থাকতে। খান কয়েক মোক্ষম ঘুষিতে কিছুটা নড়বড়ে হলেও শেষ পর্যন্ত দমে যাননি আফরা।
বরং জিনাতের ঘন ঘন আক্রমণের ফাঁক গলে এক-আধটু পাল্টা আঘাত করতেও পেরেছেন। তবে এই পর্যায়ের এক প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত হয়ে পড়ে তাঁর জন্য অনেকটাই চাপের। তবু আফরা লড়ে গেছেন। আর জিনাতের আত্মবিশ্বাসী উপস্থিতি এ লড়াইকে করে তুলেছিল দেখার মতো।
গ্যালারিতে বসে খেলা দেখছিলেন জাতীয় নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক ও আফরার বড় বোন আফঈদা খন্দকার। উৎসাহ দিচ্ছিলেন ছোট বোনকে। পাশে ছিলেন মা–বাবাও। তবে পরিবারের ষোলো আনা সমর্থনও জিনাতকে হারানোর জন্য যথেষ্ঠ হয়নি।
ম্যাচ শেষে আফরা বললেন, ‘তিনি একজন ভালো খেলোয়াড়। তাঁর বিপক্ষে খেলা আমার জন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা। বিশেষ করে তাঁর আক্রমণাত্মক স্কিলটা দুর্দান্ত। ম্যাচ শেষে তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন, গুড ফাইট।’
বিজয়ী জিনাত পরে কথা বলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বললেন, ‘আমি সবাইকে বলতে চাই, বাংলাদেশের ছেলে-মেয়েরা খেলতে চায়। তারা যদি সুযোগ-সুবিধা পায়, অনেক ভালো করবে। ওদের স্কিল আছে।’
সেমিফাইনালে আছিয়া না ফাইনালে আফরা—কোন লড়াইটা বেশি কঠিন ছিল? জিনাতের জবাব, ‘আমি আমার খেলাটা খেলেছি এবং জিতেছি। দুজনই আলাদা ধাঁচের প্রতিপক্ষ।’
জিনাত বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক পদক জয়ের আকাঙ্ক্ষার কথা আজও বলেছেন। আগামী এশিয়ান গেমসে সুযোগ পেলে পদক জিতবেন কি না, প্রশ্নের ছোট্ট উত্তর, ‘ইনশা আল্লাহ।’
আফরা-জিনাত ফাইনাল ম্যাচটা যেন ছিল দুই প্রতিদ্বন্দ্বী বক্সারের লড়াই নয়, এর বাইরেও চলছিল আরেক নাটক। ফাইনালের কয়েক ঘণ্টা আগেই বক্সিং রিংয়ে এক ব্যতিক্রমী দৃশ্য। আনসারের বক্সার জাহিদুল হক রেফারির রায় নিয়ে ক্ষোভ জানাতে রিংয়ে বসে পড়েন প্রতিবাদ হিসেবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বক্সার জনি ভদ্রর ঘুষিতে কপালে চোট পান জাহিদুল। চিকিৎসাও নেন। একপর্যায়ে রিংয়ের মাঝখানে বসেই অভিনব প্রতিবাদ জানান।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ আনসার দল বাংলাদেশ বক্সিং ফেডারেশনের সভাপতির কাছে অভিযোগ করে এবং তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিযোগিতা থেকে নিজেদের প্রত্যাহারের হুমকি দেয়। একপর্যায়ে আনসারের প্রতিনিধিরা রিং ছেড়ে চলে যান। মুহূর্তেই ঘনীভূত হয়ে ওঠে অনিশ্চয়তা, আফরা-জিনাত ফাইনালটি আদৌ হবে তো? কারণ, আফরা বাংলাদেশ আনসারের প্রতিযোগী। শেষ পর্যন্ত অবশ্য আনসার ফিরে আসে এবং প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।
এ বিষয়ে বক্সিং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবদুস কুদ্দুস প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফাইটে হারলে যা হয়। হারলেই বলে অন্যায় হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত রিংয়ে ফিরে এসেছে, খেলেছে, এটা ভালো।’
ম্যাচ শুরুর ঠিক আগে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের একটি প্রতিনিধিদল গ্যালারিতে এসে জিনাতকে শুভেচ্ছা জানায়, তাঁকে উপহারও দেয় তারা। গ্যালারিতে বাড়তি উত্তেজনা আর গুরুত্ব যোগ করে ফাইনাল ম্যাচকে ঘিরে। আর দেশের সংবাদমাধ্যমের ব্যাপক উপস্থিতি তো ছিলই ম্যাচটা ঘিরে।