ছেঁউড়িয়ায় এবার ভিন্ন আবহে লালন শাহকে স্মরণ
Published: 13th, March 2025 GMT
বৃহস্পতিবার বেলা দুইটা। ফকির হৃদয় সাঁই, ফকির রাজ্জাক শাহসহ পাঁচজন ফকির আখড়াবাড়ি ঘুরে ঘুরে দেখছেন। খোঁজখবর নিচ্ছেন আগত ফকির, সাধু, বাউলদের। গোছালো শান্ত পরিবেশে তাঁরা একে একে প্রায় সব আসন ঘুরলেন। হেসে কথা বললেন। একপর্যায়ে গেলেন হান্ডিখানার (রান্নাঘর) দিকে। সেখানে থাকা সাদা কাপড় পরে দাঁড়িয়ে ছিলেন ত্যাগী সাবিনা খাতুন। ফকির রাজ্জাক বললেন, ‘ছেলেপিলেদের দেখি রেখো মা।’
জবাবে হেসে সাবিনা খাতুন বললেন, ‘ছেলেপিলে কাউরে পাচ্ছি না।’ হৃদয় সাঁই বললেন, ‘ক্ষমা অপরাধ, আর আমারে মারিস নে মা।’ সেখানে তিনজনের ভাব বিনিময়ের এই কথোপকথনের রেশ ছড়িয়ে পড়ল সবার মধ্যে। অন্যরকম এক মধুর সম্পর্কের ভাব বিনিময় হলো তাঁদের।
বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় শুরু হয়েছে অষ্টপ্রহরব্যাপী সাধুসঙ্গ। এবারের সাধুসঙ্গ একেবারেই ভিন্নভাবে হচ্ছে। নেই কোনো ভিড়, ঠেলাঠেলি। নেই কোনো জটলা। শুধু ফকির, সাধু, বাউলদের পদচারণ ছিল সেখানে। বিকেলে লালন একাডেমির আয়োজনে আলোচনার মধ্য দিয়ে স্মরণোৎসব শুরু হয়েছে। শেষ হবে শুক্রবার বিকেলে।
গান গাইছেন লালনের ভক্ত–অনুসারীরা। বৃহস্পতিবার বিকেলে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় আখড়াবাড়িতে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বলল ন
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’