তালেবানের জোড়াতালির সরকার পতনের দিকে যাচ্ছে?
Published: 14th, March 2025 GMT
২০২১ সালে ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তনের পর থেকে আফগানিস্তানের তালেবান তাদের সহিংস আন্দোলনকে একটি কার্যকর সরকারব্যবস্থায় রূপান্তর করার জন্য রীতিমতো সংগ্রাম করে চলেছে। তালেবান সরকারের মধ্যে ঐক্যের একটি বাহ্যিক প্রদর্শন দেখা যাচ্ছে। কিন্তু এর আড়ালে কট্টরপন্থী তালেবান সরকার গভীর উপদলীয় কোন্দল, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা ও জন–অসন্তোষে ডুবতে বসেছে।
বিশ্লেষক মাবিন বাইক তাঁর ‘তালেবান’স ইন্টারনাল পাওয়ার স্ট্রাগল: আ রেজিম অন দ্য ব্রিক’ শিরোনামের প্রবন্ধে দেখিয়েছেন, এই গোষ্ঠীর সবচেয়ে বড় অস্তিত্বগত হুমকি কোনো বিদেশি শক্তির হস্তক্ষেপ নয়, বরং গোষ্ঠীটির অভ্যন্তরীণ বিভক্তি।
এ বিভক্তিকে যদি সামাল দেওয়া না যায়, তাহলে সেটা বাড়তেই থাকবে এবং তালেবান সরকারের পতন ডেকে আনবে এবং আফগানিস্তানকে আরেকটি দীর্ঘস্থায়ী সংকটের মধ্যে ফেলে দেবে।
তালেবান সরকারকে এখন সবচেয়ে বড় যে ইস্যুটি সামাল দিতে হচ্ছে, সেটা হচ্ছে, বিভিন্ন উপদলগুলোর মধ্যে সংহতি ধরে রাখা। মোল্লা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার নেতৃত্বে তালেবান আন্দোলন নুরজাই গোত্রকে কেন্দ্র করে আরও বেশি কেন্দ্রীভূত হয়েছে। এ গোত্রের পছন্দ-অপছন্দের কাছে অন্য গুরুত্বপূর্ণ তালেবান নেতারা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছেন।
সংগঠনটির প্রয়াত নেতা মোল্লা ওমর নেতৃত্ব সবার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন গোষ্ঠীগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। আখুন্দজাদাকে সেই স্তরের কর্তৃত্ব অর্জনের জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে। তাঁর অনমনীয় ধরনের নেতৃত্ব তালেবানের বিভিন্ন স্তরের মধ্যে পরিচয়কেন্দ্রিক বিভাজন গভীর করছে।
মোল্লা ইয়াকুব ও মোল্লা বারাদারের মতো মূল নেতারা তালেবানের মধ্যে নিজস্ব ক্ষমতার ভিত্তি গড়ে তুলেছেন। ফলে তালেবানের মধ্যে বেশ কিছু প্রভাবকেন্দ্র গড়ে উঠেছে। নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে সংঘাত তৈরি হচ্ছে।
দোহা সংলাপের (যার মাধ্যমে যুদ্ধ শেষ হয়েছিল) সময় তালেবান আন্দোলন যে ঐক্য দেখাতে পেরেছিল, সেটা অনেকটাই শেষ হয়ে গেছে। এর পরিবর্তে তালেবানের উচ্চপর্যায়ের নেতৃত্বের মধ্যে ক্ষমতার ব্যাপক দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে।
একই সঙ্গে ঘরের এবং বাইরে নির্বাসিত বিরোধী গোষ্ঠীগুলো তালেবানের বিরুদ্ধে জমে ওঠা পাহাড়সম অসন্তোষের মধ্যে নিজেদের ভিত্তি গাড়ার জন্য উর্বর ভূমি খুঁজে পাচ্ছে। চরমপন্থী প্রতিদ্বন্দ্বী যেমন ইসলামিক স্টেট, তারা প্রভাব বিস্তার করছে।আফগানিস্তানের দুর্বল অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা নেতৃত্বের এ লড়াইকে তীব্র করেছে। আফগানিস্তানের অর্থনীতি আগে থেকেই ভঙ্গুর ছিল। তালেবান ক্ষমতা দখলের আগে বিদেশি সহায়তা ও প্রবাসীদের পাঠানো আয়ের ওপর দেশটি ব্যাপকভাবে নির্ভর করত।
এখন বৈধ অর্থায়নের উৎস সীমিত হয়ে গেছে। ফলে তালেবান সরকারকে হাজি বশির নুরজাইয়ের মতো প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত খনি পরিচালনার আয় এবং সাধারণ নাগরিকদের ওপর আরোপ করা ব্যাপক করের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।
ফলে আফগান এলিটদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ক্ষেত্রে বিশাল একটা ব্যবধান তৈরি হয়েছে। জানুয়ারি মাসে স্থানীয় আফগান মুদ্রার মান অবনমনের কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। আবার ইউএসএআইডির সহযোগিতা বন্ধের কারণে খাদ্যসহ নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে।
পুঁজি পাচার নিয়ন্ত্রণে জানুয়ারি মাসে তালেবান সরকার অদক্ষ একটা পদক্ষেপ নেয়। বিমানবন্দর দিয়ে ৫ হাজার ডলার এবং স্থলবন্দর দিয়ে ৫০০ ডলারের বেশি স্থানান্তর করার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
ফেব্রুয়ারি মাসে বিতর্কিত স্থাপনা নির্মাণ বিতর্কে পাকিস্তানের সঙ্গে তোর্কহাম সীমান্ত বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে খাদ্যসহ অন্যান্য পণ্য সরবরাহে বাধা তৈরি হয়। প্রায় পাঁচ হাজার ট্রাক সীমান্তে আটকে যায়।
একই সঙ্গে তালেবানের কট্টর নীতি, বিশেষ করে নারী অধিকারের ওপর বিধিনিষেধ বিদেশি বিনিয়োগের সম্ভাবনাকে স্তিমিত করে দিয়েছে। পশ্চিমা ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক দাতারা সেই ধরনের সরকারের সঙ্গে কাজ করতে শঙ্কিত থাকে, যারা তাদের অবস্থানের ক্ষেত্রে অনড়। ফলে ইতিমধ্যেই ধুঁকতে থাকা অর্থনীতিকে আরও চাপের মধ্যে ফেলে দেয়।
তালেবান সরকারের অস্থিতিশীলতার আরেকটি বড় কারণ হলো, কঠোর সামাজিক ও রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ শিথিল করতে তারা একেবারেই রাজি নয়। আন্তর্জাতিক সংস্থা ও প্রতিবেশী দেশগুলোর অব্যাহত আহ্বানের পরও তালেবান নাগরিক স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও নারীদের শিক্ষার ওপর বিধিনিষেধ কঠোর করেছে।
এই পদক্ষেপগুলো বিশ্ব সম্প্রদায় থেকে আফগানিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে। এটি কূটনৈতিক স্বীকৃতি কিংবা বাইরে থেকে বড় অঙ্কের আর্থিক সমর্থন পাওয়া অসম্ভব করে তুলেছে।
তালেবানের অতিরিক্ত দমনমূলক নীতির কারণে সৌদি আরব ও অন্য উপসাগরীয় দেশগুলো আফগানিস্তানের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে কম আগ্রহ দেখাচ্ছে।
এমনকি যেসব দেশ ঐতিহাসিকভাবে তালেবানের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল, সেসব দেশও এখন ন্যূনতম সহযোগিতার বাইরে বাড়তি কিছু দিতে দ্বিধাগ্রস্ত। কেননা, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কি প্রতিক্রিয়া দেয়, সে জন্য তারা উদ্বিগ্ন।
ওয়াশিংটনে ক্ষমতার পালাবদলের পর ইউএসএআইডির অর্থায়ন বন্ধ করার বিষয়টি নতুন উদ্বেগ তৈরি করেছে। রিপাবলিকান সিনেটর টিম শেডি ‘কোনো করদাতা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন করতে পারে না’ শীর্ষক যে বিলটি এনেছেন, তার অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে মার্কিন ফেডারেল সহযোগিতা যাতে আফগানিস্তানে না পৌঁছায়।
মার্কিন আইনপ্রণেতারা আশঙ্কা করছেন, মার্কিন করদাতাদের অর্থ চরমপন্থী উপাদানগুলোতে কার্যকরভাবে বা কার্যত সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে ইন্ধন জোগাতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্টনি ব্লিঙ্কেন স্বীকার করেছেন, কিছু ক্ষেত্রে আমেরিকার আধুনিক অস্ত্র তালেবানের কাছে গেছে। এসব ঘটনায় ট্রাম্প প্রশাসন আফগানিস্তানের ক্ষেত্রে আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া পুরোপুরি বন্ধ করার মতো সিদ্বান্ত নিতে পারে।
একই সঙ্গে ঘরের এবং বাইরে নির্বাসিত বিরোধী গোষ্ঠীগুলো তালেবানের বিরুদ্ধে জমে ওঠা পাহাড়সম অসন্তোষের মধ্যে নিজেদের ভিত্তি গাড়ার জন্য উর্বর ভূমি খুঁজে পাচ্ছে। চরমপন্থী প্রতিদ্বন্দ্বী যেমন ইসলামিক স্টেট, তারা প্রভাব বিস্তার করছে।
প্রতিবেশীরা আফগানিস্তানের এই পরিস্থিতির প্রভাব কী হবে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। গোপনে তারা বিকল্প শক্তিগুলোকে সমর্থন দিতে পারে।
মোহাম্মদ বুরহান, পাকিস্তানের কায়েদে আজম বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ অ্যানালিস্ট
এশিয়া টাইমস থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে সংক্ষিপ্তাকারে অনূদিত
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত ল ব ন সরক র আফগ ন স ত ন র সরক র র সহয গ ত র জন য ক ষমত র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
নাইজেরিয়ায় কেন হামলা চালানোর হুমকি দিলেন ট্রাম্প
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়া যদি সেখানে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের লোকজনকে হত্যা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়, তবে দেশটির বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণের হুমকি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এ প্রসঙ্গে গতকাল শনিবার ট্রাম্প বলেন, তিনি তাঁর প্রতিরক্ষা বিভাগকে দ্রুত সামরিক পদক্ষেপের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
আফ্রিকার সবচেয়ে জনবহুল ও প্রধান তেল উত্তোলনকারী দেশ নাইজেরিয়া। ট্রাম্প তাঁর মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে নাইজেরিয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের সহায়তাও অবিলম্বে বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলেন।
ট্রাম্প লেখেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র সামরিক বাহিনী পাঠায়, তবে তারা পূর্ণ সামরিক শক্তি নিয়ে অভিযান চালাবে এবং যারা এ নৃশংস ঘটনা ঘটাচ্ছে, সেই “ইসলামপন্থী” সশস্ত্র দলকে সম্পূর্ণরূপে মুছে ফেলবে।
তবে নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের সঙ্গে কোন ধরনের নৃশংস আচরণ করা হচ্ছে, সে বিষয়ে ট্রাম্প নির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ বা বিবরণ দেননি। নাইজেরিয়াকে তিনি ‘নিন্দিত রাষ্ট্র’ বলে বর্ণনা করেন এবং দেশটির সরকারকে হুঁশিয়ার করে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলেন।
নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা সহিংস চরমপন্থার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে এবং আশা করছে, এ লড়াইয়ে ওয়াশিংটন তাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে থাকবে।ট্রাম্প লেখেন, ‘যদি আমরা আক্রমণ করি, তা হবে দ্রুত ও ভয়ানক; ঠিক যেমন অস্ত্রধারীরা আমাদের প্রিয় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের লোকজনের ওপর আক্রমণ করছে।’
ট্রাম্পের সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণের হুমকির বিষয়ে আবুজা থেকে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। সামরিক পদক্ষেপের সম্ভাব্য সময়সূচি নিয়ে হোয়াইট হাউসও কিছু জানায়নি।
যদি আমরা আক্রমণ করি, তা হবে দ্রুত, ভয়ানক; ঠিক যেমন অস্ত্রধারীরা আমাদের প্রিয় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ করছে।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্টট্রাম্পের এ হুঁশিয়ারি দেওয়া বিষয়ে মন্তব্য করার জন্য বার্তা সংস্থা রয়টার্স থেকে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তারা এ বিষয়ে হোয়াইট হাউসের সঙ্গে কথা বলতে বলেছে।
তবে রয়টার্সের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা না বললেও মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে লেখেন, ‘মার্কিন ওয়ার ডিপার্টমেন্ট (পেন্টাগন) সামরিক পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে। হয় নাইজেরিয়া সরকার খ্রিষ্টানদের রক্ষা করবে, না হয় আমরা ওই সব অস্ত্রধারীকে হত্যা করব, যারা ভয়াবহ নির্যাতন চলাচ্ছে।’
ট্রাম্পের ওই পোস্টের এক দিন আগে তাঁর প্রশাসন নাইজেরিয়াকে আবারও ‘কান্ট্রিজ অব পার্টিকুলার কনসার্ন’ (বিশেষ উদ্বেগের দেশ)–এর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র এ তালিকায় এমন দেশগুলোকে রাখে, যেখানে ধর্ম পালনের স্বাধীনতা নেই বলে তারা মনে করে। তালিকায় অন্য দেশগুলোর মধ্যে আছে চীন, মিয়ানমার, উত্তর কোরিয়া, রাশিয়া ও পাকিস্তান।
আরও পড়ুননাইজেরিয়ায় সম্প্রদায়গত দ্বন্দ্ব নিরসনে গিয়ে ১৬ সেনা নিহত ১৭ মার্চ ২০২৪সামরিক পদক্ষেপের হুমকি দিয়ে ট্রাম্পের ওই পোস্টের আগে গতকাল শনিবার ভোরে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ তিনুবু তাঁর দেশে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা–সংক্রান্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি ধর্ম পালনের স্বাধীনতার সুরক্ষায় তাঁর দেশের প্রচেষ্টার পক্ষেও কথা বলেন।
তিনুবু বলেন, ‘নাইজেরিয়াকে ধর্মীয়ভাবে অসহিষ্ণু দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা আমাদের জাতীয় বাস্তবতার সঙ্গে মেলে না এবং এটি সরকারের সব নাইজেরীয়র ধর্ম পালনের স্বাধীনতা রক্ষা করার ধারাবাহিক ও আন্তরিক প্রচেষ্টাকেও বিবেচনায় আনে না।’
গত বছর নাইজার থেকে প্রায় এক হাজার সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ায় পশ্চিম আফ্রিকায় মার্কিন সামরিক উপস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও এ নিয়ে আলাদা বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। বিবৃতিতে জোর দিয়ে বলা হয়, তারা সহিংস চরমপন্থার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে এবং আশা করছে, এ লড়াইয়ে ওয়াশিংটন তাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে থাকবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা জাতি, ধর্ম–বর্ণনির্বিশেষে সব নাগরিককে রক্ষা করব। যুক্তরাষ্ট্রের মতো নাইজেরিয়াতেও (নানা ধর্মের মানুষের) বৈচিত্র্য উদ্যাপন করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। কারণ, এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি।’
গত বছর নাইজার থেকে প্রায় এক হাজার সেনা প্রত্যাহার করে নেয় যুক্তরাষ্ট্র। ফলে পশ্চিম আফ্রিকায় মার্কিন সামরিক উপস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র মাঝেমধ্যে প্রশিক্ষণ ও মহড়ায় অংশ নিতে আফ্রিকায় ছোট ছোট সেনা দল পাঠায়। বর্তমানে আফ্রিকা মহাদেশে সবচেয়ে বড় মার্কিন ঘাঁটি পূর্ব আফ্রিকার দেশ জিবুতিতে। সেখানে পাঁচ হাজারের বেশি মার্কিন সেনা অবস্থান করছেন। ওই অঞ্চলে সামরিক অভিযান চালাতে এ সামরিক ঘাঁটি ব্যবহার করা হয়।
আরও পড়ুননাইজেরিয়ায় বন্দুকধারীদের হামলায় নিহত ৬০৭ মে ২০২৫নাইজেরিয়াকে ‘উদ্বেগের তালিকা’য় অন্তর্ভুক্ত করাট্রাম্প তাঁর প্রথম মেয়াদে নাইজেরিয়াকে ‘উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। পরে জো বাইডেন ক্ষমতায় এসে ২০২১ সালে নাইজেরিয়াকে মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগের এ তালিকা থেকে সরিয়ে নেন।
তবে মানবাধিকার বিশেষজ্ঞদের মতে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে মুসলমানরাই বোকো হারামের নৃশংসতার শিকার হন।নাইজেরিয়ায় প্রায় ২০০ জাতিগত গোষ্ঠীর মানুষ বসবাস করেন। তাঁরা ইসলাম, খ্রিষ্টান ও স্থানীয় প্রথাগত ধর্ম পালন করেন। দেশটিতে সব ধর্মের মানুষের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। তবে কখনো কখনো বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে সহিংসতা বেড়ে যায়।
চরমপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী বোকো হারাম উত্তর-পূর্ব নাইজেরিয়াতে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। গত ১৫ বছরে এ বিদ্রোহী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বহু মানুষকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে।
তবে মানবাধিকার বিশেষজ্ঞদের মতে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে মুসলমানরাই বোকো হারামের নৃশংসতার শিকার হন।
আরও পড়ুননাইজেরিয়ায় পশুপালক ও কৃষকদের সংঘর্ষে নিহত ৮৫১৮ মে ২০২৩