মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে পাত্তাই পায়নি লিজেন্ডস অব রুপগঞ্জ। এবারের ঢাকা লিগে দুটি ক্লাবই শক্তিশালী দল গড়েছিল। কিন্তু লড়াইয়ের ছিটেফোঁটাও ছিল না। তামিম ইকবালের দলের সামনে এক প্রকার অসহায় আত্মসমর্পণ করে আকবর আলীর দল।

মিরপুর শের-ই-বাংলায় শনিবার (১৫ মার্চ, ২০২৫) মুখোমুখি হয় মোহামেডান-রূপগঞ্জ। টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ৯ উইকেটে ২৫৩ রান করে মোহামেডান। টার্গেটে খেলতে নেমে ১৫৯ রানে অলআউট হয় রূপগঞ্জ।

৯৪ রানে জয় পেয়েছে ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান। পঞ্চম ম্যাচে এটি তাদের চতুর্থ জয়। অন্যদিকে সমান ম্যাচে রূপগঞ্জের এটি দ্বিতীয় হার।

আরো পড়ুন:

মুশফিকুরের বিদায়ে আবেগের বিচ্ছুরণ, গর্বের ঝরনাধারা

মুশফিকুরের থেকে তামিমের চাওয়া ‘অন্তত ১০০ টেস্ট’

তাড়া করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় রূপগঞ্জ। ১৯ রানে দলটি প্রথম উইকেট হারায়। ৫১ রান না হতেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে। শুরুর পাঁচ ব্যাটারের মধ্যে আফিফ হোসেন ধ্রুব সর্বোচ্চ ১৪ রান করেন।

এরপর জাকের আলী অনিক এগোতে থাকেন শেখ মেহেদী হাসানকে নিয়ে। দুজনে এগোতে থাকেন প্রতিরোধ গড়ে। জুটির ফিফটির পর অবশেষে ছন্দপতন ঘটে। ৪৬ বলে ২৫ রান করে জাকের ফিরলে ভাঙে ৫৮ রানের জুটি।

অন্য প্রান্তে থাকা মেহেদী লড়াই শুরু করেন তানজীম হাসান সাকিবকে নিয়ে। কিন্তু বেশিদূর এগোতে পারলেন না। সর্বোচ্চ ৪৩ রান আসে তার ব্যাট থেকে। তাসকিন বোল্ড করে সাজঘরে পাঠান মেহেদীকে। তানজীম থামেন ১১ রানে। মিরাজ সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন। তাসকিন নেন ২ উইকেট।

এর আগে ব্যাটিং করতে নেমে ২৫৪ রানের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে মোহামেডান। দারুণ শুরু হলেও আগের দুই ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান তামিম ইকবাল এবার ২৮ রানের বেশি করতে পারেননি। জুটি ভাঙে ৪৮ রানে।
রনি তালুকদারের সঙ্গী হন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। রনি ৩৬ রানে ফেরায় দুজনের জুটি লম্বা হয়নি। নতুন ব্যাটার তাওহীদ হৃদয় অঙ্কনের সঙ্গী হন। দুজনে এগোতে থাকেন সাবলীলভাবে। সচল রাখেন রানের চাকা। হঠাৎ অঙ্কনের ছন্দপতন ঘটে।

ফিফটির কাছে গিয়ে ফেরেন অঙ্কন। ৪২ রান আসে তার ব্যাট থেকে। অঙ্কন ফিফটির দেখা না পেলেও হৃদয় সর্বোচ্চ ৬৬ রান করেন। ৭৬ বলে ৩টি চার ও ২টি ছয়ে ইনিংসটি সাজান হৃদয়।

এরপর আর কোনো ব্যাটার সুবিধা করতে পারেননি। মেহেদী হাসান মিরাজ ২৫ রান করেন। মুশফিকুর রহিম ১ রান করেন মাত্র। শেষে মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন অপরাজিত থাকেন ১৯ রানে।

রূপগঞ্জের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন পেসার শরিফুল ইসলাম। ১০ ওভারে ৫৪ রান দিয়ে উইকেটগুলো নেন তিনি। এ ছাড়া তানজীম হাসান সাকিব নেন ২ উইকেট। ১টি করে উইকেট নেন শেখ মেহেদী হাসান, চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ান ও সৌম্য সরকার।

ঢাকা/রিয়াদ/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত ম ম ইকব ল র ন কর ন র পগঞ জ উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

কোরবানির গরু কেনার আড়াই লাখ টাকা ছিনিয়ে নিতে ব্যবসায়ী জাকিরকে হত্যা করা হয়

রাজধানীর সবুজবাগের প্লাস্টিক ব্যবসায়ী জাকির হোসেনের সঙ্গে থাকা আড়াই লাখ টাকা ছিনিয়ে নিতেই ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তাঁকে ছয় টুকরা করে লাশ বস্তায় ঢুকিয়ে কাছের একটি ঝোপের ভেতরে পুঁতে রাখা হয়। এর আগে আজহারুল ইসলাম (গ্রেপ্তার) মুঠোফোনে সবুজবাগের ভাইগদিয়ায় তাঁর ভাড়া বাসায় জাকিরকে (৫৫) ডেকে নেন।

গ্রেপ্তার আজহারুল ইসলাম (৩৯) আজ শুক্রবার আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ কথা বলেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। আদালত তাঁর জবানবন্দি নিয়ে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এ ছাড়া এ হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার শুক্কুর আলী (৪৪), মো. রাজীব (২৬) ও স্বপনকে (২৫) পাঁচ দিন করে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। গ্রেপ্তার শুক্কুর আলী পেশায় রাজমিস্ত্রি এবং বাকিরা রংমিস্ত্রি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সবুজবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সামছুল আমিন আজ প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার আজহারুল, শুক্কুর আলী, রাজীব ও স্বপন জবানবন্দি দিতে রাজি হওয়ায় দুপুরে তাঁদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে পাঠানো হয়। এর মধ্যে আজহারুল আদালত জবানবন্দি দেন। অপর তিনজন জবানবন্দি দিতে রাজি হননি। পরে তাঁদের সাত দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়। শুনানি শেষে আদালত তাঁদের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মামলার তদন্ত–সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আজহারুল আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেন, জাকির হোসেনের সঙ্গে তাঁদের চারজনের (আজহারুল, শুক্কুর আলী, রাজীব ও স্বপন) বন্ধুত্ব ছিল। তাঁরা একসঙ্গে আড্ডা দিতেন। মাঝেমধ্যে জাকিরের সঙ্গে তাঁর ভাইগদিয়ার ভাড়া বাসায় তাঁরা একসঙ্গে মদ্যপান করতেন। ৪ জুন রাতে জাকির নন্দীপাড়ায় শেখের বাজারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে বাসায় ফিরছিলেন। তখন আজহারুল মুঠোফোনে জাকিরকে তাঁর বাসায় ডেকে নেন। ওই বাসায় আজহার একা থাকতেন। আগেই জাকির তাঁদের জানিয়েছিলেন, তাঁর কাছে কোরবানির গরু কেনার আড়াই লাখ টাকা আছে এবং ডেমরার আমুলিয়া পশুরহাট থেকে কোরবানির জন্য গরু কিনবেন। জাকির তাঁর বাসায় পৌঁছানোর পর ওই টাকার ওপর তাঁদের সবার লোভ জাগে। তাঁরা টাকা ছিনিয়ে নিতে গেলে জাকির বাধা দেন। তখন ইস্পাতের পাইপ দিয়ে জাকিরের মাথায় সজোরে আঘাত করেন আজহারুল। এতে জাকির অচেতন হয়ে যান। এ সময় তাঁর কাছ থেকে এক হাজার টাকার দুটি বান্ডিল ছিনিয়ে নিয়ে সেই টাকা শুক্কুর আলীর কাছে জমা রাখেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, আজহারুল আদালতকে জানান, জাকিরকে বাঁচিয়ে রাখা হলে তাঁরা সবাই ফেঁসে যাবেন—এমন আশঙ্কায় জাকিরকে হত্যা করে লাশ গুম করার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জাকিরের শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। এরপর শুক্কুর, রাজীব ও স্বপন তাঁর শরীর টুকরা টুকরা করেন। পরে লাশের ছয়টি টুকরা রঙের দুটি পাত্রে ভরে একটি অটোরিকশায় করে দক্ষিণ ভাইগদিয়ায় নিয়ে যান। শুক্কুর, রাজীব ও স্বপন অন্য পথ দিয়ে দক্ষিণ ভাইগদিয়ায় আসেন। তখন তাঁরা সবাই মিলে বালতিভর্তি লাশের টুকরাগুলো পাশের ঝোপে নিয়ে যান। এরপর সেখানে খুঁড়ে লাশের টুকরাগুলো পুঁতে রাখেন।

আজহারুল আদালতকে বলেন, জাকিরের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া টাকা ভাগাভাগি করার আগেই তাঁরা পুলিশের হাতে ধরা পড়েন।

পুলিশ কর্মকর্তা সামছুল আমিন বলেন, আজহারুলের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাহেরচরে। বাকি তিনজন ঢাকার সবুজবাগের ভাইগদিয়ার স্থায়ী বাসিন্দা।

প্লাস্টিক ব্যবসায়ী জাকির হোসেন সপরিবার সবুজবাগ থানার ভাইগদিয়া এলাকায় থাকতেন। ৪ জুন জাকির হোসেন নিখোঁজ হন। এরপর স্বজনেরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও তাঁর সন্ধান পাননি। পরদিন জাকির নিখোঁজ রয়েছেন বলে তাঁর স্ত্রী রেখা বেগম সবুজবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এর মধ্যে জাকিরের খোঁজ না পাওয়ায় তিনি ১০ জুন আজহার আলীসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে সবুজবাগ থানায় একটি অপহরণের মামলা করেন।

পুলিশ কর্মকর্তা সামছুল আমিন বলেন, এ মামলার তদন্ত করতে গিয়ে এলাকার ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকাণ্ডে জড়িত আজহারুলকে শনাক্ত করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে আজহারের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যায় জড়িত অভিযোগে গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে অপর তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল রাতে জাকির হোসেনকে ভাইগদিয়ায় দাফন করা হয়।

সবুজবাগ থানার ওসি ইয়াছিন আলী প্রথম আলোকে বলেন, জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে জাকিরকে হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করলেও তদন্তে এখন পর্যন্ত এর সত্যতা পাওয়া যায়নি। জাকির হত্যায় আরও একজন জড়িত। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অ্যান্টার্কটিকায় বিরল স্কুইডের সন্ধান
  • ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরে ইসরায়েলের হামলা
  • পানিতে ভাসছিল ২২ দিনের শিশুর মৃতদেহ, ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন মা
  • বাঁধন কাঁদলেন, কিন্তু কেন...
  • মামাত বোনকে ধর্ষণ-হত্যা করে নিখোঁজের গল্প সাজায় নয়ন: পুলিশ
  • আমাদের যত ঘুঘু 
  • বাউন্ডারি সীমানায় ক্যাচের নিয়ম পাল্টাচ্ছে এমসিসি
  • কমিটি নেই, সবাই নেতা
  • আড়াইহাজারে নছিমন চাপায় মাছ ব্যবসায়ী নিহত
  • কোরবানির গরু কেনার আড়াই লাখ টাকা ছিনিয়ে নিতে ব্যবসায়ী জাকিরকে হত্যা করা হয়