আসামিকে ছিনিয়ে নিতে গিয়ে থানায় বিএনপির দুপক্ষে হাতাহাতি, ভিডিও ভাইরাল
Published: 16th, March 2025 GMT
রাজশাহীতে আসামিকে পুলিশের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিতে গিয়ে থানার ভেতরে বিএনপির দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। হাতাহাতির একটি ভিডিও আজ রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। শনিবার দুপুরে রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানায় এ ঘটনা ঘটে।
গ্রেপ্তার হওয়া আসামির নাম আবুল কালাম (৫৫)। তিনি আগে বিএনপি করতেন। তবে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তিনি বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তিনি রাজশাহী ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতি ও ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের রাজশাহী জেলার সভাপতি।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা একটি মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি তিনি। তবে মামলার বাদী উষামা বিন ইকবাল গত ১৭ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীর নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে এফিডেফিট করেছেন যে, মামলায় আবুল কালামের নামটি এসেছে ভুল করে। কালামের বিরুদ্ধে তার কোনো অভিযোগ নেই। এর পরও তাকে গ্রেপ্তার করে বোয়ালিয়া থানা পুলিশ। এ সময় বিএনপির কিছু নেতাকর্মী তাকে ছাড়াতে থানায় যান। অন্যপক্ষের নেতাকর্মীরা থানায় যান যাতে তাকে ছাড়া না হয়। ওই সময় পুলিশ তাকে আদালতে নেওয়ার জন্য থানা থেকে বের করছিল। তখনই কৃষক দলের রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আলামিন সরকার টিটুকে লাথি মারেন আসামি আবুল কালাম। এ সময় দু’গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
শাহমখদুম থানা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান গিয়েছিলেন আবুল কালামকে ছাড়িয়ে আনতে। তিনি বলেন, ‘আবুল কালাম আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষী হওয়ায় আমরা তার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। তিনি একজন সম্মানিত ব্যক্তি, বিএনপির রাজনীতি করতেন। এখন ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান সমিতির দখল নিতে তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।’
কৃষক দল নেতা আলামিন সরকার টিটু অভিযোগ করে বলেন, ‘আবুল কালাম ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার ওপর হামলা মামলার আসামি। তিনি আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি হওয়া সত্ত্বেও বিএনপির কিছু নামধারী নেতা থানায় গিয়ে তাকে ছাড়াতে তদবির করেন, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। প্রতিবাদ করায় ওসিসহ পুলিশের সামনেই তিনি আমাকে লাথি মারেন।’
থানায় কৃষক দল নেতাকে আসামির লাথি ও হাতাহাতির ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘আবুল কালাম ৫ আগস্টের এক মামলার আসামি। এজাহারে তাকে আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে আগে নাকি তিনি বিএনপি করতেন। পুলিশ আসামি হিসেবেই তাকে গ্রেপ্তার করেছে। এ ঘটনায় কিছু লোক তাকে দেখতে থানায় এসেছিল। হামলা বা ছাড়িয়ে নিতে আসার কোনো ঘটনা ঘটেনি।’
আবুল কালামকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে আজ দুপুরে নগরীর একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করে রাজশাহী ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতি ও ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের জেলা শাখা। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আবুল কালামের বিরুদ্ধে মামলার বাদীর কোনো অভিযোগ নেই। বাদী এটা এফিডেফিট করে দিয়েছেন। তারপরও তাকে গ্রেপ্তার করা দুঃখজনক।
বিএডিসি সার ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের রাজশাহীর সভাপতি মাহফুজুল হাসনাইন হিকোল বলেন, ‘আবুল কালামকে গ্রেপ্তার করলে শ্রমিকরা ট্রাক বন্ধ করে দিতে পারেন। সার বিক্রিও বন্ধ হতে পারেন। এমনটি হলে রাজশাহী অঞ্চলে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হবে। যারা এই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে চান, তারা আবুল কালামকে গ্রেপ্তার করিয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলন থেকে দ্রুত আবুল কালামের মুক্তির দাবি জানানো হয়। এ সময় বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের জেলার সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম, বিএডিসি সরকার ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের জেলার সাধারণ সম্পাদক শরিফ উদ্দিন, ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির জেলার সহসভাপতি মো.
বাদীর এফিডেফিট করার বিষয়ে বোয়ালিয়া থানার ওসি মোস্তাক হাসান বলেন, ‘এফিডেফিট বিবেচনার বিষয় আদালতের। আমরা এজাহারভুক্ত আসামি পেয়েছি, তাই তাকে গ্রেপ্তার করেছি। তাকে গ্রেপ্তারের পেছনে অন্য উদ্দেশ্য নেই।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ স ঘর ষ গ র প ত র কর এফ ড ফ ট ব এনপ র ত কর ম আওয় ম র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় প্রয়াসের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
ফতুল্লার লামাপাড়ায় মাদকাসক্ত পূনর্বাসন ও সহায়তা কেন্দ্র প্রয়াসের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রয়াসের ২২তম প্রতিষ্ঠাবাষির্কী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা, কোর্স সমাপনী সনদ প্রদান, বিভিন্ন মেয়াদে সুস্থতার বর্ষপূর্তি ও খেলাধূলার আয়োজন করা হয়।
বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে প্রয়াসের জেনারেল ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হয়।
মাদকাসক্ত পূনর্বাসন ও সহায়তা কেন্দ্র প্রয়াসের জেনারেল ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলায় মাদকাসক্তদের চিকিৎসা সেবা প্রদানে প্রয়াস বিগত ২২ বছর যাবত নিরবিচ্ছিন্নভাবে সেবা করে যাচ্ছে।
সব ধরনের আইন ও বিধি-বিধান মেনে সেবার মানোন্নয়ন প্রয়াসের বর্তমান লক্ষ্য। শুধু চিকিৎসা সেবা প্রদান নয়, বরং মানসম্পন্ন টেকসই সেবা নিশ্চিত করার জন্য চিকিৎসা পরবর্তী বিভিন্ন কার্যক্রম কেন্দ্রটি পরিচালনা করে থাকে।
জেনারেল ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন বলেন, প্রয়াসে চিকিৎসা কোর্স সম্পন্নকারীদের সার্টিফিকেট প্রদান, প্রাক্তন সদস্যদের মনিটরিং, বিভিন্ন মেয়াদে সুস্থ থাকার স্বীকৃতি ও জনসচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারনায় অংশগ্রহণ প্রয়াসের টেকসই চিকিৎসা পরিকল্পনার অংশ।
তিনি আরো বলেন, আমরাই প্রথম নারায়ণগঞ্জে ৪০ বেডে লাইসেন্স প্রাপ্ত মাদকাসক্ত চিকিৎসা কেন্দ্র। প্রয়াসের প্রতিষ্ঠা ২০০৩ সালে হলেও আমরা লাইসেন্স পেয়েছি ২০০৬ সালে। গত ২০২১ সাল থেকে আমরা প্রতিবছর সরকারি অনুদানের জন্য নির্বাচিত হয়ে আসছি।
এসময় তিনি অভিভাবক প্রতিনিধি ও প্রাক্তন সদস্যদের প্রয়াসের সামগ্রিক কার্যক্রমে সংযুক্ত থাকার জন্য ধন্যবাদ জানান।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, মাদকাসক্ত পূনর্বাসন ও সহায়তা কেন্দ্র প্রয়াসের কাউন্সিলর মোঃ সাইফুল ইসলাম, অফিসার এডমিন সাজ্জাদ হোসেন, প্রোগ্রাম অফিসার শেখ ফরিদ উদ্দিন ও মেডিকেল অফিসার ডা. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ। অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, শওকত হোসেন, লিটন, আমজাদ, বাবুসহ রিকোভারীবৃন্দ।