Prothomalo:
2025-05-01@07:52:57 GMT

দলগুলোকে ঐকমত্যে আসতেই হবে

Published: 17th, March 2025 GMT

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে সরকারের প্রতিনিধি, বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের প্রধান ও রাজনৈতিক দলের নেতাদের বৈঠকে সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ আগস্টের গণ–অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী প্রায় সব দলের নেতারা অংশ নিয়েছেন।

বৈঠকটি এমন সময় হলো, যখন সংস্কার নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনা চলমান। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ইতিমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে সংস্কারবিষয়ক কিছু প্রশ্ন পাঠিয়েছে, যার উত্তর ১৩ মার্চের মধ্যে দেওয়ার কথা ছিল। কয়েকটি রাজনৈতিক দল উত্তর পাঠালেও অন্যরা সময় নিয়েছে। আবার কেউ কেউ ঐকমত্য কমিশনের প্রশ্নের ধরন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় জাতিসংঘ মহাসচিব বলেছেন, বাংলাদেশের অংশীজনেরাই সংস্কার বাস্তবায়ন করবে। কতটুকু এবং কীভাবে করবে, সে বিষয়ে তাদেরই ঠিক করতে হবে। জাতিসংঘ বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ ও সংস্কারে সহায়তা দিয়ে যাবে।

বৈঠকে পাঁচটি সংস্কার কমিশনের প্রধানেরা তাঁদের প্রতিবেদনের সংস্কার প্রস্তাবের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেছেন। অন্যদিকে রাজনৈতিক দলের নেতারাও মতামত ব্যক্ত করেছেন। কোনো কোনো রাজনৈতিক দল লিখিত বক্তব্য জমা দিয়েছে। এর মাধ্যমে জাতিসংঘ মহাসচিব বাংলাদেশের রাজনীতি ও আর্থসমাজিক বিষয়ে একটা ধারণা পেয়েছেন।

বৈঠকে রাজনৈতিক দলের নেতারা সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেছেন। তবে নির্বাচনের আগে কতটুকু সংস্কার আর কতটুকু পরে হবে, সেসব নিয়ে তাদের মধ্যে মতভেদ আছে। কেউ কেউ গণপরিষদের মাধ্যমে সংস্কার সম্পন্ন করার কথাও বলেছেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, রাজনৈতিক দলগুলো বেশি সংস্কার চাইলে আগামী বছরের জুনে এবং কম সংস্কার চাইলে চলতি বছরের ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে। এর মাধ্যমে তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছেই সিদ্ধান্তের ভার দিয়েছেন।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের বক্তৃতা–বিবৃতি দেখে মনে হয়, তাঁরা কোনো বিষয়ে একমত হতে পারবেন কি না, সে বিষয়ে সন্দেহ আছে। কোনো দল কোনো বিষয়ে মত প্রকাশ করলে অন্যদের দায়িত্ব হয়ে পড়ে তার বিরোধিতা করা। কথাটি যুক্তি দিয়ে বললে সমস্যা হয় না। কিন্তু অনেকেই ‘সালিস মানি কিন্তু তালগাছ’ আমার অবস্থানে চলে যায়। গণ–অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর মধ্যে মত ও পথের ফারাক থাকা অস্বাভাবিক নয়। সংস্কারের মাত্রা ও সময় নিয়েও বিতর্ক থাকতে পারে। কিন্তু কিছু মৌলিক বিষয়ে তাদের তো একটা ঐকমত্যে আসতে হবে। সেটা তখনই সম্ভব, যখন রাজনৈতিক দলগুলো একে অপরকে ছাড় দেওয়ার মানসিকতা তৈরি করতে পারবে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছে ছয় মাস। এত দিন অভিযোগ ছিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন আলোচনা করতে বিলম্ব করছে। আলোচনা শুরুর পর রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্বই বেশি। তারা যত দ্রুত কমিশনের প্রশ্নের উত্তর দেবে, তত দ্রুত আলোচনা শুরু হবে।

জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে রাজনৈতিক দলগুলোকে একটি কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া প্রয়োজন মনে করি। বাংলাদেশে অতীতে যত অঘটন ঘটেছে, তার দায় আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব এড়াতে পারে না। তাদের ব্যর্থতার কারণেই গণ–অভ্যুত্থানের সুফল থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আগস্টের গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রে উত্তরণের যে সুযোগ এসেছে, তা কোনোভাবে হারানো যাবে না।

আশা করি, রাজনৈতিক দলগুলোর বোধোদয় হবে এবং দলগুলো প্রজ্ঞা ও বিচক্ষণতার পরিচয় দেবে। নির্বাচন ডিসেম্বরে না জুনে হলো, তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো দলগুলো রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে কতটা পরিবর্তন আনতে পারল।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার অগ্রগতি পর্যালোচনা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা। বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চলমান আলোচনার অগ্রগতি পর্যালোচনা করেন তাঁরা।

আজ সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঐকমত্য কমিশনের প্রধান ও প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে বৈঠকে সংস্কারপ্রক্রিয়া নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যেসব আলোচনা হয়েছে, সে বিষয়ে কমিশন প্রধানকে অবহিত করেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, বিচারপতি এমদাদুল হক ও সফর রাজ হোসেনও এতে অংশ নেন। সে আলোকে পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দেন প্রধান উপদেষ্টা।

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, শিল্প ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অনির্বাচিত সরকারের করিডোর দেওয়ার এখতিয়ার নেই: বিএনপি
  • অনির্বাচিত সরকারের করিডোর দেওয়ার এখতিয়ার নেই
  • ‘মানবিক করিডর’ প্রতিষ্ঠার আগে জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করতে হবে: চরমোনাই পীর
  • চলতি বছর বিশ্বে মন্দার ঝুঁকি বেড়েছে, জরিপে অর্থনীতিবিদদের শঙ্কা
  • বুয়েটের নতুন রিকশার অনুমোদন দেবে সরকার, ‘মাস্টার ট্রেইনার’ হবেন বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা
  • এই প্রথম সকলে মিলে রাষ্ট্র বিনির্মাণের সুযোগ তৈরি হয়েছে: আলী রীয়াজ
  • প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক
  • মানবিক করিডরের সিদ্ধান্ত হলেও শর্ত নিয়ে চলছে আলোচনা
  • ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক
  • প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার অগ্রগতি পর্যালোচনা