যুক্তরাজ্যে বসে যেভাবে রাশিয়ার জন্য গুপ্তচরবৃত্তি করেছে চক্রটি
Published: 17th, March 2025 GMT
সম্ভাব্য বিপদের আশঙ্কায় প্রায়ই চিন্তামগ্ন থাকতেন রোমান দোব্রোখোতভ। রাশিয়ার এই সাংবাদিক দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের শাসনামল নিয়ে অনুসন্ধানী কাজ চালিয়েছিলেন। তাঁর এমনই একটি অনুসন্ধানে উন্মোচিত হয়েছিল ২০১৮ সালের সলসব্যুরি বিষক্রিয়ার ঘটনার জন্য দায়ী চক্রের মুখোশ। এটি ক্রেমলিনের নিশানা বানিয়েছিল তাঁকে।
অনুসন্ধানী এ সম্পাদক ২০২১ সালের কোনো একদিন জার্মানির বার্লিনগামী একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইট ধরতে বুদাপেস্ট বিমানবন্দরের টারমাকে অপেক্ষা করছিলেন। বার্লিনে একটি খুনের বিচারে তথ্যপ্রমাণ হাজির করার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু সে সময় তাঁর পেছনেই যে শ্যামবর্ণের এক নারী দাঁড়িয়ে ছিলেন, সেটি দোব্রোখোতভের জানা ছিল না।
পরে উড়োজাহাজে উঠেও দোব্রোখোতভের কাছেই একটি আসনে বসেছিলেন ওই নারী। এটিকে তেমন কিছু মনে করেননি তিনি। দোব্রোখোতভ এ–ও দেখেননি যে তাঁর কাঁধে ক্যামেরা গোঁজা, যা দিয়ে সন্তর্পণে ভিডিও করা হচ্ছে।
অরলিন রুসেভকে গুপ্তচরবৃত্তির প্রতি মোহাবিষ্ট এক ব্যক্তি হিসেবে আখ্যায়িত করেন তাঁর এক সহযোগী। রুসেভের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক ই–মেইল ঠিকানায় বিশ্বের বিখ্যাত কল্পকাহিনির গোয়েন্দা চরিত্র জেমস বন্ডের ‘০০৭’ কোড নম্বরের উল্লেখ রয়েছে।সেদিন সকালেই ইংল্যান্ডের লুটন থেকে হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্ট উড়ে এসেছিলেন এই নারী। এর আগেই দোব্রোখোতভের ফ্লাইটের তথ্য জোগাড় করেন তিনি।
নির্দিষ্ট গন্তব্যে উড়োজাহাজটির ছুটে চলার পথে ক্যাটরিন ইভানোভা নামের এই বুলগেরীয় নারী টেলিগ্রামে একটি বার্তা পাঠান।
ক্যাটরিন তাঁর সঙ্গী বাইসের ঝামবাজোভের সঙ্গে উত্তর লন্ডনের হ্যারোতে থাকতেন। ক্যাটরিনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তিনি। এরই মধ্যে দোব্রোখোতভকে নিয়ে উড়োজাহাজ বার্লিনে পৌঁছায়।
ক্যাভেটকা নামের আরেকজন নারী ও বিমানবন্দরের কর্মীও এরই মধ্যে একই গন্তব্যে পৌঁছান। বার্লিনে তাঁরও নজর ছিল দোব্রোখোতভের ওপর। কিন্তু তাঁরা দুজনই দোব্রোখোতভকে হারিয়ে ফেলেন।
এভাবেই ক্যাটরিনদের ৬ সদস্যের একটি গুপ্তচর চক্র ইউরোপজুড়ে রাশিয়ার শত্রুদের শনাক্ত করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল বছরের পর বছর। চক্রটির নেতারা ক্রেমলিনের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির বিভিন্ন কৌশল, অপহরণ ও হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন। ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকার অভিযোগে ৭ মার্চ লন্ডনের ওল্ড বেইলি (ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের কেন্দ্রীয় অপরাধ আদালত) চক্রটির তিন সদস্যকে অভিযুক্ত করেন। বাকি তিন সদস্য আগেই আদালতে তাঁদের দোষ স্বীকার করেন।
পরে দোব্রোখোতভ বিবিসিকে বলেন, ‘আমরা এমন এক পরিস্থিতির ভেতর আছি, যেখানে আমাদের মধ্যে অল্প কয়েকজনই বেঁচে যাবেন। হয় তাঁরা হবেন রুশ সাংবাদিক ও মানবাধিকার পর্যবেক্ষকেরা অথবা ভ্লাদিমির পুতিন ও তাঁর সহযোগী খুনিরা।’
বার্লিনের ঘটনাবলি যুক্তরাজ্য থেকে পর্যবেক্ষণ করছিলেন টেলিগ্রাম গ্রুপের সর্বশেষ সদস্য ৪৭ বছর বয়সী অরলিন রুসেভ। তিনিও বুলগেরীয় নাগরিক।
অরলিন রুসেভকে গুপ্তচরবৃত্তির প্রতি মোহাবিষ্ট এক ব্যক্তি হিসেবে আখ্যায়িত করেন তাঁর এক সহযোগী। রুসেভের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক ই–মেইল ঠিকানায় বিশ্বের বিখ্যাত কল্পকাহিনির গোয়েন্দা চরিত্র জেমস বন্ডের ‘০০৭’ কোড নম্বরের উল্লেখ রয়েছে।
রুসেভ ২০০৯ সালে যুক্তরাজ্যে যান ও সাংকেতিক গোয়েন্দা তথ্যের ওপর একটি প্রতিষ্ঠান খোলেন। তাঁর এ সিগন্যাল ইন্টেলিজেন্স দিয়ে পরস্পরের যোগাযোগ কিংবা ইলেকট্রনিক সিগন্যালের ওপর নজরদারি করা যায়।
আমরা এমন এক পরিস্থিতির ভেতর আছি, যেখানে আমাদের মধ্যে অল্প কয়েকজনই বেঁচে যাবেন। হয় তাঁরা হবেন রুশ সাংবাদিক ও মানবাধিকার পর্যবেক্ষকেরা অথবা ভ্লাদিমির পুতিন ও তাঁর সহযোগী খুনিরা। —রোমান দোব্রোখোতভ, রুশ সাংবাদিকরুসেভ ইংল্যান্ডের গ্রেট ইয়ারমাউথ শহরের একসময়ের যে অতিথিশালায় স্ত্রী ও সৎসন্তানকে নিয়ে থাকতেন, সেখানে তল্লাশি চালিয়েছে মেট্রোপলিটন পুলিশ। সেখানে গোয়েন্দাগিরিতে ব্যবহৃত টেকনিক্যাল সার্ভেইল্যান্সের অনেক যন্ত্রপাতি পাওয়া যায়।
রুশ গোয়েন্দাদের নিশানায় পড়েও বেঁচে যাওয়া নিয়ে সাংবাদিক দোব্রোখোতভ বলছিলেন, ‘আমি ভাগ্যবান যে বেঁচে আছি।’
রুসেভের বসবাস করা ওই অতিথিশালা যেন আলাদিনের গুহা। যোগাযোগের ওপর নজরদারি করার ১ লাখ ৭৫ হাজার পাউন্ড মূল্যের অত্যাধুনিক সব যন্ত্র, রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি জ্যামার, ধোঁয়া শনাক্তকারী যন্ত্রে লুকানো গোপন ক্যামেরা, কলম, সানগ্লাস, টাই, জাল পরিচয়পত্র—কী নেই সেখানে। ছিল একটি হার্ড ড্রাইভ খোলা অবস্থায়। আর সেখানে থাকা ল্যাপটপে রুসেভের টেলিগ্রাম কথোপকথন দৃশ্যমান ছিল।
এত সব যন্ত্র ও উপকরণের মধ্যে পুলিশ একসময়ের ফাইন্যান্স এক্সিকিউটিভ জ্যঁ মার্সালেকের একটি ব্যবসায়িক কার্ডও উদ্ধার করে।
রুসেভ প্রথম ২০১৫ সালে এই নির্বাহীর সঙ্গে পরিচিত হন। বিবিসির দেখা ই–মেইলগুলো অনুযায়ী, মার্সালেক একটি চীনা কোম্পানির কাছ থেকে এক নিরাপদ মোবাইল ফোন পেতে রুসেভের সাহায্য চেয়েছিলেন। ওই সময় মার্সালেক ছিলেন জার্মানির একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা।
এ জুটি একসঙ্গে সাংবাদিক, ভিন্নমতাবলম্বী, রাজনীতিবিদ—এমনকি জার্মানির শহর স্টুটগার্টে একটি মার্কিন সামরিক স্থাপনায় প্রশিক্ষণরত ইউক্রেনীয় সৈন্যদের লক্ষ্য করে অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। তাঁরা ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্র থেকে আটক মার্কিন ড্রোন চীনের কাছে বিক্রি করা নিয়েও আলোচনা করেছিলেন। আর এটি করা হয়েছিল রাশিয়ার স্বার্থে।
গোয়েন্দাদের তথ্য অনুযায়ী, মার্সালেক মস্কোয় আত্মগোপন করে আছেন বলে মনে করা হচ্ছে। তবে যুক্তরাজ্যে তাঁর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই।
রুসেভ যে গুপ্তচর চক্র নিযুক্ত করেছিলেন, তাঁরা সবাই বুলগেরীয়। তাঁরা খুব পরিচিত গুপ্তচর ছিলেন না।
রুসেভের বসবাস করা ওই অতিথিশালা যেন আলাদিনের গুহা। যোগাযোগের ওপর নজরদারি করার ১ লাখ ৭৫ হাজার পাউন্ড মূল্যের অত্যাধুনিক সব যন্ত্র, রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি জ্যামার, ধোঁয়া শনাক্তকারী যন্ত্রে লুকানো গোপন ক্যামেরা, কলম, সানগ্লাস, টাই, জাল পরিচয়পত্র—কী নেই সেখানে। ছিল একটি হার্ড ড্রাইভ খোলা অবস্থায়। আর সেখানে থাকা ল্যাপটপে রুসেভের টেলিগ্রাম কথোপকথন দৃশ্যমান ছিল।চিকিৎসাপণ্য সরবরাহকারী বাইসের ঝামবাজোভ ও ল্যাবরেটরি সহকারী ক্যাটরিন ইভানোভা ছাড়াও রুসেভ বিউটিশিয়ান ভ্যানিয়া গ্যাবেরোভা, চিত্রকর ও ডেকোরেটর তিহোমির ইভানচেভ এবং এমএমএ যোদ্ধা ইভান স্টয়ানোভকে তাঁর চক্রে নিয়োগ দিয়েছিলেন। স্টয়ানোভ ‘দ্য ডেস্ট্রয়ার’ নামেও পরিচিত।
গুপ্তচর চক্রটির ছয় সদস্যের সবাই আটক হয়েছেন। তাঁদের কেউই যুক্তরাজ্যে থেকে গোপন কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাওয়ার কথা অস্বীকার করেননি। রুসেভ, ঝামবাজোভ ও স্টয়ানোভ আদালতে অপরাধ স্বীকার করেছেন। কিন্তু ইভানোভা, গ্যাবেরোভা ও ইভানচেভ রাশিয়ার পক্ষে নিজেদের কাজ করার বিষয়টি তাঁদের জানা ছিল—এটি মানতে অস্বীকৃতি জানান।
অবশ্য জুরি এ তিনজনের বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। পরে তাঁদেরও দোষী সাব্যস্ত করেন আদালত। তাঁদের ১৪ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। আগামী মে মাসে তাঁদের বিরুদ্ধে কারাদণ্ড ঘোষণা করা হবে।
তবে এটিই শেষ নয়। সাংবাদিক দোব্রোখোতভ বিবিসিকে বলছিলেন, ‘(রাশিয়ায়) সরকার বদল না হলে এই চক্রের জায়গায় নতুন লোকেরা সক্রিয় হবেন, যাঁরা আপনাকে হয় মেরে ফেলবেন, নয় অপহরণ করবেন।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ষ ট এক ত কর ন র ওপর সদস য র একট সহয গ
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশ পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে: আইরিন খান
জাতিসংঘের মুক্তচিন্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাবিষয়ক বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার আইরিন খান বলেছেন, ‘আমাদের যে বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে, তার একটি হলো ঠিক এই মুহূর্তে বাংলাদেশ একটি স্বাভাবিক গণতন্ত্রের দেশ নয়। এখানে গণতন্ত্র চলছে না। কার্যত এটা পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে।’
টেক গ্লোবাল ইনস্টিটিউট (টিজিআই) আয়োজিত এক ওয়েবিনারে আইরিন খান এ কথা বলেন। বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে গত বুধবার ‘আইন থেকে অধিকার: বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক উত্তরণে ডিজিটাল স্বাধীনতার সুরক্ষা’ শীর্ষক এ ওয়েবিনারের আয়োজন করা হয়। গতকাল রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ওয়েবিনারে বিদ্যমান ও নতুন সাইবার আইন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া এবং নাগরিকদের ওপর নজরদারিসহ ডিজিটাল সুশাসন-সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় ও উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা হয়। টিজিআই–এর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয়ভাবে নজরদারি সরঞ্জাম কেনার জন্য ১৯ কোটি ডলারের বেশি অর্থ ব্যয় করেছে।
ওয়েবিনারে সূচনা বক্তব্য দেন টিজিআই–এর নির্বাহী পরিচালক সাবহানাজ রশীদ দিয়া। গত বছরের জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর থেকে বাংলাদেশে বেশ কিছু সংস্কার হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। সাবহানাজ রশীদ বলেন, ‘আমরা দেখেছি, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মতো বিষয়গুলোর ব্যাপারে কিছু উল্লেখযোগ্য তদন্ত, কমিশন ও প্রক্রিয়া করা হয়েছে। কিন্তু একই সঙ্গে আমরা নির্বিচার গ্রেপ্তার হতেও দেখেছি।’
টিজিআই–এর নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘গত কয়েক মাসে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। অতীতে আমাদের বিশ্লেষণে আমরা দেখেছি, এই আইন বাংলাদেশে নজরদারির সবচেয়ে সহায়ক এবং একই সঙ্গে এটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য একটি বড় বাধা হিসেবে কাজ করেছে।’
আলোচনায় বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা খাতের বিষয়গুলো নিয়ে আইরিন খান বলেন, ‘আমাদের একটি অন্তর্বর্তী সরকার আছে, যার কর্তৃত্ব সীমিত। আমাদের একটি নিরাপত্তা খাত আছে; এই একটি মাত্র খাতে অভ্যুত্থান ও পরিবর্তনের কোনো প্রভাব পড়েনি। তাই এ ধরনের পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা খাতে সংস্কার নিশ্চিত করতে আমরা কী করতে পারি?’
জাতিসংঘের বিশেষ এই র্যাপোর্টিয়ার বলেন, ‘এই রূপান্তর বাস্তবায়নের জন্য নিরাপত্তা খাতকেই সহায়তা করতে এগিয়ে আসতে হবে (বর্তমান সরকারকে)। এখনো তাদের কাছে সব ধরনের (নজরদারি) সরঞ্জাম রয়েছে। আর সে কারণে পরবর্তী সরকারের নেতৃত্ব কে দেবে, তা নির্ধারণে অন্য সবার চেয়ে তাদের বাড়তি সুবিধা রয়েছে।’
পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ডিজিটাল পরিসরে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় বর্তমান সরকার কী করতে পারে, সে বিষয়ে আলোচনায় আইরিন খান বলেন, ‘ডিজিটাল নিয়ে ভাবুন। আমি মনে করি না, সরকার তা করছে। তবে অন্য সবাই ডিজিটাল নিয়ে ভাবছে। তাই সরকারের ডিজিটাল নিয়ে এবং ডিজিটাল পরিসরে কীভাবে কাজ করবে, সে বিষয়ে ভাবা দরকার। (ইন্টারনেট) কোম্পানিগুলোকে ডাকুন, তাদের সঙ্গে কথা বলুন এবং ডিজিটাল পরিসর কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা মানুষকে এবং রাজনৈতিক দলগুলোকেও বুঝতে দিন।’
আলোচনায় অংশ নিয়ে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা আর্টিকেল নাইনটিনের প্রোগ্রাম অফিসার ডায়নাহ ফন ডার গেস্ট বলেন, ‘আমি মনে করি, নজরদারি নিজে থেকে অবৈধ নয়। সর্বত্র রাষ্ট্রগুলোর জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অপরাধের তদন্ত করা এবং নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব রয়েছে। কিন্তু নজরদারি যখন ব্যাপক, অস্বচ্ছ ও অনিয়ন্ত্রিত হয়ে যায়, তখন তা একটি বিপজ্জনক সীমা অতিক্রম করে।’
ওয়েবিনারে বলা হয়, বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, ডিজিটাল স্বাধীনতা যেমন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, তথ্যে প্রবেশাধিকার এবং অনলাইনে নাগরিকদের অংশগ্রহণ নিয়ে আলোচনা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি জরুরি হয়ে উঠেছে। এই প্রেক্ষাপটে সাইবার আইন ও এর প্রয়োগের ফলে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ; ডিজিটাল পরিসরে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করা এবং মানুষের অধিকার সুরক্ষায় সংস্কারের সম্ভাবনা নিয়ে এতে আলোচনা হয়েছে।