ইউরোপের লিগগুলো শেষের পথের যাত্রা শুরু করেছে। শিরোপা নির্ধারণের পথও ফুরিয়ে আসছে প্রতিনিয়ত। এই সময়ে প্রতিটি ম্যাচ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর সেই ম্যাচটি যদি হয় শিরোপার দৌড়ে থাকা কোনো দলের বিপক্ষে, তাহলে তো কথাই নেই।

স্প্যানিশ লা লিগায় রোববার (১৬ মার্চ, ২০২৫) দিবাগত রাতে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুই দল অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা মুখোমুখি হয়। মেট্রোপলিটানো স্টেডিয়ামের এই ম্যাচটি বার্সেলোনার জন্য ছিল অগ্নিপরীক্ষা। শীর্ষস্থান ধরে রাখতে, শিরোপা জয়ের দৌড়ে এগিয়ে যেতে ম্যাচটা ছিল মহামূল্যবান।

কিন্তু এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ৪৫ মিনিটে জুলিয়ান আলভারেজের গোলে এগিয়ে যায় অ্যাটলেটিকো, পিছিয়ে পড়ে কাতালানরা। বিরতির পর ৭০ মিনিটে আলেক্সান্ডার সোরলোথের গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করে ফেলে অ্যাটলেটিকো।

আরো পড়ুন:

সদ্য প্রয়াত চিকিৎসককে জয় উৎসর্গ করল বার্সা

দশ জনের বার্সার বিপক্ষে হারল বেনফিকা

৭০ মিনিটের মাথায় গিয়ে দুই গোলে পিছিয়ে পড়া বার্সেলোনা অ্যাটলেটিকোর মাঠে এই ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াবে, প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখবে, সেটা হয়তো ভাবেনি কেউ। কিন্তু সবার ভাবনাকে ভুল প্রমাণ করে অগ্নিপরীক্ষার ম্যাচে অবিশ্বাস্য এক প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখলো বার্সা।

৭২ মিনিটের মাথায় রবার্ত লেভানডোফস্কির গোলে ব্যবধান কমায় হানসি ফ্লিকের শিষ্যরা। ৭৮ মিনিটে ফেরান তোরেসের গোলে ফেরে সমতা। আর ৯০+২ মিনিটের মাথায় লামিনে ইয়ামাল গোল করে এগিয়ে নেন দলকে। ৯০+৮ মিনিটের মাথায় তোরেস তারা জোড়া গোল পূর্ণ করে বার্সেলোনাকে উপহার দেন ৪-২ ব্যবধানের অবিশ্বাস্য এক জয়।

যে জয় বার্সেলোনাকে কেবল অগ্নিপরীক্ষার ম্যাচে অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনের গল্পই লিপিবদ্ধ করায়নি, পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থানও সংহত করেছে।

২৭ ম্যাচ থেকে ৬০ পয়েন্ট ও +৪৮ গোল গড় নিয়ে যথারীতি কাতালানরা আছে লা লিগার পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে। ২৮ ম্যাচ থেকে ৬০ পয়েন্ট ও +৩২ গোল গড় নিয়ে রিয়াল মাদ্রিদ আছে দ্বিতীয় স্থানে। আর ২৮ ম্যাচ থেকে ৫৬ পয়েন্ট ও +২৪ গোল গড় নিয়ে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ আছে তৃতীয় স্থানে।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল অব শ ব স য

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ