বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষায়িত বিষয়ের বাইরের বিষয় পড়াশোনার সুযোগ বন্ধের উদ্যোগ
Published: 20th, March 2025 GMT
বিশেষায়িত দক্ষ স্নাতক ডিগ্রিধারী তৈরির চিন্তা থেকে দেশে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। কিন্তু এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে মানবিক, সমাজবিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষার মতো বিষয়েও পড়ানো হচ্ছে। বাদ পড়ছে না কৃষি বিষয়ও। কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্ধেকের মতো শিক্ষার্থী বিজ্ঞানের বাইরের বিষয়ের। এ প্রবণতা দিনকে দিন বেড়েই চলছে।
এমন পরিস্থিতিতে সরকার তাতে রাশ টানার উদ্যোগ নিয়েছে। সম্প্রতি উপাচার্যদের চিঠি দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত (স্টিম)-সংশ্লিষ্ট সাধারণ বিষয় ছাড়া অন্য কোনো বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। শুধু তা–ই নয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, যেসব বিষয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চলমান, সেসব বিষয়ে শিক্ষা কার্যক্রম যুক্তিসংগতভাবে ন্যূনতম সময়ের মধ্যে সীমিত অথবা বন্ধ করতে হবে।
আরও পড়ুনএসএসসি ২০২৫-এর একটি পরীক্ষা পেছাল, নতুন রুটিনে কোন পরীক্ষা কবে৪ ঘণ্টা আগেএ বিষয়ে ১৩ মার্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব এ এস এম কাসেমের সই করা চিঠি উপাচার্যদের কাছে পাঠানো হয়েছে। চিঠি দেওয়ার বিষয়টি মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে।
অবশ্য সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিভাগ একবার চালু করে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করার পর তা বন্ধ করা এত সহজ কাজ নয়। এ নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হওয়ার আশঙ্কা আছে।
বর্তমানে সারা দেশে ৫৫টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম চলছে। এ ছাড়া অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১১৬টি। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এ পর্যন্ত ১৮টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
আরও পড়ুননামে শুধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে, এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত (স্টিম)–সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, কাছাকাছি এলাকায় অবস্থিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একই ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এ ছাড়া কিছু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষায়িত প্রকৃতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়, এমন বিষয়েও শিক্ষা কার্যক্রম চলমান।
এ অবস্থায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় এসব বিশ্ববিদ্যালয়কে চারটি বিষয়ে অনুরোধ করেছে। এগুলো হলো—
১.
২. ‘ক্যাচমেন্ট এলাকায়’ অবস্থিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিমধ্যে একই ধরনের বিষয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চলমান থাকলে সেসব বিষয়ে শিক্ষা কার্যক্রম যুক্তিসংগতভাবে ন্যূনতম সময়ের মধ্যে সীমিত বা বন্ধ করতে হবে।
৩. বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত (স্টিম)–সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যুগোপযোগী বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
৪. বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত (স্টিম)–সংশ্লিষ্ট সাধারণ বিষয় ছাড়া অন্য কোনো বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। এমন যেসব বিষয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চলমান, সেসব বিষয়ে শিক্ষা কার্যক্রম যুক্তিসংগতভাবে ন্যূনতম সময়ের মধ্যে সীমিত বা বন্ধ করতে হবে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কুষ্টিয়ায় বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত নেতার অনুসারীদের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে বিএনপির স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য সোহরাব উদ্দিন দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছেন তাঁর অনুসারী নেতা-কর্মীরা। আজ সোমবার রাত ৯টার দিকে শহরের মজমপুর রেলগেটে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে এ বিক্ষোভ করেন তাঁরা।
সেখানে বিক্ষোভকারীরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভের পাশাপাশি প্রতিবাদ মিছিলও করেন। এ ছাড়া সদর উপজেলার মধুপুর-লক্ষীপুর এলাকাতেও সোহরাব উদ্দিনের সমর্থকেরা সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছেন।
বিক্ষোভকারী নেতা-কর্মীদের দাবি, সোহরাব উদ্দিন কুষ্টিয়া-৩ আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য। তিনি দীর্ঘদিন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এর বদলে এখানে অন্য কাউকে প্রার্থী হিসেবে মেনে নেওয়া হবে না। তাই অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে সোহরাব উদ্দিনকে পুনরায় মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।
এর আগে সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব জাকির হোসেন সরকার।
এ বিষয়ে মনোনয়নবঞ্চিত সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘শুনেছি আমার সমর্থকেরা বিক্ষোভ করছেন। আমি শহরের বাইরে আছি।’ এর বেশি কথা বলেননি তিনি।
জানতে চাইলে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী জাকির হোসেন সরকার বলেন, কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যিনি মনোনয়ন পাবেন, তাঁর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। তবে এ নির্দেশনা যদি কেউ না মানেন, তাহলে কেন্দ্র ব্যবস্থা নেবে।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হাসেন বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণ করেছি।’
কুষ্টিয়ার অন্য তিনটি সংসদীয় আসনে বিএনপির প্রার্থীরা হলেন কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনে সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেজা আহম্মেদ বাচ্চু মোল্লা, কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভোড়ামারা) আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রাগীব রউফ চৌধুরী, কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) আসনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমি।