সুখ কী—এ প্রশ্নের উত্তর হাজারজনের কাছ থেকে হাজার রকম আসতে পারে; কিন্তু এর পরও এই রকমফেরের মধ্যে একটি ‘মিল’ও খুঁজে পাওয়া যাবে। সেটি অর্থসংক্রান্ত। অর্থাৎ কম–বেশি রেস্ত আপনার পকেটে থাকতে হবে। প্রতিবছর বিশ্বের সুখী দেশের যে তালিকা প্রকাশিত হয়, তাতে অর্থকড়ির তুলনামূলক চিত্রই মূলত প্রতিফলিত হয়। উদাহরণ—২০২৪ সাল পর্যন্ত ফিনল্যান্ডের টানা সপ্তমবারের মতো বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশের জায়গা দখল করে নেওয়া।

প্রতিবছরের ২০ মার্চ যে বিশ্ব সুখ দিবস পালন করা হয়, তার প্রস্তাবে জাতিসংঘের বক্তব্য ছিল, ‘অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায়সংগত ও ভারসাম্যপূর্ণ পদ্ধতির অবতারণা, যা বিশ্বের সব মানুষের সুখ ও কল্যাণকে উৎসাহিত করবে।’ অর্থাৎ জাতিসংঘও অর্থের গুরুত্বকেই প্রাধান্য দিয়েছে।

কিন্তু এই ২০২৫ সালে এসেও তিন বেলা পেট পুরে খেতে পায় না—এমন মানুষের সংখ্যাও তো নেহাত কম নয়। আর সেই গল্পের কথাও তো সবার জানা। যার সম্পদ–টম্পদ কিছুই ছিল না, এমনকি ছিল না একখানা জামাও, তাই তিনি ‘সুখী’। তা হলে চালচুলোর ঠিকঠিকানা না থাকা ‘পকেটবিহীন’ এসব মানুষের জীবনে সুখ বলতে কি কিছু নেই? আর যদি কিছু থেকেও থাকে, তা পরিমাপের মানদণ্ডই বা কী হতে পারে?

রবি ঠাকুর বলেছেন, ‘জীবনের সুখ খুঁজিবার গিয়া জীবনের সুখ নাশা।’ তাহলে কি সুখের জন্য হাপিত্যেশ না করাও এক অর্থে ‘সুখে’ থাকা? প্রশ্নটা যতটা সহজে করা গেল, উত্তরটা হয়তো তত সহজে দেওয়া সম্ভব নয়।

গণমানুষের নজিরবিহীন অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট পতন ঘটে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের। ওই দিন সারা দেশের রাজপথে যেন জনজোয়ার নেমেছিল। সমাজের সব শ্রেণি-পেশার শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সেই উদ্‌যাপনে একজনকেও কি দেখে মনে হয়েছিল, তিনি ‘সুখী’ নন? কীসের প্রাপ্তিতে তাঁদের মধ্যে দেখা গিয়েছিল অমন বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস? এর উত্তর অজানা নয় কারও, স্বৈরাচারের কবল থেকে মুক্তি, যার অপর নাম ‘স্বাধীনতার সুখ’। তাহলে বোঝা গেল, মানুষ শুধু ভাত-রুটিতে বাঁচে না। আরও কিছু লাগে—মানবিক মর্যাদা, সাম্য, সামাজিক ন্যায়বিচার। মনের খিদেও মেটাতে হয়।

‘ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্ট’ তৈরির ক্ষেত্রে এসবের কিছুই যে আমলে নেওয়া হয় না, তা কিন্তু নয়। সুখী দেশের তালিকা করার ক্ষেত্রে মানুষের সুখের নিজস্ব মূল্যায়ন, পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে শূন্য থেকে ১০ সূচকে নম্বর পরিমাপ করা হয়। এর সঙ্গে বিবেচনায় নেওয়া হয় প্রতিটি দেশের মানুষের ব্যক্তিগত সুস্থতার অনুভূতি, ব্যক্তিগত স্বাধীনতার চর্চা, উদারতা, মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি ও দুর্নীতির মাত্রা।

ফিনল্যান্ডের বার বার সুখী দেশের শীর্ষ স্থানটি ধরে রাখার পেছনে হেলসিংকি ইউনিভার্সিটির সুখবিষয়ক গবেষক জেনিফার ডি পাওলার বক্তব্য বেশ প্রণিধানযোগ্য। তাঁর মতে, ফিনল্যান্ডের মানুষের এতটা সুখী হওয়ার পেছনে অন্যতম কারণ, প্রকৃতির সঙ্গে তাঁদের নিবিড় সান্নিধ্য, স্বাস্থ্যসম্মত কর্মজীবন। এ ছাড়া ‘সফল জীবনের’ সংজ্ঞা নিয়ে তাঁদের অধিকতর বোঝাপড়াও সুখী হওয়ার একটি কারণ হতে পারে বলে তিনি মনে করেন। উদাহরণ হিসেবে এই গবেষক বলেন, যেখানে মার্কিন মুলুকে সাফল্যকে প্রায়ই অর্থনৈতিক অর্জনের সঙ্গে তুলনা করা হয়, সেখানে ফিনল্যান্ডবাসী প্রাধান্য দেন কল্যাণমূলক সমাজ, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলোর প্রতি আস্থা, ন্যূনতম মাত্রার দুর্নীতি, বিনা মূল্যে স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার ওপর।

২০২৪ সালের ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ছিল ১২৯তম অবস্থানে। এর আগের বছর, অর্থাৎ ২০২৩ সালে এ অবস্থান ছিল ১১৮। এক বছরের ব্যবধানে বাংলাদেশের অবনমন ঘটে ১১ ধাপ। তারও আগের বছর ২০২২ সালে বাংলাদেশ ছিল তালিকার ৯৪ নম্বরে। অর্থাৎ বাংলাদেশের অবস্থান লাফিয়ে লাফিয়ে কমছিল।

অভ্যুত্থান-উত্তর বাংলাদেশের অবস্থান এবারের প্রতিবেদনে যা–ই থাকুক না কেন, দেশের মানুষ এখন গড়পড়তা অনেকটাই নির্ভার, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কেননা, দেশের ঘাড়ে চেপে বসা ফ্যাসিজমের জগদ্দল পাথরটিকে তারা ঠেলে সরিয়ে দিতে পেরেছে। কিছু উচ্ছৃঙ্খল মানুষের অসহিঞ্চুতা, ঠিক-বেঠিক নিয়ে সবক দেওয়ার অপচেষ্টা, নারীর প্রতি অসৌজন্যমূলক আচরণ ‘নতুন স্বাধীনতা’র গায়ে কালোর ছিটা হয়ে লাগছে বটে; কিন্তু তা স্থায়ী হওয়ার নয়। কেননা, ময়লা ধুয়ে সাফসুতরো করার মানুষই এ দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ।

এ বছর বিশ্ব সুখ দিবসের প্রতিপাদ্য ‘কেয়ারিং অ্যান্ড শেয়ারিং’। অর্থাৎ সুখের স্থায়িত্ব আসে একে অপরের প্রতি যত্নশীল হওয়া থেকে, একে অপরের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার বোধ থেকে। মানুষের যূথবদ্ধ তথা সমাজবদ্ধ হয়ে থাকার ধারণাকেই আরেক দফা পোক্ত করে এবারের প্রতিপাদ্য।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) যুগে ঢুকে পড়েছে বিশ্ব। এরপর কি সুখের সংজ্ঞাও বদলাবে? কৌতূহল নিয়ে জিজ্ঞাসা ছিল এআইয়ের কাছে। উত্তর দিল, ‘সুখ হলো ভালো থাকার এমন এক অবস্থা যা ইতিবাচক আবেগ, তৃপ্তি ও জীবনের সঙ্গে সন্তুষ্টির অনুভূতির যোগফল।’ অর্থাৎ সময়ের নিয়মে সময় বদলাবে, কিন্তু পানি কখনো ওপর দিকে গড়াবে না।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অবস থ ন জ বন র হওয় র

এছাড়াও পড়ুন:

শক্তিশালী ব্যালান্স শিট প্রবৃদ্ধিসহ ২০২৪ সালে ব্র্যাক ব্যাংকের উল্লেখযোগ্য সাফল্য

চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি সত্ত্বেও ২০২৪ সালে ব্র্যাক ব্যাংক সমন্বিতভাবে কর-পরবর্তী নিট মুনাফায় (এনপিএটি) পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ৭৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। ২০২৪ সালে অঙ্গপ্রতিষ্ঠানসহ সমন্বিতভাবে ব্যাংকটি ১ হাজার ৪৩২ কোটি টাকা কর-পরবর্তী নিট মুনাফা অর্জন করেছে, যা ২০২৩ সালে ছিল ৮২৮ কোটি। ব্যাংকিং খাতে এটি একটি উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি।  

একক (স্ট্যান্ডঅ্যালন) ভিত্তিতে ২০২৪ সালে ব্র্যাক ব্যাংকের কর-পরবর্তী নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২১৪ কোটি টাকায়, যেখানে আগের বছরের ৭৩০ কোটি টাকার তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬৬ শতাংশ। ব্যাংকিং খাতে চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি সত্ত্বেও ব্র্যাক ব্যাংক ব্যালান্স শিটে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, যা ইন্ডাস্ট্রি-অ্যাভারেজের চেয়েও অনেক বেশি। এ সময় ব্যাংকটি এককভাবে গ্রাহক আমানতে ৩৪ শতাংশ এবং ঋণে ২০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

২৮ এপ্রিল ২০২৫ ব্র্যাক ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ব্যাংকটির ২০২৪ সালের আর্থিক বিবরণী অনুমোদন করে। ব্যাংকটির আর্থিক বিবরণীতে উঠে আসা উল্লেখযোগ্য সূচকগুলো এখানে তুলে ধরা হলো—

শক্তিশালী গ্রাহক-ভিত্তি এবং খাতভিত্তিক সহায়তা

২০২৪ সালে ব্র্যাক ব্যাংকের রিটেল ব্যাংকিং সেগমেন্টে সাড়ে তিন লাখ নতুন গ্রাহক যুক্ত হয়েছে, যার ফলে ব্যাংকটির রিটেইল ব্যাংকিং সেগমেন্টে এখন মোট গ্রাহকসংখ্যা ১৩ লাখের বেশি। এই অর্জন পারসোনালাইজড ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে গ্রাহকদের ক্রমবর্ধমান ব্যাংকিং প্রয়োজন মেটানোর ব্যাপারে ব্যাংকটির নিবেদিত প্রচেষ্টার প্রতিফলন। দেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর এসএমই খাত। ব্যাংকটি এই সেগমেন্টে এক লাখের বেশি নতুন সিএমএসএমই গ্রাহক যুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে, যা উদ্ভাবন ও তৃণমূল উদ্যোক্তাদের সহায়তার ব্যাপারে ব্যাংকটির ব্যক্ত করা প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। এ ছাড়া ব্যাংকটি করপোরেট ব্যাংকিং সেগমেন্টে ক্লায়েন্ট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৯ হাজার। এভাবে ব্র্যাক ব্যাংকের করপোরেট ব্যাংকিং সেগমেন্ট দেশের বৃহৎ প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।

কৌশলগত ডিজিটাল উদ্যোগ

২০২৪ সালেও ব্র্যাক ব্যাংক ডিজিটাল রূপান্তরযাত্রায় ধারাবাহিক বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছে। নতুন অ্যাকাউন্টগুলোর মধ্যে ৭৭ শতাংশই খোলা হয়েছে ডিজিটাল অ্যাকাউন্ট ওপেনিং প্ল্যাটফর্ম ‘ইকেওয়াইসি’র মাধ্যমে। ২০২৪ সালের শেষে ব্যাংকটির আস্থা অ্যাপ ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৮ লাখ। এই ইন্টারনেট ব্যাংকিং অ্যাপে ২০২৪ সালে ২ কোটি ৭০ লাখের বেশি লেনদেনের মাধ্যমে দেড় লাখ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে, যা গ্রাহকদের সহজ, সুবিধাজনক ও নিরাপদ ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা প্রদানের ব্যাপারে ব্যাংকটির প্রতিশ্রুতি প্রতিফলন।

সমাজের মানুষকে ক্ষমতায়ন এবং টেকসই উন্নয়নকে উৎসাহিতকরণ

ব্র্যাক ব্যাংকের গৃহীত উদ্যোগ আর্থিক সাফল্যের চেয়েও বেশি কিছু। ব্যাংকিং খাতে মোট জামানতবিহীন সিএমএসএমই ঋণের ৪৩ শতাংশই অর্থায়ন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক। ব্যাংকটির ‘উদ্যোক্তা ১০১’ কর্মসূচির আওতায় দেশের ২১০ জন নারী উদ্যোক্তা বিভিন্ন বিষয়ে সহায়তা পেয়েছেন। ৯৭৯ কোটি টাকা কৃষিঋণ বিতরণের মাধ্যমে ব্র্যাক ব্যাংক গ্রামীণ উন্নয়ন এবং নারীর ক্ষমতায়নেও উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে।

বৈশ্বিক খাতে অবদান এবং পরিবেশগত উন্নয়ন

রপ্তানিতে ২.০৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং আমদানিতে ৩.৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কার্যক্রম সম্পন্নের মাধ্যমে ব্র্যাক ব্যাংক বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। সবুজ কারখানা ও টেকসই প্রকল্পে অর্থায়নের মাধ্যমে ব্র্যাক ব্যাংক পরিবেশগত খাতে সহায়তা অব্যাহত রেখেছে।

উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কর প্রদানের মাধ্যমে জাতীয় উন্নয়নে অবদান

একটি দায়িত্বশীল করপোরেট প্রতিষ্ঠান হিসেবে ২০২৪ সালে কর প্রদানের মাধ্যমে ব্র্যাক ব্যাংক সরকারের রাজস্ব কোষাগারে ১ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকার অবদান রেখেছে।

নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ

দেশের আরও বেশি মানুষের কাছে সহজ ও সুবিধাজনক ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দিতে ব্র্যাক ব্যাংক নিজেদের ব্যাংকিং নেটওয়ার্ক সম্প্রসারিত করে চলেছে। ২৬৩টি শাখা ও উপশাখা, ৩২৯টি এটিএম, ৪৪৬টি এসএমই ইউনিট অফিস এবং ১ হাজার ১১৯টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট নিয়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে বিস্তৃত ব্যাংকিং নেটওয়ার্কগুলো মধ্যে অন্যতম অবস্থানে রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক। সর্বাধিক বিস্তৃত ব্যাংকিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে গ্রাহকদের আরও উন্নত, সহজ, সুবিধাজনক ও উপভোগ্য ব্যাংকিং সেবা দিতে ব্র্যাক ব্যাংক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

২০২৪ অর্থবছরে ব্র্যাক ব্যাংকের উল্লেখযোগ্য পারফরম্যান্স

• সমন্বিত শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ২০২৩ সালের ৪.৩০ টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৪ সালে ৬.৯৫ টাকায় উন্নীত হয়েছে।

• শেয়ার প্রতি সমন্বিত নিট অ্যাসেট ভ্যালু (এনএভি) আগের বছরের তুলনায় ৩৭.৬০ টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৪৪.১১ টাকায় উন্নীত হয়েছে।

• শেয়ার প্রতি সমন্বিত নিট ক্যাশ ফ্লো (এনওসিএফপিএস) ২০২৩ সালের ৩৭.০৫ টাকার তুলনায় ২০২৪ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০.৯১ টাকায়।

• ইয়ার-অন-ইয়ার ভিত্তিতে ব্র্যাক ব্যাংকের লোন পোর্টফোলিও বেড়েছে ২০ শতাংশ, যেখানে ইন্ডাস্ট্রি-অ্যাভারেজ ছিল ৭ শতাংশ।

• এ সময় গ্রাহক আমানত ৩২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যেখানে ইন্ডাস্ট্রি-অ্যাভারেজ ছিল ৭ শতাংশ।

• সমন্বিত রিটার্ন অন ইকুইটি (আরওই) এবং রিটার্ন অন অ্যাসেট (আরওএ) যথাক্রমে ১৯.৮০ শতাংশ এবং ১.৫১ শতাংশ।

• ঋণ প্রবৃদ্ধি, দক্ষ তহবিল ব্যবস্থাপনা এবং বেশি নন-ফান্ডেড আয়ের ফলে ইন্টারেস্ট আয়ও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বেড়েছে। এর ফলে ২০২৪ সালে মোট সমন্বিত আয় ৩৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

• ব্যাংকের কৌশল বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মানবসম্পদ, প্রযুক্তি এবং অবকাঠামোতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিনিয়োগের ফলে ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে মোট সমন্বিত পরিচালন ব্যয় ১৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

• বিশেষ করে আন্ডাররাইটিং, মনিটরিং এবং রিকভারির ওপর জোর দেওয়ার ফলে নন-পারফর্মিং লোন (এনপিএল) ২০২৩ সালের ৩.৩৮ শতাংশ থেকে কমে ২০২৪ সালে ২.৬৩ শতাংশ হয়েছে।

প্রবৃদ্ধিযাত্রা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে ব্র্যাক ব্যাংক রেগুলেটরি ক্যাপিটাল বৃদ্ধির প্রতি জোর দিয়েছে। সাব-অর্ডিনেটেড বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে ২০২৪ সালে ব্যাংকটির রেগুলেটরি ক্যাপিটাল ৭ হাজার ১৪৩ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, যা ২০২৩ সালে ছিল ৫ হাজার ৫০৯ কোটি টাকা।

২০২৪ অর্থবছরের এই অসাধারণ অর্জন সম্পর্কে মন্তব্য করে ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘২০২৪ সালে আমাদের এই অর্জিত সাফল্য গ্রাহক, সমাজ ও দেশের প্রতি ব্র্যাক ব্যাংকের অবিচল প্রতিশ্রুতির উদাহরণ। গ্রাহক ও স্টেকহোল্ডারদের আস্থা ও বিশ্বাসকে সঙ্গে নিয়ে আমরা উদ্ভাবন, ক্ষমতায়ন এবং বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নে অবদান অব্যাহত রাখতে বদ্ধপরিকর।’

সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেন আরও বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে ধারাবাহিক সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ সব স্টেকহোল্ডারের কাছে ব্র্যাক ব্যাংক এখন এক আস্থার নাম। করপোরেট সুশাসন, কমপ্লায়েন্স এবং মূল্যবোধনির্ভর ব্যাংকিংয়ে ব্র্যাক ব্যাংক রোল-মডেল হিসেবে স্বীকৃত। এমন অর্জনের জন্য আমি কৃতজ্ঞতা জানাই ব্র্যাক ব্যাংকের গ্রাহকদের প্রতি—তাঁদের অবিচল আস্থার জন্য; আমাদের পরিচালনা পর্ষদের প্রতি—তাঁদের ধারাবাহিক দিকনির্দেশনার জন্য এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি—চ্যালেঞ্জিং সময়েও তাঁদের দূরদর্শী রেগুলেটরি দিকনির্দেশনার জন্য।’

আর্থিক তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিত ব্র্যাক ব্যাংকের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে: https://www.bracbank.com/en/investor-relations#financialStatements

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা ৫ বছরে, অস্ট্রেলিয়ার বিনোদন বাজার বাড়ছে
  • বিদেশি ঋণ পরিশোধ বেড়েছে ২৪ শতাংশ
  • জ্বালানি তেলের দাম কমল লিটারে ১ টাকা
  • শক্তিশালী ব্যালান্স শিট প্রবৃদ্ধিসহ ২০২৪ সালে ব্র্যাক ব্যাংকের উল্লেখযোগ্য সাফল্য
  • আইন সংশোধন করে কি ঠেকানো যাবে ইন্টারনেট বন্ধ
  • ম্যারিকোর ১ হাজার ৯৫০ শতাংশ চূড়ান্ত লভ্যাংশ ঘোষণা
  • অর্থনীতির আকারে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ দশম
  • ইউনাইটেড ফাইন্যান্সের ১০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা
  • সিটি ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
  • সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সের ১২ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা