রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপের পরদিন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গেও ফোনে কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রায় এক ঘণ্টার এ আলাপচারিতা ‘বেশ ভালো ছিল’ বলে জানান তিনি। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ইউক্রেনের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মালিকানা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তরের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। তবে জেলেনস্কি জোর দিয়েছেন– এটা কেবল রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে থাকা জাপোরিঝিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্ষেত্রেই ঘটতে পারে।

জেলেনস্কি জানান, তিনি ও ট্রাম্প জাপোরিঝিয়া পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র মার্কিন তত্ত্বাবধানে রাখার বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। যুদ্ধক্ষেত্রের মধ্যে থাকা ইউরোপের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু হতে দুই বছর সময় লাগবে। ইউরোপ ও ইউক্রেনের জন্য এ বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করা খুবই জরুরি।

বৃহস্পতিবার বিবিসি জানায়, ইউক্রেনের পাশে দাঁড়াতে জোরালো প্রস্তুতি নিচ্ছেন ইউরোপের নেতারা। এ উপলক্ষে নরওয়ের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে বৃহস্পতিবার ওসলো পৌঁছান জেলেনস্কি। একই দিনে লন্ডনে ২০ দেশের শীর্ষ সামরিক কমান্ডারদের সম্মেলন হতে যাচ্ছে। ইউক্রেনের সমর্থনে গঠিত কোয়ালিশন অব উইলিংয়ের অংশ হিসেবে এ সম্মেলনে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কমান্ডাররা অংশ নিচ্ছেন।
 
ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মধ্যে সৃষ্ট ফাটল আরও স্পষ্ট হচ্ছে। ইউরোপে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাজ্য। কিন্তু সেখানেও রাজনীতিকরা এখন ভিন্নমত পোষণ করছেন। তারা যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়াই সামনে এগোনোর কথা বলছেন। ইইউ সম্মেলনে অংশ নিয়ে ব্রিটেনের রক্ষণশীল এমপি তোবাইস এলউড বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়াই আমাদের ভাবতে হবে। ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর সাবেক এ সদস্য বলেন, ‘আমাদের সেই পৃথিবীর কথা চিন্তা করতে হবে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের পেছনে নেই।’

এদিকে ট্রাম্প-পুতিনের যে ফোনালাপ হয়েছে, তাতে জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তিনি বিশ্বাস করেন, ট্রাম্পের নেতৃত্বে এ বছরই স্থায়ী শান্তি অর্জন করা সম্ভব হতে পারে। জেলেনস্কি ট্রাম্পকে জানান, তিনি রাশিয়ার সঙ্গে আংশিক যুদ্ধবিরতিতে রাজি।

গত মাসের শুরুতে হোয়াইট হাউসে জেলেনস্কির সফরের সময় ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর বাদানুবাদকে ঘিরে যে অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি হয়েছিল, ফোনালাপের পর পরিস্থিতি তাঁর থেকে ভিন্ন বলে মনে করা হচ্ছে। ওভাল অফিসে বৈঠকের পর বুধবারই প্রথমবারের মতো দুই প্রেসিডেন্ট সরাসরি কথা বললেন।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট জানান, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি আংশিক যুদ্ধবিরতিতে রাজি। ইউক্রেন নতুন করে আরও এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পেয়েছে। তবে কতগুলো এফ-১৬ যুদ্ধবিমান তারা পেয়েছে, তা জানাতে চাননি তিনি। ২০২৪ সালের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি এই অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান প্রথমবার পায় ইউক্রেন। সেগুলো ডেনমার্ক ও নেদারল্যান্ডস দিয়েছিল।

রয়টার্স জানায়, ইউক্রেনে আংশিক যুদ্ধবিরতির কারিগরি বিষয় নিয়ে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ওয়াশিংটন ও কিয়েভের প্রতিনিধি দল সৌদি আরবে বৈঠক করবে। ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপের পর প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এ তথ্য জানিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে তিনি বলেছেন, আংশিক যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন ও আওতা বৃদ্ধির জন্য কারিগরি দিক সমাধানে আমাদের প্রতিনিধি দলকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য মার্কিন ও ইউক্রেনীয় দল দ্রুতই সৌদি আরবে এক বৈঠকের আয়োজন করতে যাচ্ছে।

রাশিয়া ও ইউক্রেনের ১৭৫ বন্দি বিনিময়
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে ১৭৫ বন্দি বিনিময় হয়েছে। বুধবার তারা যুদ্ধের এক অন্যতম বৃহৎ বন্দি বিনিময় করেছে। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানান, মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে গুরুতর আহত সেনা ও যোদ্ধা ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে রাশিয়ায় আটক রাখা হয়েছিল।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইউক র ন ও ইউক র ন ইউক র ন র আম দ র ইউর প

এছাড়াও পড়ুন:

জমজমাট নাটকের পর কিংসের শিরোপা উৎসব

সময়ের চেয়েও বেশি দীর্ঘ হলো অপেক্ষা। উত্তেজনার বাঁকে বাঁকে লুকিয়ে ছিল ফুটবলীয় রোমাঞ্চ। শেষ ১৫ মিনিট যেন পরিণত হলো রূপকথার উপসংহারে—যেখানে আবাহনীর স্বপ্ন থেমে যায়, আর বসুন্ধরা কিংস খুঁজে পায় চতুর্থ ফেডারেশন কাপের সোনালি মুহূর্ত।

বৃষ্টির ছন্দে বিভ্রান্ত হওয়া ফাইনাল আবার শুরু হলো এক সপ্তাহ পর। ১-১ সমতায় থাকা ম্যাচের বাকি অংশ গড়ালো ময়মনসিংহ জেলা স্টেডিয়ামে। যেখানে শুরু থেকেই ১০ জনের দল নিয়ে খেলতে নামে কিংস। অতিরিক্ত সময়ে কিছুই হল না। তবে অপেক্ষার পুরস্কার মিলল টাইব্রেকারে।

সেখানে বাজিমাত করলেন কিংসের গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ। আবাহনীর দ্বিতীয় শট আটকে দিয়ে দলকে দিলেন এগিয়ে যাওয়ার আত্মবিশ্বাস। আর শেষ শটটি নেন ব্রাজিলিয়ান ড্যাসিয়েল, যা গোললাইন পার হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই উৎসবে ফেটে পড়ে কিংস শিবির।

আরো পড়ুন:

যে কারণে এবারের লিগ জয়কে এগিয়ে রাখছেন সালাহ

পাঁচ গোলের রোমাঞ্চকর ফাইনালে শেষ হাসি বার্সার

কিছুদিন আগেই আবাহনীর কাছে টাইব্রেকারে হেরেছিল কিংস। এবার সেই হারের উত্তরটা যেন মিলল একই মঞ্চে, একই কৌশলে— তবে ভিন্ন ফলাফলে। মোরসালিন, তপু, ইনসান, জোনাথন আর ড্যাসিয়েল— কেউই ভুল করেননি। আবাহনীর একমাত্র ব্যর্থ শটটি ছিল নাইজেরিয়ান এমেকার, যা ঠেকিয়ে দেন শ্রাবণ। আর মিরাজুলের চতুর্থ শট, যা প্রথমবার ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন শ্রাবণ। কিন্তু রেফারির সিদ্ধান্তে আবার নিতে হয়। তাতেও গোল হলেও ততক্ষণে কিংস হয়ে গেছে অপ্রতিরোধ্য।

এদিন মাত্র ১৫ মিনিট খেলা হলেও মাঠের উত্তাপ ছিল পূর্ণদৈর্ঘ্য নাটকের মতো। শুরুতেই হলুদ কার্ড দেখেন আবাহনীর সুমন রেজা ও অধিনায়ক হৃদয়। আগের ম্যাচেও হলুদ-লাল কার্ডে ভরা ছিল দৃশ্যপট। ফুটবল এখানে শুধু কৌশলের খেলা নয় তা যেন হয়ে ওঠে মানসিক স্থিতির পরীক্ষাও।

এই জয়ে বসুন্ধরা কিংস চতুর্থবারের মতো ফেডারেশন কাপ জয় করল। একই সঙ্গে আবাহনীকে প্রথমবার কোনো ফাইনালে হারানোর কৃতিত্বও অর্জন করল তারা। অতীতে দুই ফাইনালে পরাজিত হয়েছিল কিংস। এবার তারা সেই রেকর্ড মুছে দিল নির্ভার ফুটবলে।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দেশ গড়ার নায়কদের জন্য ফ্লাইট এক্সপার্টের বিশেষ উদ্যোগ
  • প্রথমবারের মতো দেশে সংযোজিত এসইউভি গাড়ি আনল প্রোটন
  • এক সপ্তাহে এভারেস্ট জয় কি সত্যিই সম্ভব
  • সম্পর্কের ৫০ বছর: বাংলাদেশে প্রথমবার চীনা ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শনী
  • জমজমাট নাটকের পর কিংসের শিরোপা উৎসব
  • বন্ধু রাশিয়াকে সাহায্য করতে সেনা পাঠায় উত্তর কোরিয়া