সামাজিক অপরাধ মানুষের দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নানা পদক্ষেপ নিলেও তাতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে মানুষ। ঘরে–বাইরে নানা ধরনের অপরাধের শিকার হচ্ছে তারা, বিশেষ করে নারী ও শিশু। কিছুদিন আগে মাগুরায় শিশু ধর্ষণ নিয়ে সারা দেশে তোলপাড় হয়ে গেল। বিক্ষুব্ধ জনতা অভিযুক্ত ব্যক্তির বাড়ি পর্যন্ত পুড়িয়ে দিয়েছে। এটা ছিল নৃশংসতার বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। যদিও আমরা মনে করি, কোনো অবস্থায় আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া যাবে না।

মাগুরার শিশু ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত সব আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন। প্রধান অভিযুক্ত হিটু শেখ আদালতে ১৪৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে নিজের দোষও স্বীকার করেছেন। কেবল মাগুরার ঘটনা নয়, বিভিন্ন স্থানে যেভাবে নারী ও শিশু নির্যাতন বাড়ছে, তাতে যেকোনো নাগরিকেরই উদ্বিগ্ন হওয়ার কথা। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে ২৯৪ জন নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার ৯৬ জন, যার মধ্যে ৪৪ জনই শিশু। মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন এমএসএফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফেব্রুয়ারি মাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে বেশি।

গত বুধ ও বৃহস্পতিবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে ২টি দলবদ্ধ ধর্ষণ ও ১৪টি ধর্ষণের খবর প্রকাশিত হয়েছে। শুক্রবার প্রথম আলোর খবরে বলা হয়, এক দিনে ধর্ষণের শিকার হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন সাত নারী ও শিশু। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এসব ধর্ষণের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে। ২৭ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘের প্রজনন স্বাস্থ্যবিষয়ক গ্রুপ ইউএনএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ৭০ শতাংশ নারী জীবনের কোনো না কোনো সময় শারীরিক, যৌন নির্যাতনসহ নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হন।

আমাদের ধারণা ছিল, মাগুরার শিশু ধর্ষণের বিরুদ্ধে সারা দেশে যে জাগরণ তৈরি হয়েছে, তাতে শিশু ও নারী ধর্ষণের ঘটনা কমবে। কিন্তু ওপরের পরিসংখ্যান ভিন্ন চিত্রই তুলে ধরে। জুলাই অভ্যুত্থানের এক শহীদের কবর জিয়ারত করে বাড়িতে ফেরার পথে তাঁর মেয়ে ধর্ষণের শিকার হন। ঘটনাটি ঘটে ১৮ মার্চ পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার একটি  গ্রামে। যে ব্যক্তি জুলাই অভ্যুত্থানে জীবন দিলেন, তাঁর কন্যাকে এই রাষ্ট্র ও সমাজ নিরাপত্তা দিতে পারল না! সরকারের নীতিনির্ধারকেরা আসামিদের বিচার করার কথা বলেছেন। কিন্তু শহীদকন্যার মর্যাদা কি আমরা ফিরিয়ে দিতে পারব?

সরকার বলছে, ধর্ষণের সব ঘটনায় অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। দ্রুত বিচার করার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতা থামানোর জন্য সরকার, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও তৎপর হতে হবে। সব ধরনের সম্প্রচারমাধ্যম, পত্রপত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সচেতনমূলক প্রচার চালাতে হবে।

বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন করেছে, যাতে প্রস্তাবিত আইনে ধর্ষণ মামলার তদন্ত ও বিচারের সময়সীমা কমিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে। শিশু ধর্ষণের মামলার বিচার আলাদাভাবে করার কথাও বলা হয়েছে। 

কিন্তু এসব আইন তো প্রয়োগ করা হবে অপরাধ সংঘটনের পর। অপরাধটি যাতে সংঘটিত না হয়, সে বিষয়ে সরকারের কি কিছুই করণীয় নেই? আর অপরাধী ধরা পড়লেই যে শাস্তি হবে, তার নিশ্চয়তা কী? প্রথম আলোর অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছিল যে নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার ৩ শতাংশ অভিযুক্ত ব্যক্তি শাস্তি পান। বাকিরা আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে যান। এসব ফাঁকফোকর বন্ধ করা প্রয়োজন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র অপর ধ র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

‎পূজাকে  ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি

‎নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, আইনসৃঙ্খলা স্বাভাবিক রয়েছে, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে সকল ধর্মমত, সকল  সম্প্রদায় তারা একত্রিত হয়েছে।

সকলেই সার্বিক সহয়তা করছে যাতে করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা উৎসব সুন্দর ভাবে পজলন করতে পারে। পূজাকে ঘিরে  একটি গোষ্ঠি চাইবে পূজা উৎসব নষ্ট করে দেয়ার জন্য। 

সে জন্য আমাদের তৎপরতা রয়েছে। আমাদের  গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। তার পাশাপাশি র‍্যাব, বিজিবি,  সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশবাহিহনী সবাই কাজ করছে যাতে করে সুন্দর ভাবে পূজা উৎসব শেষ করতে পারি।

‎‎মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর)  শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ৫নং ঘাটে দূর্গা পূজার প্রতিমা বিসর্জনের স্থান পরিদর্শনকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

‎দূর্গা পূজা বিজয়া দশমী শেষে প্রতিমা বিসর্জনের সময় যেকোনো অপ্রীতিকর দূর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সুন্দর ভাবে প্রতিমা বিসর্জনের স্থান নিরাপদ রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন জেলা প্রশাসক।

‎‎জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, নারায়ণগঞ্জের ২২৩টি পূজা মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে পূজা উদযাপনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে এবং সম্প্রীতি বজায় রেখে বর্তমানে পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে।

‎‎এসময় তিনি প্রতিটি মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে ও নির্বিঘ্নে পূজা অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাযথ সহযোগিতার নির্দেশনা দেন।

‎‎তিনি বলেন, সকলে মিলে সব উৎসব উদযাপন করাই বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরব।

‎‎এসময় জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পটিয়ায় ব্যবসায়ীকে অপহরণ, দুই ঘণ্টা পর উদ্ধার
  • পুলিশের তৎপরতায় দুটি মোটরসাইকেল উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৪
  • ‎পূজাকে  ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি
  • নুরুল হকের ওপর হামলার ঘটনায় জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন
  • ১৭ কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ, নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুই হাজার সদস্য
  • ফরিদপুরে অবরোধ শনিবার পর্যন্ত স্থগিত
  • আসন্ন নির্বাচনে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার নির্দেশ ডিএমপি কমিশনারের
  • ফতুল্লার ৫ ইউনিয়নে স্বেচ্ছাসেবক দলের নতুন কমিটি গঠনে তৎপরতা