হিথ্রো বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু
Published: 22nd, March 2025 GMT
যুক্তরাজ্যের হিথ্রো বিমানবন্দরে সীমিত পরিসরে ফ্লাইট চলাচল শুরু হয়েছে। তবে পূর্ণাঙ্গ পরিষেবা আজ শনিবার থেকে চালু হওয়ার আশা করছে কর্তৃপক্ষ। বিমানবন্দরের কাছের একটি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে (সাবস্টেশন) ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর বিদ্যুৎ-বিভ্রাটের কারণে গতকাল শুক্রবার দিনভর ফ্লাইট চলাচল বন্ধ ছিল। খবর বিবিসির।
এতে বিশ্বজুড়ে উড়োজাহাজ চলাচলের সময়সূচি ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়।
পরে স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টায় সীমিত আকারে উড়োজাহাজ চলাচল শুরু করে। হিথ্রো বিশ্বের পঞ্চম ব্যস্ততম বিমানবন্দর। প্রায় ৮০টি দেশ থেকে এই বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ চলাচল করে। প্রতিদিন প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার যাত্রী হিথ্রো দিয়ে যাতায়াত করেন।
আরো পড়ুন:
পাল্টা জবাবে রাশিয়ার এক কূটনীতিককে বহিষ্কার করল যুক্তরাজ্যে
ফিলিস্তিনি পতাকা নিয়ে লন্ডনের বিগ বেন টাওয়ারে ওঠা সেই ব্যক্তি গ্রেপ্তার
বিমানবন্দরটি বন্ধের কারণে গতকাল ১ হাজার ৩০০টির বেশি ফ্লাইট বাতিল হওয়ার কথা ছিল। এতে ব্যাপক ভোগান্তির মুখে পড়েন যাত্রীরা।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ২৩ মিনিটের দিকে হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে প্রায় দেড় মাইল উত্তরে হেইস শহরে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে আগুন লাগে। ওই রাতেই ২টার দিকে বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়। আগুনের ফলে বিমানবন্দর বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, পরিষেবা স্বাভাবিক হতে অন্তত ২৪ ঘণ্টা সময় লাগবে। তবে কর্মচারীরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছেন।
শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে ধীরে ধীরে ফ্লাইট চলাচল শুরু হয় বিমানবন্দরে। অনুমতিপ্রাপ্ত ফ্লাইটগুলো অবতরণ করতে শুরু করে। বিমানবন্দরের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানানো হয়, প্রাথমিকভাবে অল্প কিছু ফ্লাইটকে চলাচলের অনুমতি দিলেও পুরোপুরিভাবে বিমান চলাচল শুরু হবে স্থানীয় সময় শনিবার।
শুক্রবার রাতে বিমানবন্দরের কর্তৃপক্ষের এক বিবৃতিতে বলা হয়, বিমানবন্দরের কর্মীবাহিনী এবং বিদ্যুৎ পরিষেবা কর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলেই ফের চালু করা সম্ভব হয়েছে ফ্লাইট পরিচালনা।
কীভাবে বিদ্যুৎকেন্দ্রে আগুন লাগল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত শেষে লন্ডন পুলিশ জানিয়েছে, এতে নাশকতার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।
লন্ডনের ফায়ার সার্ভিস বিভাগ জানিয়েছে, সাবস্টেশনে শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে ধারণা করছেন তারা।
এদিকে বিমানবন্দর বন্ধের ফলে কেবল যাত্রীদের দুর্ভোগই হয়নি, বরং বিমান সংস্থাগুলোর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে, যারা প্রশ্ন তুলেছে এত গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা কীভাবে ব্যর্থ হতে পারে।
বিমানবন্দরের প্রধান নির্বাহী থমাস উল্ডবাই জানিয়েছেন, জরুরি ব্যাকআপ ব্যবস্থা কাজ করলেও তা পুরো বিমানবন্দর চালানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না।
বিমান চলাচল বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ইউরোপীয় বিমানবন্দরগুলোতে শেষবার এত বড় আকারে বিঘ্ন ঘটেছিল ২০১০ সালে আইসল্যান্ডীয় আগ্নেয়গিরির ছাইয়ের মেঘের কারণে, যার ফলে প্রায় ১ লাখ ফ্লাইট বাতিল করতে হয়েছিল।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’