নালিতাবাড়ীতে ধানক্ষেতের পাশে দেওয়া বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে একটি বন্যহাতির মৃত্যু হয়। শুক্রবার ময়নাতদন্ত শেষে সেখানেই হাতিটি মাটিচাপা দেওয়া হয়। এ ঘটনার পর থেকেই গারো পাহাড়ের হাতিগুলো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

সঙ্গী হারিয়ে হাহাকার করছে বন্যহাতির পাল। সন্ধ্যা হলেই তারা জড়ো হচ্ছে বৈদ্যুতিক ফাঁদ পেতে পুরুষ হাতি হত্যার স্থানটিতে। তাদের বিক্ষিপ্ত ডাকে বিষাদের সুর টের পাচ্ছে এলাকাবাসী। ক্রুদ্ধ আচরণও করছে সঙ্গী হারানো হাতির দলটি। পায়ে পিষ্টে নষ্ট করছে কৃষকের ধানক্ষেত। সড়কে সড়কে ছড়িয়ে পড়ে হাতির পাল। এ ঘটনায় আশপাশের গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সড়কে হাতি বিচরণের কারণে মানুষ আর বাইরে বের হওয়ার সাহস করতে পারেনি, ঘরবন্দি হয়ে পড়ে।

স্থানীয়রা জানান, গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে নালিতাবাড়ী উপজেলার পূর্ব সমশ্চুড়া গ্রামে পাহাড়ের ঢালে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে একটি বন্যহাতি মারা যায়। পরদিন শুক্রবার হাতিটিকে মাটিচাপা দেওয়া হয়। প্রথমে একদল হাতি এদিকে চলে আসে। এর পর তাদের সঙ্গে যুক্ত হয় আরও হাতির পাল। মৃত হাতিটিকে খোঁজার চেষ্টা করে তারা। না পেয়ে চিৎকার করতে থাকে।

এক পর্যায়ে মৃত হাতিটিকে যেখানে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে, সেই জায়গাটি খুঁজে পায় হাতির দল। তারা পা দিয়ে জায়গাটি মাড়িয়ে ফেলে। এর পর হাতির পাল মধুটিলা ইকোপার্ক-সংলগ্ন সীমান্ত সড়কে অবস্থান নেয়। সড়ক দিয়ে মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ওই এলাকার পাহাড়ি জমিতে হাতির পাল কৃষকের ছয় থেকে সাত একর বোরো ধানক্ষেত পায়ে পিষে বিনষ্ট করে।

হাতির মৃত্যুর ঘটনায় রেঞ্জ কর্মকর্তা আল আমিন বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলায় কৃষক জিয়াউর রহমান ও অজ্ঞাত পরিচয় আরও দু’জনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ কৃষক জিয়াউর রহমানকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছেন নালিতাবাড়ী থানার ওসি সোহেল রানা।

ময়মনসিংহ বন বিভাগের মধুটিলা ইকোপার্কের রেঞ্জ কর্মকর্তা দেওয়ান আলী বলেন, দু’দিন ধরে হাতির পাল মৃত হাতিটিকে মাটিচাপা দেওয়ার স্থানের কাছাকাছি অবস্থান করছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বন বিভাগের সদস্যরা নিরবচ্ছিন্ন নজরদারি চালাচ্ছেন। স্থানীয় লোকজনকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

৫ দফা দাবিতে জামায়াতের বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু

আগামী ফেব্রুয়ারিতে জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ ৫ দফা দাবিতে জামায়াতে ইসলামীর পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ ফটকে এই সমাবেশ শুরু হয়।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করছেন জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল। দলের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর কমিটির নেতারা সমাবেশে বক্তব্য দেবেন। জামায়াতের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

জামায়াত সূত্র জানিয়েছে, সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হবে। মিছিলটি বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ ফটক থেকে বের হয়ে পুরানা পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেসক্লাব ও মৎস্য ভবনের পাশ দিয়ে শাহবাগ পর্যন্ত যেতে পারে।

এর আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংলগ্ন আল ফালাহ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ৫ দফা দাবিতে তিনদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে দলটি।

জামায়াতের দাবিগুলো হলো- জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজন করা; আগামী জাতীয় নির্বাচনে সংসদের উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করা; অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা; ফ্যাসিস্ট সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।

একই দাবিতে আগামীকাল ১৯ সেপ্টেম্বর দেশের সব বিভাগীয় শহরে বিক্ষোভ মিছিল এবং ২৬ সেপ্টেম্বর দেশের সব জেলা বা উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল করবে জামায়াতে ইসলামী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ