রুদ্ধশ্বাস লড়াই জিতে সেমিফাইনালে পর্তুগাল
Published: 24th, March 2025 GMT
উয়েফা নেশন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে ১-০ গোলে পিছিয়ে ছিল পর্তুগাল। কিন্তু রোববার (২৩ মার্চ) দিবাগত রাতে দ্বিতীয় লেগে অতিরিক্ত সময়ে ডেনমার্ককে ৫-২ গোলে হারিয়ে (দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৩) সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে রোনালদো-ত্রিনকাওরা।
ম্যাচের ৭৬তম মিনিট পর্যন্ত পর্তুগালের বিদায়ের শঙ্কা ছিল। কারণ, ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেনের গোলে ডেনমার্ক ৩-২ ব্যবধানে এগিয়ে ছিল। তবে পর্তুগালের ফ্রান্সিসকো ত্রিনকাও বদলি হিসেবে নেমে গোল করে পর্তুগালকে সমতায় ফিরিয়ে ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে নিয়ে যান। অতিরিক্ত সময়ের শুরুতেই তিনি আরও এক গোল করে দলকে এগিয়ে দেন। আর শেষ দিকে গঞ্জালো রামোস গোল করে পর্তুগালকে সেমিফাইনালের টিকিট এনে দেন।
অবশ্য ম্যাচের শুরুতেই মাত্র তিন মিনিটের মাথায় পর্তুগাল এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায়। এ সময় ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো পেনাল্টি পান। তবে তার নেওয়া শট দারুণভাবে রক্ষা করেন ডেনিশ গোলরক্ষক কাসপার স্মাইকেল।
আরো পড়ুন:
ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে ভিন্ন ভাবনায় তপু বর্মন
‘আমাদের হাতে এখনও দ্বিতীয় লেগ আছে’
প্রথমার্ধের শেষ দিকে ডেনমার্কের জোয়াকিম আন্দারসেন হেড করতে গিয়ে বল নিজেদের জালেই জড়িয়ে দেন। তাতে দুই লেগ মিলিয়ে ১-১ সমতায় ফিরে। বিরতির পর ৫৬ মিনিটে রাসমুস ক্রিস্টেনসেনের হেড পর্তুগালের গোলরক্ষককে পরাস্ত করলে ডেনমার্ক আবার এগিয়ে যায় (২-১)। তবে ৭২ মিনিটে ব্রুনো ফার্নান্দেজের শট পোস্টে লেগে ফিরে এলে রোনালদো ফিরতি শটে বল জালে পাঠিয়ে ম্যাচে সমতা ফেরান (২-২)।
এর মাত্র চার মিনিট পরেই প্যাট্রিক ডরগু ও ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেনের সমন্বিত আক্রমণ থেকে গোল আদায় করে ডেনমার্ক আবারও ৩-২ ব্যবধানে এগিয়ে যায়।
এরপরই নায়ক হয়ে ওঠেন ত্রিনকাও। নির্ধারিত সময়ের শেষ দিকে এবং অতিরিক্ত সময়ের শুরুতে দুটি চমৎকার গোল করে পর্তুগালকে এগিয়ে নেন (৪-৩)। এরপর ১০৫তম মিনিটে দিওগো জোটার একটি গোল অফসাইডের কারণে বাতিল হয়। তবে শেষ মুহূর্তে রামোস খালি পোস্টে বল জড়িয়ে ৫-৩ ব্যবধানে দলের জয় নিশ্চিত করেন, নিশ্চিত করেন সেমিফাইনালে। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ জার্মানি।
এই ম্যাচের মাধ্যমে পর্তুগাল ২০২ মিনিট গোল করতে না পারার খরা কাটায়। যা ২০২২ সালের জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাদের ১৮৮ মিনিট গোলশূন্য থাকার রেকর্ডের চেয়েও দীর্ঘ ছিল। তবে তাদের প্রথম গোলটি প্রতিপক্ষ আন্দারসেনের আত্মঘাতী গোলের মাধ্যমে আসে।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল স ম ফ ইন ল পর ত গ ল গ ল কর
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।