টাকা ছাপিয়েও ব্যাংক রক্ষা কঠিন হয়ে পড়েছে: পরিকল্পনা উপদেষ্টা
Published: 24th, March 2025 GMT
ক্ষমাতচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে দুর্নীতির শিকার হওয়া ব্যাংকগুলো বাঁচানোর সব চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বর্তমান সরকার। তবে এ ব্যাংকগুলো রক্ষা করা কঠিন। দেউলিয়া হওয়ার হাত থেকে এসব ব্যাংক রক্ষায় অনেক টাকা ছাপাতে হচ্ছে। সোমবার উন্নয়ন বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ডেভেলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ–ডিজেএফবি আয়োজিত উন্নয়ন সংলাপ ও ইফতার মাহফিলে এসব কথা বলেছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড.
টাকা ছাপানো প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে টাকা পাচার হচ্ছে না। ব্যাংকগুলো থেকে টাকা লোপাট হচ্ছে না। এখন প্রশ্ন হতে পারে, তাহলে অর্থনীতি আরও কেন শক্ত হচ্ছে না। কারণ ব্যাখায় তিনি বলেন, ব্যাংকগুলোকে এখন রক্ষা করা হচ্ছে। কোনো ব্যাংককেই আর দেউলিয়া হতে দেওয়া হচ্ছে না। এতে অসুবিধা হচ্ছে, অনেক টাকা ছাপাতেও হচ্ছে। অনেক ব্যাংকে আর্থিকভাবে অন্তত কিছু মূলধন দেওয়া হচ্ছে। সেটা খুব কঠিন কাজ তবু ব্যাংকিং খাতকে তো রক্ষা করা যাচ্ছে।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ দিককার অর্থনীতির পরিস্থিতি তুলে ধরতে উপদেষ্টা বলেন, অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক একের পর এক খারাপ হতে থাকায় ওই সরকার টিকে থাকতে পারত না। অর্থনীতিবিদরা মনে করতেন, বিভিন্ন সূচকের দিক থেকে অর্থনীতি যেদিকে যাচ্ছিল, যেভাবে যাচ্ছিল, এটা অবধারিত ছিল যে, কোনো না কোনো সময় এই সরকার আসলে টিকতে পারবে না। অর্থপাচার, ব্যাংকিং খাত ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পতনের কথা উল্লেখ করেন তিনি। যেভাবে রিজার্ভ কমে যাচ্ছিল তাতে বৈদেশিক লেনদেন সম্ভব হত না। ব্যাংকগুলোর যারা প্রতিষ্ঠাতা, উদ্যোক্তা তারাই ব্যাংকের অর্থ নিয়ে তাতে লালবাতি জ্বালিয়ে দিয়েছে। পুরো ব্যাংক খালি করে যেভাবেই হোক বৈধ-অবৈধভাবে বিদেশে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তারা তো পরিষ্কার জানতেন যে, এই ব্যাংক আর টিকবে না। এ অবস্থা চললে কিছু ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যেত। ওই অবস্থা থেকে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ব্যাংক খাতের পুনর্গঠনে পরিকল্পনা করা হয়েছে। ব্যাংকিং খাত কী করে আস্তে আস্তে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে তা ওই পরিকল্পনায় রয়েছে।
এখন পাচার হচ্ছে না, রপ্তানি বাড়ছে। রেমিট্যান্স বাড়ছে তারপরও কেন রিজার্ভ বাড়ছে না- এর ব্যাখ্যায় উপদেষ্টা বলেন, বিদেশি ঋণ পরিশোধ বাড়ছে। আগামীতে আরও বাড়বে। এছাড়া বৈদেশিক সাহায্য কমেছে। প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ–এফডিআই কমেছে। আর বর্তমান পরিস্থিতিতে এফিডিআই আসার কথা নয়। অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়ার কথা জানান তিনি।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
গভীর রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ইফতিখারুল আমল মাসঊদের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বুধবার গভীর রাতে বিনোদপুরের মণ্ডলের মোড় এলাকায় তাঁর বাড়ির দরজার সামনে এ ঘটনা ঘটে। তবে এতে কেউ আহত হয়নি।
মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মালেক প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সেখানে তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়েছে। তবে কে বা কারা এটি করেছে, সে বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগও কেউ করেনি। তাঁরা দুর্বৃত্তদের শনাক্তের চেষ্টা করছেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইফতিখারুল আমল মাসঊদের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তিনি সাড়া দেননি। তবে ঘটনার পর তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টে লিখেছেন, ‘ফ্যাসিবাদী অপশক্তির জুলুম-নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলাম। কোনো রক্তচক্ষুর ভয়ংকর হুমকি অন্যায়ের প্রতিবাদ করা থেকে বিরত রাখতে পারেনি। তবে তারা কখনো বাড়ি পর্যন্ত আসার ঔদ্ধত্য দেখাতে পারেনি। কিন্তু আজ আমার বাড়ির দরজায় গভীর রাতের অন্ধকারে হামলার সাহস দেখিয়েছে কাপুরুষের দল! এরা কারা? এদের শিকড়সহ উৎপাটনের দাবি জানাই।’
এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ভেবেছিলাম বাড়ির গেটে কিংবা গেটের বাইরে। কিন্তু গিয়ে দেখলাম একেবারে বাড়িতে হামলা হয়েছে। গতকালই ওনার অসুস্থ বাবা হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে বাসায় এসেছেন। জানি না শেষ কবে একজন শিক্ষকের বাড়িতে রাতের আঁধারে এভাবে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। আমরা শঙ্কিত, স্তম্ভিত।’
এদিকে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে এ সমাবেশের আয়োজন চলছে।