চীন সফরে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা, গতি এসেছে অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজে
Published: 25th, March 2025 GMT
চট্টগ্রামের আনোয়ারায় প্রস্তাবিত চীনের অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজ আট বছরের বেশি সময় ধরে স্থবির। অর্থনৈতিক অঞ্চলটিতে বিপুল বিনিয়োগের সম্ভাবনা থাকলেও এখন পর্যন্ত এর প্রকল্প প্রণয়ন (ডিপিপি) ও ডেভেলপারের সঙ্গে চূড়ান্ত চুক্তি (ডেভেলপার অ্যাগ্রিমেন্ট) হয়নি। তবে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের আসন্ন চীন সফরকে কেন্দ্র করে চীনের অর্থনৈতিক অঞ্চল নিয়ে হঠাৎ তোড়জোড় শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে প্রথম আলোকে বলেন, গত এক মাসের মধ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চলটির ডিপিপি তৈরি ও ডেভেলপার নিয়োগ নিয়ে কাজ অনেকটা এগিয়েছে। তবে সম্পূর্ণ কাজ শেষ হতে আরও দুই থেকে তিন মাসের মতো সময় লাগতে পারে। প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরে এ–বিষয়ক অনানুষ্ঠানিক কথা হতে পারে, যদিও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়তো আসবে না।
বাংলাদেশে বিদেশি ও চীনা বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বেজা চীনা অর্থনৈতিক ও শিল্পাঞ্চল (সিইআইজেড) তৈরির উদ্যোগ নেয়। ২০১৬ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ঢাকা সফরে আসেন। তখন চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ৭৮৩ একর জায়গায় অর্থনৈতিক অঞ্চলটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। এ প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য চীন সহজ শর্তে ঋণ দিচ্ছে।
দেশে এখন পর্যন্ত তিনটি বিদেশি অর্থনৈতিক অঞ্চলের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে অবস্থিত জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজ শেষ হয়েছে। বিনিয়োগকারীরা সেখানে বিনিয়োগ করছেন। তবে থমকে আছে ভারতীয় ও চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজ।
বেজার কর্মকর্তারা বলেন, ২০১৬ সালে চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হলেও এ নিয়ে দীর্ঘ সময়ক্ষেপণ করা হয়। এই অর্থনৈতিক অঞ্চলের বাস্তবায়ন নিয়ে সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারেরও আগ্রহ কম ছিল। সব মিলিয়ে এর কাজ সেভাবে এগোয়নি।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়। এর সাত মাস পরে আগামীকাল ২৬ মার্চ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস চার দিনের সফরে চীন যাচ্ছেন। প্রধান উপদেষ্টার বেইজিং সফরে বেশ কিছু ঘোষণা আসতে পারে বলে বাংলাদেশ সরকার ও চীনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
যে কারণে দেরি হয়েছে২০১৬ সালে চীনের প্রেসিডেন্টের সফরে ঠিক হয়েছিল, অর্থনৈতিক অঞ্চলটির অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ করবে চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড (সিএইচইসি)। তবে শেষ পর্যন্ত সিএইচইসির সঙ্গে চুক্তি হয়নি। বেজার এক কর্মকর্তা বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না হারবার ২০১৭ সালের নভেম্বরে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব নজরুল ইসলামকে ঘুষ সেধেছিল, এ ঘটনার জেরে চায়না হারবারের সঙ্গে চুক্তি করেনি সরকার।
এভাবে চলে যায় পাঁচ বছর। ২০২২ সালের ১৬ জুলাই চীনের পক্ষ থেকে চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশনকে (সিআরবিসি) নতুন ডেভেলপার হিসেবে মনোনীত করা হয়। এরপর কাজ অনেকটা ধীরগতিতে এগোতে থাকে। ফলে গত আড়াই বছরে সিআরবিসির সঙ্গেও ডেভেলপার চুক্তি চূড়ান্ত হয়নি।
বেজার সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে প্রথম আলোকে বলেন, সিআরবিসির সঙ্গে চুক্তির নানা শর্ত নিয়ে আলোচনা চলছে। এই প্রক্রিয়া অনেকটা শেষের দিকে। তব সব প্রক্রিয়া শেষ করে ডেভেলপার চুক্তি সম্পন্ন হতে আরও দুই থেকে তিন মাস সময় লাগতে পারে।
অন্যদিকে অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) তৈরিতেও দীর্ঘ সময় নিয়েছে সরকার। এখনো প্রকল্পের ডিপিপি প্রণয়ন হয়নি। বেজার ওই কর্মকর্তা বলেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে ডিপিপির অনুমোদন আটকে ছিল। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর নতুন করে ডিপিপি অনুমোদনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। সর্বশেষ চলতি মাসে কিছু সংশোধনসহ আবার ডিপিপি দাখিলের জন্য বেজাকে বলা হয়েছে। এই প্রক্রিয়া শেষ হতেও মাস দুয়েক সময় লাগতে পারে।
অর্থনৈতিক অঞ্চলের বাইরের বা অফসাইট উন্নয়নকাজ, যেমন রাস্তাঘাট, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি সংযোগ প্রভৃতির কাজ করবে বেজা। সে জন্য ডিপিপি প্রণয়ন করতে হয়। অর্থনৈতিক অঞ্চলের অভ্যন্তরীণ উন্নয়নকাজ, যেমন ভূমি উন্নয়ন, প্লট তৈরি, সীমানাপ্রাচীর তৈরি, অভ্যন্তরীণ সড়ক নির্মাণ, বিনিয়োগকারীদের কাছে জমি ইজারা দেওয়া প্রভৃতি কাজ করবে ডেভেলপার কোম্পানি। সে জন্য বেজার সঙ্গে অংশীদারির ভিত্তিতে যৌথ চুক্তি করতে হবে। এ দুই কাজ এখনো ঝুলে আছে।
চীনের অর্থনৈতিক অঞ্চল যেসব বাধার কারণে আটকে ছিল, সেগুলো সমাধানের কাজ করছেন বলে জানান বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী। গত রোববার রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে বেজা ও বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, ‘নানা কারণে চীনের অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রকল্প আটকে ছিল। সেই পথগুলো খুলে দেওয়ার চেষ্টা করছি। গত এক মাসে এই অর্থনৈতিক অঞ্চলের বেশ কিছু জিনিস নিয়ে কাজ করা হয়েছে, তাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতিও হয়েছে। আশা করছি, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এ বিষয়ে একটা অ্যাগ্রিমেন্ট (চুক্তি) স্বাক্ষর বা কোনো ঘোষণা দেওয়া যাবে।’
আশিক চৌধুরী আরও বলেন, প্রস্তাবিত চীনের অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের জন্য ইতিমধ্যে বেশ কিছু বিনিয়োগকারী অপেক্ষা করছেন। এখন ওই অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজ শুরু হলে বিনিয়োগকারীদের জন্য আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া যাবে।
অর্থনৈতিক অঞ্চলের সর্বশেষ অবস্থাবেজার তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর পূর্ব তীরে আনোয়ারা উপজেলার বেলচূড়া এলাকায় চীনের জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন টানেল থেকে এই অর্থনৈতিক অঞ্চলের দূরত্ব প্রায় দুই কিলোমিটার। এর অবকাঠামো উন্নয়নে ২৮ কোটি মার্কিন ডলার খরচ করার প্রতিশ্রুতি ছিল চায়না হারবারের। বেজার সঙ্গে চায়না হারবারের শেয়ার ধারণ–সংক্রান্ত চুক্তি অনুযায়ী, এই প্রকল্পে চায়না হারবারের ৭০ শতাংশ শেয়ার থাকার কথা ছিল। বাকি ৩০ শতাংশের শেয়ার থাকার কথা বেজার হাতে।
তবে মালিকানা চুক্তি হলেও উন্নয়ন চুক্তি না হওয়ায় অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়নের কাজ এগিয়ে নেয়নি চায়না হারবার। যদিও ইতিমধ্যে সেখানে একটি প্রশাসনিক ভবন, দুটি সংযোগ সড়ক, কিছু অংশের সীমানাপ্রাচীর ও ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ করেছিল তারা। এখন চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশনের (সিআরবিসি) সঙ্গে ডেভেলপার চুক্তি হলে তারা বাকি কাজ সম্পন্ন করবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর মকর ত হ রব র র প রকল প স আরব স র জন য ক জ কর প রস ত সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিষ্ঠার ৮ বছরেও নিজস্ব ভবন পায়নি ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড
ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, শেরপুর এবং জামালপুর চার জেলা নিয়ে ২০১৭ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড। প্রতিষ্ঠার ৮ বছর পার হলেও শিক্ষা বোর্ডটি এখনও পায়নি নিজস্ব ভবন। বর্তমানে নগরীর কাঠগোলায় পৃথক দু’টি ভাড়া ভবনে চলছে শিক্ষা বোর্ডের কার্যক্রম। শিক্ষা উপকরণ রাখার জন্য আরও তিনিটি আলাদা ভবন ভাড়া নেয়া হলেও এগুলোর অবস্থাও নাজুক।
ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ভবন ১ ও ২ এর মধ্যবর্তী দূরত্ব দুই কিলোমিটার। আবার গোডাউন গুলোর অবস্থানও নগরীর ভিন্ন ভিন্ন জায়গায়। এতে দুই অফিস ও গোডাউনগুলোতে কাজ করতে বেগ পোহাতে হচ্ছে কর্মকর্তা কর্মচারীদের।
তাছাড়া জনবল সংকটেও ধুকছে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড। এখন পর্যন্ত স্বায়ত্তশাসিত এ প্রতিষ্ঠানটির নির্দিষ্ট কোনো অর্গানোগ্রাম নেই। ১২২ জন কর্মকর্তা কর্মচারীর চাহিদা থাকা সত্ত্বেও প্রতিষ্ঠানটি চলছে মাত্র ২২ জন কর্মকর্তা ও ১৯ জন কর্মচারী দিয়ে। স্বল্প সংখ্যক জনবল দিয়ে চার জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কার্যক্রম পরিচালনা করতে খেতে হচ্ছে তাদের।
ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের কাঠগোলা বাজারে অবস্থিত ভবন ১ এ কার্যক্রম চলে চেয়ারম্যান, সচিব, হিসাব ও আই টি শাখার। এই ভবনের নিচ তলায় গাদাগাদি করে থাকেন আনসার সদস্যরা। আর ভবন ২ এ আছে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তর, স্কুল কলেজ পরিদর্শন শাখা।
বোর্ড সূত্রে জানা যায়, দুটি মূল ভবন ও তিনটি গোডাউন বাবদ প্রতিমাসে ৭ লাখ টাকা ভাড়া গুনতে হয়। শিক্ষা বোর্ডে নিজস্ব ভবন থাকলে বছরে কোটি টাকা ভাড়া বেঁচে যেত সরকারের।
ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. শহিদুল্লাহ যোগদান করেছেন চলতি বছরের জানুয়ারিতে। তিনি সমকালকে জানান, ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের ভবন তৈরির জন্য চারটি জমি প্রাথমিকভাবে দেখা হয়েছে। এরমধ্যে রহমতপুর বাইপাস এলাকায় ১.৯৫ একরের একটি জমি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ময়মনসিংহের শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলীদের সমন্বয়ে ভিজিট করা হয়েছে।
পরে প্রতি ফ্লোরে ১০ হাজার স্কয়ার ফিটের ১০ তলা ভবনের চাহিদা দিয়ে শিক্ষা প্রকৌশলে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আট বছরে কেন নিজস্ব ভবন হয়নি শিক্ষা বোর্ডের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আমি এ বছরই বোর্ডে যোগদান করেছি। আগে জমি কেনা ও ভবনের কাজ কেন হয়নি তা আগের চেয়ারম্যানরা বলতে পারবেন।
সরেজমিন দেখা যায়, ভবনে ১ ও ২ এ ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা পরীক্ষার খাতা ও আনুষাঙ্গিক জিনিসপত্র নিতে এসে ভিড় জমাচ্ছেন। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানরা এই ভবন থেকে ওই ভবনে বারবার যাতায়াত করছেন। দুই ভবনের দূরত্ব ২ কিলোমিটার এবং গোডাউন গুলো আরও দূরত্বে অবস্থিত হওয়ায় এগুলো সংগ্রহ করতে তাদের যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে।
শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, দুই ভবন ও গোডাউনে দৌড়ঝাঁপ করে তাদের কাজের গতি কমে যাচ্ছে। এ অবস্থায় নিজস্ব ক্যাম্পাসে স্থায়ী বিল্ডিং জরুরী হয়ে পড়েছে। এছাড়া তাদেরকে অফিসের কাজ সামলে বিভিন্ন জেলায় জেলায় গিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করতে হয়।
এসব সমস্যা নিয়ে বিভিন্ন অরাজক পরিস্থিতি সামাল দিতে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রফেসর ড. দিদারুল ইসলামের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। ভিন্ন ভিন্ন ভবনে কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করছেন তারা।
জানা যায়, প্রয়োজনীয় জনবল ও যন্ত্রপাতির অভাবে আইটি শাখার কাজ স্বয়ংসম্পূর্ণভাবে করতে পারছে না ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড। এক্ষেত্রে ফলাফল তৈরি ও রেজিস্ট্রেশন করার জন্য যশোর শিক্ষা বোর্ডের সহায়তা নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে তাদের।
বোর্ড চেয়ারম্যান আরও জানান, আমরা চেয়েছিলাম এই পরিস্থিতিতে মূল দুটি ভবনকে একীভূত করতে। ভবন এক ছেড়ে দিয়ে ভবন ২ এর কাছাকাছি একটি বাড়ি ভাড়া নিতে পারলে বোর্ডের কর্মকর্তা কর্মচারীদের ও সেবা গ্রহীতাদের অনেকটা হয়রানি মুক্ত করা যেত। কিন্তু এক্ষেত্রে এক নম্বর ভবনের থাকা আইটি শাখাকে ট্রান্সফার করে নতুন ভবনে নিয়ে যেতে অনেক টাকা খরচ হবে। এতে সরকার ব্যাপক পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। এই চিন্তা করে নতুন কোন বাড়িভাড়াও নিতে পারছি না।
জানা যায়, ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে সরকারিভাবে বরাদ্দ একটিমাত্র গাড়ি বোর্ড চেয়ারম্যান ব্যবহার করছেন। বৃহৎ পরিসরে পরিচালিত শিক্ষা বোর্ডের জন্য আরও দুইটি গাড়ি সরকারের কাছে চাওয়া হলেও এখন পর্যন্ত তা পাওয়া যায়নি। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে ময়মনসিংহ থেকে কর্মকর্তারা নেত্রকোনা, জামালপুর ও শেরপুর গেলে ভাড়া করা গাড়িতে তাদের যেতে হয়।
তাছাড়া একটি ভবন থেকে আরেকটি ভবনে কর্মকর্তাদের যাতায়াতের জন্য পরিবহনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বোর্ডের কর্মকর্তা কর্মচারীরা।
নিজস্ব ভবন ও পরিবহন ব্যবস্থা নিয়ে সমকালের সাথে কথা হয় বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর সৈয়দ আখতারুজ্জামানের সাথে। তিনি জানান, ইতিপূর্বে ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার শিক্ষা বোর্ডকে ৩ একর জায়গা দিতে চেয়েছিল। কিন্তু সাবেক বোর্ড চেয়ারম্যান অতিরিক্ত অহংকার করে এই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। বর্তমানে জমি কিনে নিজস্ব ভবন তৈরি করার মত পর্যাপ্ত টাকা বোর্ডের হাতে নেই।
তবে বর্তমান চেয়ারম্যান নিজস্ব জমি ও ভবন তৈরি করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। সরকারের কাছে প্রকল্পের মাধ্যমে জমি কিনে ভবন তৈরি করে দেয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছে। সে অনুযায়ী কাজ চলছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে দ্রুত সময়ের ভিতরেই নিজস্ব ভবনে শিক্ষা বোর্ডের কার্যক্রম চালাতে পারব বলে আশা করছি।
চলতি বছরের ১৫ মার্চ ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের জমি কেনার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে সাইট ভিজিটে যান ময়মনসিংহ শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইউসুফ আলী। তিনি জানান, ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড একটা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। নগরের বাইপাস মোড়ে ১.৯৫ একর জমি কেনার জন্য তারা আমাদেরকে চিঠি দেয়। সে অনুযায়ী জমি পরিদর্শন করে ২৩ মার্চ প্রধান প্রকৌশলী বরাবর আমি একটি রিপোর্ট পাঠাই।
এখন শিক্ষা প্রকৌশল এবং ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে বাকি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করলেই জমি কেনার প্রক্রিয়া শুরু হবে।