দেশের জ্বালানি চাহিদা মেটাতে পৃথক দুটি আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে স্পট মার্কেট থেকে ২ কার্গো এলএনজি আমদানি করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে সিঙ্গাপুরভিত্তিক মেসার্স গানভর সিঙ্গাপুর প্রা.লি. ১ কার্গো এবং যুক্তরাজ্যভিত্তিক টোটাল এনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার লি. ১ কার্গো এলএনজি সরবরাহ করবে। এতে মোট ব্যয় হবে এক হাজার ৩৬৬ কোটি ৮৭ লাখ ৮২ হাজার ৪০০ টাকা।

সূত্র জানায়, দেশের বিদ্যমান ও ক্রমবর্ধমান গ্যাসের চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে দেশীয় উৎপাদিত গ্যাসের পাশাপাশি কক্সবাজারের মহেশখালীতে স্থাপিত দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনালের মাধ্যমে জি টু জি ভিত্তিতে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় কাতার থেকে ২.

৫ এমটিপিএ (মিলিয়ন টন পার এনাম) এবং ওমান হতে ১.০ এমটিপিএ এলএনজি অর্থাৎ মোট ৩.৫ এমটিপিএ (৫৬ কার্গো) এলএনজি কেনা হচ্ছে। এ ছাড়া, চাহিদার আলোকে অ্যানুয়াল ডেলিভারি প্রোগ্রামের আওতায় স্পট মার্কেট থেকেও এলএনজি কেনা হয়।

আগামী জানুয়ারি-ডিসেম্বরে স্পট মার্কেট থেকে ৫৯ কার্গো এলএনজি আমদানির লক্ষ্যে গত বছরের নভেম্বর মাসে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর পেট্রোবাংলা ২ কার্গো এলএনজি কেনার পৃথক দুটি প্রস্তাব খনিজ সম্পদ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে পাঠায়।  

উল্লেখ্য, ‘পিপিআর-২০০৮’-এর বিধি-৮৫ অনুযায়ী মাস্টার সেল অ্যান্ড পারচেজ (এমএসপিএ) স্বাক্ষরকারী ২২টি প্রতিষ্ঠানকে এলএসপি সফটওয়্যারের মাধ্যমে কোটেশন দাখিলের জন্য ই-মেইলে পৃথক দুটি চিঠি পাঠানো হয়। ‘পিপিআয়, ২০০৮’ এর বিধি ৮৫ অনুসারে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে স্বাক্ষরকারী ২২টি প্রতিষ্ঠানের তালিকা গত ১০ মার্চ চূড়ান্ত করা হয়। দর প্রস্তাবকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ কর্তৃক নির্ধারিত সময়ে দাখিলকৃত ৩টি কোটেশন দরপত্র ও প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি কারিগরি ও আর্থিকভাবে মূল্যায়ন করে সুপারিশ সম্বলিত একটি প্রতিবেদন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের নিকট দাখিল করে। দাখিলকৃত ৫টি কোটেশনের মধ্যে ৫টি কোটেশন রেসপন্সিভ হয়। 

৫টি প্রতিষ্ঠানের দাখিলকৃত দর বিশ্লেষণে দেখা যায়, ১ম সর্বনিম্ন প্রস্তাবিত একক দর ১৪.০৮ মা.ডলার/এমএমবিটিইউ, যা মেসার্স গানভর সিঙ্গাপুর প্রা.লি. দাখিল করেছে। প্রতিষ্ঠানটির সরবরাহতব্য এলএনজির পরিমাণ ৩২,০০,০০০ এমএমবিটিইউ। স্বাক্ষরিত এমএসপিএ অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ কম-বেশি বিবেচনায় সরবরাহতব্য এলএনজির পরিমাণ সর্বোচ্চ ৩৩,৬০,০০০ এমএমবিটিইউ হতে পারে। প্রতি এমমেবিটিইউ ১৪.০৮ মা.ডলার হিসেবে ৩৩,৬০,০০০ এমএমবিটিইউ এএলএনজি আমদানিতে প্রয়োজনীয় অর্থের পরিমাণ ৪৭,৩০৮,৮০০,০০ মা. ডলার (ভ্যাট এবং এআইটি ব্যতীত)। গত ২৩ মার্চ সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের মুদ্রা বিনিময় হার ১ মা.ডলার ১২২ টাকা হিসেবে এ অর্থের পরিমাণ ৫৭৭,১৬,৭৩,৬০০.০০ টাকা (ভ্যাট ও এআইটি ব্যতীত)। এলএনজি আমদানিতে ১৫% ভ্যাট ও ২% এআইটি প্রযোজ্য বিবেচনায় সর্বমোট ১৭% ভ্যাট এবং এআইট’র জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের পরিমাণ ৯৮,১১,৮৪,৫১২,০০ টাকা। অর্থাৎ ৩৩,৬০,০০০ এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানিতে প্রয়োজনীয় অর্থের পরিমাণ হবে মোট (৫৭৭,১৬,৭৩,৬০০.০০ + ৯৮,১১,৮৪,৫১২,০০)=৬৭৫,২৮,৫৮,১১২.০০ টাকা (ভ্যাট ও এআইটিসহ)।

বাকি ১ কার্গো (১৬তম) এলএনজির জন্য আন্তর্জাতিক কোটেশন আহ্বান করা হলে মোট ৩টি দরপ্রস্তাব জমা পড়ে। এর মধ্যে যুক্তরাজ্যভিত্তিক মেসার্স টোটালএনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার লি. প্রতি ইউনিটের দাম ১৪.৪২ মা.ডলার উল্লেখ করে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে এই এলএনজি সরবরাহ করবে। প্রতিষ্ঠানটির সরবরাহতব্য এলএনজির পরিমাণ ৩২,০০,০০০ এমএমবিটিইউ। স্বাক্ষরিত এমএসপিএ অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৫% কম-বেশি বিবেচনায় সরবরাহতব্য এলএনজির পরিমাণ সর্বোচ্চ ৩৩,৬০,০০০ এমএমবিটিইউ হতে পারে। প্রতি এমএমবিটিইউ ১৪.৪২ মা.ডলার হিসেবে ৩৩,৬০,০০০ এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানিতে প্রয়োজনীয় অর্থের পরিমাণ ৪৮,৪৫১,২০০,০০ মা. ডলার (ভ্যাট ও এআইটি ব্যতীত)। ২৩ মার্চ সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের মুদ্রা বিনিময় হার ১ মা.ডলার ১২২ টাকা হিসেবে এ অর্থের পরিমাণ ৫৯১,১০,৪৬,৪০০,০০ টাকা (ভ্যাট ও এভাইটি ব্যতীত)।

এলএনজি আমদানিতে ১৫% ভ্যাট ও ২% এআইটি প্রযোজ্য বিবেচনায় সর্বমোট ১৭% ভ্যাট এবং এআইটি এর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের পরিমাণ ১০০,৪৮,৭৭,৮৮৮.০০ টাকা। অর্থাৎ ৩৩,৬০,০০০ এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানিতে প্রয়োজনীয় অর্থের পরিমাণ হবে সর্বমোট (৫৯১,১০,৪৬,৮০০,০০+ ১০০,৪৮,৭৭,৮৮৮,০০১- ৬৯১,৫৯,২৪,২৮৮.০০ টাকা (ভ্যাট ও এআইটিসহ)। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে স্পট মার্কেট থেকে ২ কার্গো এলএনজি আমদানিতে মোট ব্যয় হবে একহাজার ৩৬৬ কোটি ৮৭ লাখ ৮২ হাজার ৪০০ টাকা।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন/জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ কর্তৃক নির্ধারিত গ্যাসের মূল্যহার আদেশ অনুযায়ী এলএনজি চার্জ খাতে প্রাপ্ত অর্থ থেকে পেট্রোবাংলা পরিশোধ করবে।

ঢাকা/হাসনাত/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রস ত ব আমদ ন ত সরবর হ ব যত ত অন য য় ব ট ইউ র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশে আতঙ্ক-উত্তেজনা, ট্রাম্প আসলে কী চান

যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর ভাইস অ্যাডমিরাল রিচার্ড কোরেল ভেবেছিলেন, দেশটির পারমাণবিক বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে তাঁর নিয়োগ নিশ্চিত হওয়া নিয়ে গত বৃহস্পতিবার শুনানি সহজভাবেই শেষ হবে। তবে তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণের আগের দিন বুধবার রাত ৯টা ৪ মিনিটে সে আশা ভেঙে গেছে।

ওই সময় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে বিশ্বকে চমকে দেন। বলেন, তিনি মার্কিন বাহিনীকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা অবিলম্বে শুরু করতে বলেছেন। তাঁর যুক্তি, যুক্তরাষ্ট্র এ ক্ষেত্রে রাশিয়া ও চীনের পেছনে থাকতে পারে না।

ট্রাম্প বলেন, ‘পারমাণবিক অস্ত্রে রাশিয়া দ্বিতীয় এবং চীন বেশ দূরে তৃতীয় অবস্থানে। কিন্তু দেশটি পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের সমপর্যায়ে উঠে আসতে পারে।’

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সিনেটে সশস্ত্র বাহিনী কমিটির প্রায় ৯০ মিনিটের শুনানিতে ট্রাম্পের মন্তব্য নিয়ে বারবার কোরেলকে প্রশ্ন করা হয়। ট্রাম্পের মন্তব্যে অনেক আইনপ্রণেতাই এ সময় ছিলেন বিভ্রান্ত। এ থেকে বোঝা যায়, রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ওয়াশিংটন ও এর বাইরে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন।

মার্কিন কর্মকর্তারা পরিষ্কার করেননি যে ট্রাম্প পারমাণবিক অস্ত্র সরবরাহ ব্যবস্থার পরীক্ষা করতে বলছেন, নাকি বিস্ফোরক পরীক্ষায় ৩৩ বছরের নিষেধাজ্ঞা শেষ করতে চাইছেন। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ট্রাম্পের নির্দেশ বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে ও প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়াতে পারে, যা শীতল যুদ্ধের ভয়ংকর স্মৃতি ফিরিয়ে আনে।

কমিটির শীর্ষ ডেমোক্র্যাট সদস্য সিনেটর জ্যাক রিড কোরেলকে প্রশ্ন করেন, যুক্তরাষ্ট্র আবারও পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা শুরু করলে তা কি বিশ্বে পারমাণবিক অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বাড়াবে এবং অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করবে।

কোরেল বলেন, ‘যদি আমাকে স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডের (স্ট্র্যাটকম) কমান্ডার হিসেবে নিশ্চিত করা হয়, আমার কাজ হবে, পারমাণবিক পরীক্ষাবিষয়ক যেকোনো আলোচনা সম্পর্কে সামরিক পরামর্শ দেওয়া।’

ভাইস অ্যাডমিরাল কোরেলকে গত সেপ্টেম্বরে ট্রাম্প স্ট্র্যাটকমের প্রধান করার জন্য মনোনীত করেন। স্ট্র্যাটকম পারমাণবিক হামলা প্রতিরোধ ও আক্রমণের সক্ষমতা নিয়ে কাজ করে। কোরেল পুরো শুনানিতে সতর্কভাবে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।

পারমাণবিক অস্ত্রে রাশিয়া দ্বিতীয় ও চীন বেশ দূরে তৃতীয় অবস্থানে। কিন্তু দেশটি পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের সমপর্যায়ে উঠে আসতে পারে।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্ট

শুনানির এক পর্যায়ে স্বতন্ত্র সিনেটর অ্যাঙ্গাস কিং প্রশ্ন করেন, ট্রাম্প কি পারমাণবিক ডিভাইসের বিস্ফোরক পরীক্ষা নয়, বরং ক্ষেপণাস্ত্র বা অন্য সরবরাহ ব্যবস্থা পরীক্ষার কথা বলছেন কি না।

জবাবে কোরেল বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্টের উদ্দেশ্য জানি না, তবে এটি এমন একটি ব্যাখ্যা হতে পারে, আমি তা মেনে নিই।’

দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে গত বৃহস্পতিবার মুখোমুখি বৈঠকে যোগ দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সি চিন পিং

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিশ্বকে ১৫০ বার ধ্বংস করার মতো পারমাণবিক অস্ত্র আমাদের আছে: ট্রাম্প
  • দুই সপ্তাহের মধ্যে তেহরানে সুপেয় পানি ফুরিয়ে যেতে পারে
  • চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে
  • জ্বালানি খাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন
  • বাজারে আগাম সবজি আসতে দেরি, দাম চড়া
  • যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন
  • টমাহক কত দূরে আঘাত হানতে পারে, রাডারে কেন ধরা পড়ে না
  • সামুদ্রিক মাছে ভরপুর আড়ত, দাম কেমন
  • যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশে আতঙ্ক-উত্তেজনা, ট্রাম্প আসলে কী চান
  • ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দিতে পেন্টাগনের সায়, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাম্প