ঈদ বলে ‘আবদার’ করে বাড়তি ভাড়া নিচ্ছেন বাসমালিকেরা
Published: 26th, March 2025 GMT
এবার ঈদুল ফিতরে লম্বা ছুটি পেয়েছেন সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবীরা। তাই আগেভাগে বাড়ির পথ ধরছেন বাণিজ্যিক শহর চট্টগ্রামে বসবাস করা লোকজন। তবে এখনো সড়কপথে ঈদযাত্রা পুরোদমে জমে ওঠেনি। নগরের আন্তজেলা বাস কাউন্টারগুলোতে এবার অগ্রিম টিকিট কেনার ভিড় নেই। কিন্তু অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের পুরোনো অভিযোগ তুলেছেন যাত্রীরা। ঈদে ‘আবদার’ করে টাকা বাড়তি নিচ্ছেন বলে স্বীকারও করেছেন বাসমালিক ও কাউন্টারের কর্মীরা।
বাসমালিক ও কাউন্টারের কর্মীরা বলছেন, যাওয়ার সময় ভর্তি করা যাত্রী নিয়ে গেলেও ফেরার সময় খালি আসতে হয়। তাই ৫০ থেকে ১০০ টাকা ঈদ উপলক্ষে চেয়ে নেওয়া হয়। এর বেশি নেওয়ার সুযোগ নেই। এবার বন্ধ বেশি হওয়ায় আগেভাগে অনেকে শহর ছেড়েছেন। আগামী দু-তিন দিনে চাপ বাড়বে। অনেকে অনলাইনে কেটে ফেলেন টিকিট। কাউন্টারে তাই ভিড় কম থাকে।
চট্টগ্রাম নগরের দামপাড়া থেকে ঢাকা, কক্সবাজার, রংপুর, রাজশাহীসহ বিভিন্ন জেলার বাস ছেড়ে যায়। এ ছাড়া নগরের কদমতলী এলাকা থেকে নোয়াখালী, কুমিল্লা, ফেনী, লক্ষ্মীপুরসহ বিভিন্ন জেলার বাস ছাড়ে। শহরের প্রবেশদ্বার এ কে খান এলাকা থেকে কমবেশি সব জেলার বাস কাউন্টার রয়েছে। মূলত এই তিন এলাকাতেই যাত্রীদের ভিড় দেখা যায়।
আজ বুধবার সকালে এই তিন এলাকা ঘুরে যাত্রীদের তেমন ভিড় দেখা যায়নি। বিকেলের দিকে যাত্রীদের চাপ থাকে বলে জানিয়েছেন কাউন্টারের বিক্রয়কর্মীরা। যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ১০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া বেড়েছে। কিছু কাউন্টারের ৩০০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি চাওয়া হচ্ছে। বেশি বেড়েছে উত্তরবঙ্গের বাসগুলোর ভাড়া।
রংপুর-রাজশাহীর ভাড়া বেড়েছে
নগরের ষোলশহর এলাকায় একটি কারখানায় চাকরি করেন ফজলুল কাদের। বছরে দুই ঈদে পরিবার নিয়ে রংপুর যান তিনি। সব মিলিয়ে প্রতিবছর চার থেকে পাঁচবার বাড়িতে যাওয়া হয় তাঁর। আজ নগরের এ কে খান এলাকায় কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি জানান, অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েই টিকিট কেটেছেন তিনি। তাঁর সঙ্গে আছেন স্ত্রী ও এক ছেলে।
ফজলুল কাদের বলেন, স্বাভাবিকের তুলনায় ৩০০ টাকা দিয়ে টিকিট কেটেছেন তিনি। স্বাভাবিক সময়ে চট্টগ্রাম থেকে রংপুরের ভাড়া ১ হাজার ৩০০ টাকা (নন এসি)। তবে এখন ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তা–ও বলছে টিকিট নেই। অথচ কাউন্টারে যাত্রী নেই।
একই রুটের আরেক যাত্রী সালাউদ্দিন বলেন, কাউন্টারে গেলে বলে টিকিট নেই। কিন্তু বাড়তি দাম দিলে টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। ১০০ বাড়তি মানা যায়, কিন্তু ২০০-৩০০ টাকা তো সবার পক্ষে সম্ভব হয় না। যাত্রীদের জিম্মি করে প্রতি ঈদেই বাড়তি টাকা নেওয়া হয়।
কাউন্টারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, রংপুর ছাড়াও রাজশাহী, বগুড়া,পাবনা, নাটোরসহ উত্তরবঙ্গের ভাড়া বেড়েছে। রাজশাহী রুটে নন এসি বাসের ১ হাজার ৩০০ টাকার ভাড়াও এখন বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা দাবি করা হচ্ছে। যাত্রীদের আশঙ্কা ঈদের আগমুহূর্তে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত দাম চাইতে পারে কাউন্টারগুলো। গত বছর এ সময়ে দাম বাড়িয়েছিল তাঁরা।
শ্যামলী পরিবহনের বিক্রয়কর্মী মোহাম্মদ নাসির বলেন, উত্তরবঙ্গে ভাড়া বেড়েছে। ভর্তি গেলেও আসার সময় বাস খালি আসতে হয়। তাই ৫০-১০০ টাকা বাড়তি ‘আবদার’ করে নেওয়া হচ্ছে। এর অতিরিক্ত নেওয়া হচ্ছে না। ঈদ উপলক্ষে এটুকুই ভাড়া বেড়েছে।
‘বাড়তি নেওয়ার সুযোগ নেই’
ঈদযাত্রায় বাসভাড়া বাড়তি নেওয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরগুলো। আন্তজেলা বাস মালিক সমিতির পক্ষ থেকে একই বক্তব্য জানানো হলেও ৫০-১০০ টাকা বাড়তি নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন তাঁরা। ঈদযাত্রায় বাড়তি বাসভাড়ার বিষয়টির প্রমাণ পেয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। ইতিমধ্যে জরিমানাও করা হয়েছে চারটি প্রতিষ্ঠানকে।
গত মঙ্গলবার সকালে নগরের এ কে খান ও অলংকার মোড় এলাকার বাস কাউন্টারগুলোতে অভিযান চালায় সংস্থাটি। এ সময় নির্ধারিত দামের চেয়ে বাড়তি দাম নেওয়াসহ বিভিন্ন অপরাধে সাবিনা এন্টারপ্রাইজ, সোনিয়া এন্টারপ্রাইজ, জি এস ট্রাভেলস ও তিশা প্লাটিনাম এন্টারপ্রাইজকে ৪৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে উপপরিচালক (চট্টগ্রাম) মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ বলেন, ‘অভিযানে আমরা বাড়তি মূল্যে টিকিট বিক্রি হতে দেখেছি। ঈদে যাত্রীদের যাতে ভোগান্তি না হয়, সেটি নিশ্চিত করতে অভিযান অব্যাহত থাকবে। বাড়তি মূল্যের অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নেব।’
আন্তজেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কফিল উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ভাড়া চার্ট অনুযায়ী নেওয়া হচ্ছে। বাড়তি ভাড়া নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে কেউ কেউ ঈদ উপলক্ষে ৫০-১০০ টাকা হয়তো নিচ্ছেন। তবে মালিক সমিতির পক্ষ থেকে বাড়তি ভাড়া না নিতে বলা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ৩০০ ট ক ১০০ ট ক ন এল ক নগর র
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই পুনর্জাগরণ উদযাপন উপলক্ষে সভা, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও রক্তদান কর্মসূচি
জুলাই পুনর্জাগরণ-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে সভা, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও রক্তদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (২৮ জুলাই) সকালে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালের সভাকক্ষে জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মুহম্মদ মুশিউর রহমান'র সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আলমগীর হুসাইন।
নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. জহিরুল ইসলাম'র সঞ্চালনায় সভায় হাসপাতালের চিকিৎসক, সেবিকা ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারিগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে অত্র হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগে জুলাই পুনর্জাগরণ উদযাপন উপলক্ষে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আলমগীর হুসাইন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মুহম্মদ মুশিউর রহমান, জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আমিনুল হক, এমটি প্যাথলজি শামীম আল মামুন ও সিনিয়র স্টাফ নার্স মাসুমা প্রমূখ।