পৃথিবীর খুব কাছ দিয়ে চলে গেল বিশাল এক গ্রহাণু
Published: 26th, March 2025 GMT
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, কোটি কোটি বছর আগে এক গ্রহাণুর আক্রমণে পৃথিবী থেকে ডাইনোসরসহ অনেক প্রাণী ধ্বংস হয়ে গেছে। সেই গ্রহাণু সৌরজগতের কোন এলাকা থেকে এসেছিল, তা নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। সেই রহস্যের সমাধান না হলেও মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন গ্রহাণু পৃথিবীর খুব কাছ দিয়ে চলে যায়। আজ বুধবার ‘২০২৪ টিএন১৭’ নামের এমনই এক গ্রহাণু পৃথিবীর খুব কাছ দিয়ে চলে গেল।
বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, ২০২৪ টিএন১৭ নামের গ্রহাণুটি আজ বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টা ৩৪ মিনিটে প্রায় ৩০ লাখ মাইল দূর থেকে পৃথিবীকে পাশ কাটিয়ে গেছে। গ্রহাণুটির ব্যাস প্রায় ৫৪০ ফুট, যেখানে মিসরের গিজার পিরামিডের উচ্চতা ৪৪৯ ফুট। পৃথিবীর পাশ দিয়ে চলে যাওয়ার সময় গ্রহাণুটির গতি ছিল ঘণ্টায় ৪৮ হাজার মাইলের বেশি।
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার মানদণ্ড অনুযায়ী, যদি কোনো গ্রহাণু পৃথিবীর ৪৬ লাখ ৫০ হাজার মাইলের মধ্যে চলে আসে ও ব্যাস ১৪০ মিটারের বেশি হয়, তখন সেটিকে সম্ভাব্য বিপজ্জনক আখ্যা দেওয়া হয়। ২০২৪ টিএন১৭ গ্রহাণুটি নাসার বিপজ্জনক তালিকায় আসার দুটি শর্তই পূরণ করেছিল। এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের রিডিং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী জেমস ও’ডোনোগু জানিয়েছেন, ২০২৪ টিএন১৭ বেশ বড় গ্রহাণু। একটি বড় শহরকে ধ্বংস করার জন্য যথেষ্ট বড়।
১১ বছর আগে ২০২৪ টিএন১৭ গ্রহাণুটি আবিষ্কার করেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, গ্রহাণুটি উপবৃত্তাকার কক্ষপথে ঘুরে ১ হাজার ২৪০ দিনে একবার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করছে। নাসা জানিয়েছে, ১৪০ মিটার ব্যাসের চেয়ে বড় প্রায় ১১ হাজারের মতো গ্রহাণু রয়েছে, যেগুলো মাঝেমধ্যেই পৃথিবীর কাছাকাছি চলে আসে।
সূত্র: ডেইলি মেইল
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জাতিসংঘ স্থায়ী মিশনে জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে বিশেষ অনুষ্ঠান
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও নিউ ইয়র্কস্থ বাংলাদেশের কনস্যুলেট জেনারেল কর্তৃক যৌথভাবে আয়োজিত এই বিশেষ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) এই বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, যুবসমাজ শুধু আমাদের ভবিষ্যৎই নয়, বাংলাদেশে তারা আমাদের ‘বর্তমান’। এক বছর আগে, তাদের হাত ধরেই সমতা, স্বচ্ছতা এবং ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনের দাবি সার্বজনীন জন-আকাঙ্ক্ষায় রূপ নেয়।
আরো পড়ুন:
জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের অফিস খোলার সিদ্ধান্ত সরকারের বড় অসতর্কতা: মঞ্জু
গাজাকে নিশ্চিহ্ন করার কোনো ন্যায্যতা থাকতে পারে না: গুতেরেস
তৌহিদ হোসেন আরো বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে শুরু হওয়া এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান লক্ষ্য- সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য ব্যাপক প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার।
তিনি তার বক্তব্যে বিগত এক বছরে বর্তমান সরকারের গৃহীত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপগুলোর কথা তুলে ধরেন।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতাকে বৈশ্বিক বাস্তবতার সঙ্গে অত্যন্ত সঙ্গতিপূর্ণ মন্তব্য করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন বলেন, তারুণ্যের প্রতি আস্থা রাখলে তারা জাতি গঠনের কেন্দ্রে দাঁড়াতে পারে। তিনি বলেন, যারা এক সময় মিছিলের অগ্রভাগে ছিল, আজ তারা নীতিনির্ধারণে অংশ নিচ্ছে, আর আগামী দিনের দিকনির্দেশনা ঠিক করতে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিচ্ছে। বাংলাদেশে তারুণ্যের নেতৃত্ব জাতিসংঘের যুববিষয়ক নীতি ও কার্যক্রমের সঙ্গে দৃঢ়ভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে তিনি উল্লেখ করেন।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার সফল গণআন্দোলনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জাতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠানমালার আলোকে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের মিলনায়তনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে জুলাই গণঅভ্যুত্থান সম্পর্কিত তথ্যচিত্র এবং পোস্টার, দেয়াললিখন ও আলোকচিত্র প্রভৃতির প্রদর্শনীর মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনৈতিক নবযাত্রায় যুব সমাজের অনন্য অবদানকে উদযাপন করা হয়। বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, জাতিসংঘের কর্মকর্তাবৃন্দসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণে এই বিশেষ আয়োজনে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি এবং জাতিসংঘের ইয়ুথ অফিসের প্রতিনিধি ড. সুধা বালাকৃষ্ণণ বক্তব্য রাখেন।
ড. বালাকৃষ্ণণ তার বক্তব্যে বলেন, জাতিসংঘ সমাজ পরিবর্তনে যুবসমাজের সত্যিকারের অংশগ্রহণকে সর্বদাই উৎসাহিত করে থাকে। বাংলাদেশে রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় পরিবর্তনের অগ্রভাগে থাকা যুবশক্তি তাই অন্যান্য সমাজের জন্যও অনুপ্রেরণার উৎস হতে পারে।
উল্লেখ্য, ফিলিস্তিন সমস্যার দুই-জাতি-ভিত্তিক সমাধানের লক্ষ্যে জাতিসংঘের একটি উচ্চ-পর্যায়ের সভায় অংশগ্রহণের জন্য পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বর্তমানে নিউ ইয়র্কে অবস্থান করছেন।
ঢাকা/হাসান/ফিরোজ