বিজ্ঞানীরা মনে করেন, কোটি কোটি বছর আগে এক গ্রহাণুর আক্রমণে পৃথিবী থেকে ডাইনোসরসহ অনেক প্রাণী ধ্বংস হয়ে গেছে। সেই গ্রহাণু সৌরজগতের কোন এলাকা থেকে এসেছিল, তা নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। সেই রহস্যের সমাধান না হলেও মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন গ্রহাণু পৃথিবীর খুব কাছ দিয়ে চলে যায়। আজ বুধবার ‘২০২৪ টিএন১৭’ নামের এমনই এক গ্রহাণু পৃথিবীর খুব কাছ দিয়ে চলে গেল।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, ২০২৪ টিএন১৭ নামের গ্রহাণুটি আজ বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টা ৩৪ মিনিটে প্রায় ৩০ লাখ মাইল দূর থেকে পৃথিবীকে পাশ কাটিয়ে গেছে। গ্রহাণুটির ব্যাস প্রায় ৫৪০ ফুট, যেখানে মিসরের গিজার পিরামিডের উচ্চতা ৪৪৯ ফুট। পৃথিবীর পাশ দিয়ে চলে যাওয়ার সময় গ্রহাণুটির গতি ছিল ঘণ্টায় ৪৮ হাজার মাইলের বেশি।

যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার মানদণ্ড অনুযায়ী, যদি কোনো গ্রহাণু পৃথিবীর ৪৬ লাখ ৫০ হাজার মাইলের মধ্যে চলে আসে ও ব্যাস ১৪০ মিটারের বেশি হয়, তখন সেটিকে সম্ভাব্য বিপজ্জনক আখ্যা দেওয়া হয়। ২০২৪ টিএন১৭ গ্রহাণুটি নাসার বিপজ্জনক তালিকায় আসার দুটি শর্তই পূরণ করেছিল। এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের রিডিং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী জেমস ও’ডোনোগু জানিয়েছেন, ২০২৪ টিএন১৭ বেশ বড় গ্রহাণু। একটি বড় শহরকে ধ্বংস করার জন্য যথেষ্ট বড়।

১১ বছর আগে ২০২৪ টিএন১৭ গ্রহাণুটি আবিষ্কার করেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, গ্রহাণুটি উপবৃত্তাকার কক্ষপথে ঘুরে ১ হাজার ২৪০ দিনে একবার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করছে। নাসা জানিয়েছে, ১৪০ মিটার ব্যাসের চেয়ে বড় প্রায় ১১ হাজারের মতো গ্রহাণু রয়েছে, যেগুলো মাঝেমধ্যেই পৃথিবীর কাছাকাছি চলে আসে।

সূত্র: ডেইলি মেইল

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে পানি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) নোয়াখালীর চাটখিল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এই মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।

আরো পড়ুন:

নাফিসা কামালসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা

সাজিদ হত্যার তদন্তে সিআইডিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমোদন 

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পাওয়ায় নোয়াখালীর চাটখিল থানায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তিনি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্বল্প সময়ের জন্য ‘ব্যক্তিগত সহকারী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই দায়িত্বই তাকে আর্থিকভাবে লাভবান করেছে মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।

জসীম উদ্দিন খান জানান, ২০১০ সালে জাহাঙ্গীর ‘স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করে বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা নেন। কিন্তু এর আড়ালে তিনি অসংখ্য সন্দেহজনক ব্যাংকিং কার্যক্রম করেন। কোম্পানির নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক অঙ্কের টাকা জমা হয়, যার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি ও ব্যবসার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।

সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টগুলোতে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ৫৬৫ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ নগদে জমা হয়েছে দেশের নানা স্থান থেকে। এসব অর্থের উৎস অজানা এবং হুন্ডি ও মানিলন্ডারিং কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক প্রমাণ মেলে।

বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন জানান, জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও ভাই মনির হোসেনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অর্থ লেনদেন করতেন। জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ২০২৪ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করছেন। বিদেশে তাদের বিনিয়োগ বা সম্পদ ক্রয়ের কোনো সরকারি অনুমোদন না পাওয়া গেলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ মেলে।

অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার, ভাই মনির হোসেন এবং প্রতিষ্ঠান স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড যৌথভাবে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন
  • ১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা