‘প্রায় এক মাস ধইরা মেঘনায় মাছ ধরতে পারতাছি না। সরকার থেইকা সাহায্য-সহযোগিতাও পাই নাই। রোজগার নাই। পরিবার লইয়া খাইয়া না খাইয়া আছি। পেডে দুই মুঠ ভাতই জোডে না। ঈদের কেনাকাটা ও সওদা করুম ক্যামনে। খুব বিপাকে আছি।’

কথাগুলো বলছিলেন মর্তুজা মিয়া। তাঁর বাড়ি চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার নন্দলালপুর এলাকার জেলেপল্লিতে। ১ মার্চ থেকে মেঘনায় মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা চলছে। এ সময় সরকারের কাছ থেকে কোনো সহায়তা না পাওয়ায় ঈদ সামনে রেখে পরিবার নিয়ে কষ্টের কথা জানান তিনি। তাঁর মতো মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলার ১২ শতাধিক জেলে পরিবারেও একই অবস্থা বিরাজ করছেন।

মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্র জানায়, জাটকা রক্ষায় ১ মার্চ থেকে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস মেঘনার চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার এলাকায় সব ধরনের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। দুই উপজেলায় মোট নিবন্ধিত জেলে ১৪ হাজার ৮৪০ জন। মাসে ৪০ কেজি করে ভিজিএফের খাদ্যসহায়তা (চাল) পাচ্ছেন ১২ হাজার ২৯৬ জন জেলে। খাদ্যসহায়তা পাচ্ছেন না ২ হাজার ৫৪৪ জন জেলে। এর মধ্যে সহায়তাবঞ্চিত ইসলাম ধর্মাবলম্বী জেলে ১ হাজার ২৭২ জন।

শুক্রবার সকালে মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর, আমিরাবাদ, নন্দলালপুর ও ষাটনল এবং মতলব দক্ষিণ উপজেলার বাইশপুর ও কাজিরবাজার এলাকার জেলেপাড়ায় দেখা যায়, অনেক জেলে পরিবারে ঈদের আমেজ নেই। মনমরা হয়ে আছেন পরিবারের সদস্যরা। মেঘনায় মাছ ধরা বন্ধ থাকায় এবং রোজগার না থাকায় অধিকাংশ জেলের পরিবার খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে। ঘরে চুলা জ্বলছে না তাঁদের। আর্থিক সমস্যায় ঈদের কেনাকাটা ও সওদা করাও বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছেন তাঁরা।

মেঘনায় মাছ ধরা বন্ধ থাকায় জাল মেরামত করে সময় কাটাচ্ছেন এক জেলে। শুক্রবার সকালে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর এলাকায়.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র এল ক পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

মতলবের দুই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি-দখলদারির অভিযোগ, দল থেকে বহিষ্কার

চাঁদপুরের মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলার বিএনপির দুই নেতাকে দলের সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

চাঁদাবাজি, দখলদারি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানা ধরনের অপকর্মে লিপ্ত থাকার অভিযোগে ওই দুজনের বিরুদ্ধে এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

বহিষ্কৃত নেতারা হলেন মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর পৌর বিএনপির সহসভাপতি আবদুল মান্নান লস্কর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া। এর মধ্যে মতলব উত্তরের আবদুল মান্নান লস্করকে চাঁদাবাজির মামলায় গত সোমবার রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি এখন কারাগারে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আবদুল মান্নান লস্কর ও আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়াকে চাঁদাবাজি, দখলদারি ও মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত থাকার অভিযোগে দলের প্রাথমিক সদস্যসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া ওই একই অভিযোগে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ইমাম হোসেন গাজীকেও দলের সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।  

এ ব্যাপারে চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহম্মেদের (মানিক) মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে মতলব উত্তর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল হক ও মতলব দক্ষিণ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম বলেন, ওই দুই নেতাকে বহিষ্কারের বিষয়টি জেনেছেন। তবে এ ব্যাপারে  চিঠি এখনো পাননি। যেকোনো বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। এটি অন্যান্য নেতার জন্যও একটি বার্তা ও শিক্ষা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঋণের কিস্তি পরিশোধ নিয়ে বিরোধ, চাচার মারধরে ভাতিজার মৃত্যুর অভিযোগ
  • মতলবের দুই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি-দখলদারির অভিযোগ, দল থেকে বহিষ্কার