৪ টাকার বিনিময়ে প্রায় ১ হাজার টাকার পণ্য কেনার সুবিধা পেলেন চা-শ্রমিক ৬০টি পরিবারের সদস্য। পবিত্র ঈদুল ফিতর সামনে রেখে এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন করেছে ‘ক্লিন সিটি সিলেট’ নামের একটি সংগঠন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে সিলেট সদর উপজেলার দলদলি চা-বাগানে ‘৪ টাকার ঈদবাজার’ নামের এমন আয়োজন করা হয়।

সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, সামাজিক কাজের অংশ হিসেবে সংগঠনটি পাঁচ বছর ধরে নগরের হতদরিদ্র মানুষ, পথচারী থেকে শুরু করে বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৪ টাকার ইফতারসামগ্রী দিয়ে আসছে। প্রতিটি প্যাকেটে প্রায় ১০০ টাকার ইফতারসামগ্রী থাকে। সেসব বিক্রি করা হচ্ছে নামমাত্র ৪ টাকায়। পরে ওই টাকার সঙ্গে নিজেরা আরও টাকা যোগ করে ঈদ উপহার বিতরণের জন্য কেনাকাটা সারেন সংগঠনের কর্মীরা।

শুক্রবার বিকেলে দলদলি চা-বাগানে ৬০টি মুসলিম চা-শ্রমিক পরিবার চার টাকা দিয়ে হাজার টাকার পণ্য কিনে। বিতরণ করা পণ্যের মধ্যে ছিল চাল, ডাল, আলু, চিনি, পেঁয়াজ, ময়দা, সেমাই, দুধ ও সয়াবিন তেল। এর আগে রমজান মাস শুরু হওয়ার পর তিনটি শুক্রবার প্রায় ৮০০ পথচারী, হতদরিদ্র ও মাদ্রাসাশিক্ষার্থীদের মধ্যে সংগঠনটি ৪ টাকার বিনিময়ে ইফতারসামগ্রী বিতরণ করে।

চা-শ্রমিকদের ঈদসামগ্রী কেনাকাটার আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম। ক্লিন সিটি সিলেটের সভাপতি নাজিব আহমদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল লতিফের সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠান হয়। এতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিলেট ভয়েসের প্রকাশক সেলিনা চৌধুরী, সাংবাদিক জয়ন্ত কুমার দাস, আয়োজক সংগঠনের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবু তাহের, লজিস্টিক সম্পাদক তারেক রহমান প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, সিলেটের চা-শ্রমিকেরা বেতন ও বোনাস না পেয়ে অসহায়ের মতো পরিবার-পরিজন নিয়ে দিন যাপন করছেন। এক বেলা খেয়ে থাকলে, আরেক বেলা না খেয়ে থাকছেন। তখন ঈদ উপলক্ষে চা-শ্রমিকদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য ব্যতিক্রমী এ আয়োজন অনন্য ভালোবাসার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর এমন চেষ্টা আরও প্রসারিত হোক। সবাই যদি এ ধরনের কাজে এগিয়ে আসেন, তবে সত্যিকার অর্থেই একটি সমৃদ্ধ ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘ক্লিন সিটি সিলেট সব সময়ই মহতী কাজের মধ্যে যুক্ত থাকে। তারা রমজানের শুরু থেকে ৪ টাকায় ইফতার বিতরণ করেছে। এখন তারা মাত্র ৪ টাকায় ঈদসামগ্রী চা-শ্রমিকদের মধ্যে বিক্রি করছে। এ আয়োজন শুধু একটি সামাজিক উদ্যোগ নয়, এটি মানবতার এক অনন্যদৃষ্টান্ত। আমাদের সমাজে যাঁরা কঠোর পরিশ্রম করেন, আমাদের অর্থনীতিকে সচল রাখেন, সেই চা-শ্রমিক ভাই-বোনদের মুখে হাসি ফোটাতে পারা, এটি সত্যিই গর্বের বিষয়।’

ক্লিন সিটি সিলেটের সভাপতি নাজিব আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাবিষয়ক সচেতনতার পাশাপাশি সিলেট, কুমিল্লা ও নোয়াখালীতে বন্যাকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানো এবং নিয়মিতভাবে ইফতার ও ঈদ উপহারসামগ্রী বিতরণের মতো আয়োজন করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে আরও উদ্যোগ নেওয়া হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইফত র স গঠন ব তরণ

এছাড়াও পড়ুন:

সিলেটে সহপাঠীর সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ

সিলেটের জকিগঞ্জে সহপাঠীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে দশম শ্রেণির এক ছাত্রী (১৬) দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা প্রথমে দুই শিক্ষার্থীর ছবি ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন বলে এ ঘটনায় করা মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

গত শনিবার সকালে উপজেলার বারহাল ইউনিয়নের পরিত্যক্ত একটি ইটভাটায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কিশোরী আজ বুধবার সকালে জকিগঞ্জ থানায় মামলা করেছে।

মামলায় আসামি হিসেবে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁরা হলেন উপজেলার বারহাল ইউনিয়নের নিদনপুর গ্রামের ইমরান আহমদ (২৩), খিলগ্রামের তানজিদ আহমদ (১৮), মাইজগ্রামের শাকের আহমদ (২৪), একই গ্রামের শাকিল আহমদ (২১) ও মনতৈল গ্রামের মুমিন আহমদ (২০)।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী ২৬ জুলাই সকালে বারহাল ইউনিয়নের একটি পরিত্যক্ত ইটভাটায় এক সহপাঠীকে নিয়ে বেড়াতে যায়। সেখানে অভিযুক্ত পাঁচ তরুণ গোপনে তাঁদের ছবি ধারণ করেন। পরে ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করেন। পরে দুজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ সময় অভিযুক্ত তরুণেরা দুই শিক্ষার্থীকে বিষয়টি কাউকে জানানো হলে তাঁদের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে ভয় দেখান।

এদিকে ঘটনার তিন দিন পর বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে এলাকার একটি পক্ষ বিষয়টি সালিস বৈঠকে মীমাংসার চেষ্টা করছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। তবে গতকাল মঙ্গলবার রাতে জকিগঞ্জ থানা-পুলিশ ওই স্কুলছাত্রীকে তার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগ দিতে বিলম্ব ও বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় অভিযুক্ত তরুণেরা গা ঢাকা দিয়েছেন। এ ছাড়া জকিগঞ্জ ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় অভিযুক্ত তরুণেরা অবৈধ পথে সীমান্ত পাড়ি দিতে পারেন বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় লোকজন।

জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাতে খবর পেয়ে পুলিশ ভুক্তভোগীকে তার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে। আজ সকালে মামলা হওয়ার পর থেকে আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিবাদ ও প্রতিবেদকের বক্তব্য
  • মানিব্যাগ তুলতে সেপটিক ট্যাংকে নেমে বড় ভাইয়ের মৃত্যু, ছোট ভাই হাসপাতালে
  • দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদদের থেকে তরুণদের দূরে থাকতে হবে: মজিবুর রহমান
  • সিলেটে সহপাঠীর সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ
  • শিশু নাঈমের পাশে ইবি ক্রিকেট ক্লাব
  • ৪ কলেজ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২১টি স্থাপনার নাম বদল
  • জুলাই সনদের খসড়ায় ফ্যাসিবাদের দুঃশাসনের চিত্র নেই: ইসলামী আন্দোলন
  • কক্সবাজারের সোনাদিয়া উপকূলে ভেসে এল অজ্ঞাতনামার লাশ, এখনো নিখোঁজ অরিত্র
  • ছয় দফা দাবিতে ‘আমরা ভোলাবাসী’র আন্দোলন ‘সরকারি আশ্বাসে’ স্থগিত
  • মানবাধিকার মিশন নিয়ে উদ্বেগ, আলোচনা ছাড়া সিদ্ধান্ত ন্যায়সংগত হয়নি: সালাহউদ্দিন আহমদ