কালুখালীতে পুনর্মিলনী, নবীনবরণ ও কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা
Published: 3rd, April 2025 GMT
রাজবাড়ীর কালুখালীতে পুনর্মিলনী, নবীনবরণ ও কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাবলিক ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব কালুখালীর উদ্যোগে বুধবার বিকেলে কালুখালী সরকারি কলেজ মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানটি নবীন প্রবীণের মিলনমেলায় পরিণত হয়, যেখানে সদ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবীণ শিক্ষকরাও ছিলেন। স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তারা হারিয়ে যান শৈশবে। একই সঙ্গে সংগঠনকে গতিশীল করার কথাও বলেন তারা।
কালুখালী উপজেলার বাসিন্দা যারা দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি কার্যালয়ে চাকরি করছেন, বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন কিংবা সদ্য ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন এমন ২৫০ জন যোগ দেন এ অনুষ্ঠানে। তাদের মধ্যে ছিলেন ফরিদপুর ইয়াছিন কলেজের অধ্যক্ষ ফজলুল হক খান, ফরিদপুর টিচার্স ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষ শহিদুল আলম খান, কালুখালী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল হামিদ খান, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর নাসির উদ্দিন, ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের সহযোগী অধ্যাপক কামাল হোসেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব আশরাফুল আলম, রাজবাড়ী সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক আশরাফ আলী খান, রাজবাড়ী সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজের সহকারী অধ্যাপক আব্দুর রশিদ, রাজবাড়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফজলুল হক গোলাপ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র আহাদ আলী, সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল আন্ড কলেজের শিক্ষক এমডি ইমরান হোসেন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের অতিথি দৈনিক সমকালের প্রকাশক আবুল কালাম আজাদ বলেন, এই অনুষ্ঠানে এসে আমি মুগ্ধ। অনেক মেধাবীর সঙ্গে দেখা হয়ে খুব ভালো লাগছে। নিশ্চয় তাদের হাত ধরে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। তিনি বলেন, আমরা সব সময় ভালো কাজ করার চেষ্টা করি। চেষ্টার ভেতর থেকে যতদূর সফল হতে পারি। শিক্ষার্থীদের তিনি সমকালের শিক্ষা পাতায় লেখার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, দেশের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা অনেক। আমরা সাধারণ মানুষের ট্যাক্সে পড়াশোনা করেছি। আমরা শুধুমাত্র পরিবারের জন্য কাজ করব না, দেশ ও সমাজের জন্য কাজ করব।
ফরিদপুর ইয়াছিন কলেজের অধ্যক্ষ ফজলুল হক খান বলেন, ১৯৮৫ সালে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে ঢাকা গিয়েছি। নিভৃত পল্লী থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি। অর্থের জন্য পড়াশোনা থেমে থাকেনি। আমাদের সময় কোনো কোচিং ছিল না। তবুও আমরা এগিয়ে গেছি। অনেক অনেক মেধাবীদের সমন্বয়ে গড়া এ সংগঠন নিশ্চয় থেমে যাবে না। অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
শৈশবের স্মৃতিচারণ করে ফরিদপুর টিচার্স ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষ শহিদুল আলম খান বলেন, আমি যখন ক্লাস সেভেনে পড়তাম তখন নিমতলায় একটা ঘাট ছিল। এখন সেখানে ব্রিজ হয়েছে। ওই সময় বাড়ি থেকে হেঁটে রতনদিয়া হাই স্কুলে যেতাম। সকাল বেলা প্রাইভেট পড়তে যেতাম বোয়ালিয়ায় অমল স্যারের কাছে। এখন যেখানে হেলথ কমপ্লেক্স মাঠ। সেখানে কোনো ফসল ভালো হতো না। তখন আমি চিন্তা করতাম এই জনপদের কি উন্নতি হবে না, এমনই থাকবে? এখন কালুখালী উপজেলার প্রাণকেন্দ্র ওই জায়গাটি।
নবীন শিক্ষার্থীদের মাঝে বক্তৃতা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রী প্রেয়সী পাল, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র ইমন বিশ্বাস, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র আল আমিন হাওলাদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র আহাদ আলী, শিহাব উদ্দিন প্রমুখ।
তারা বলেন, পাবলিক ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব কালুখালী নামের এই সংগঠনটি ভালো কাজের মাধ্যমে আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবে- এটি আমাদের প্রতাশা। এর সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট তারা সকলে মিলে একসঙ্গে কাজ করলে অনেক ভালো কাজ করা সম্ভব। নবীন শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা নবীন প্রবীণের মধ্যে একটি দৃঢ়বন্ধন তৈরি করার জন্য এ আয়োজন করেছি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মনিরুল ইসলাম উজ্জল। আলোচনা সভা শেষে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগপ্রাপ্ত ২০ জন শিক্ষার্থীকে ক্রেস্ট দিয়ে সংবর্ধনা জানানো হয়। আলোচনা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন র জন য প বল ক ক জ কর সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।