অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়া ফ্রান্সের ডানপন্থী নেতা মারিন লো পেন রাজনীতি ছাড়ছেন না। আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

সংবাদমাধ্যম টিএফওয়ানকে মারিন লো পেন বলেন, ‘আমাকে সরিয়ে দেওয়া হলো ঠিকই; কিন্তু একই সঙ্গে অসংখ্য ফরাসি নাগরিকের কণ্ঠরোধ করা হলো।’ তিনি জানান ২০২৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগের কোনো আইনি আবেদনের ওপর তাঁর ভরসা নেই।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন তহবিলের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সম্প্রতি লো পেনের সরকারি কাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন আদালত। আদালত জানিয়েছেন, তিনি এবং তাঁর দল ন্যাশানাল র‍্যালি পার্টি (আরএন) তহবিলের প্রায় ৩০ লাখ ইউরো আত্মসাৎ করেছেন। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এই তহবিল একমাত্র পার্লামেন্টের কাজেই ব্যবহার করার জন্য বরাদ্দ থাকে।

আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে যথেষ্ট আক্রমণাত্মক ছিলেন লো পেন। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, এখন রাজনীতি ছাড়ছেন না। তিনি বলেন, ‘আমি নির্দোষ। আমি আইনি পথ ছাড়ব না, আবেদন করব। আইনের যেটুকু রাস্তা খোলা আছে, তা সে যতই ছোট হোক, আমি সেই পথ ছাড়ব না।’

আদালতের রায়কে গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর বলে মন্তব্য করেন লো পেন। তিনি বলেন, ‘এই রায় গণতন্ত্রের পক্ষে ভয়ংকর। আমার ব্যক্তিগত কোনো লাভ হয়নি। তাই দুর্নীতির প্রশ্নই আসে না।’

লো পেন সাংসদ থাকতে পারবেন; কিন্তু তিনি পরবর্তী সংসদ নির্বাচনে লড়তে পারবেন না।

লো পেনের বিকল্প কে?

লো পেনের ওপর এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ পাঁচ বছর। এর মধ্যে চার বছর তাঁকে বন্দি অবস্থায় থাকতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

সোমবার রায় ঘোষণার আগেই শুনানি চলাকালে উত্তেজিত লো পেনকে আদালতকক্ষ থেকে চলে যেতে দেখা যায়। এই রায়ের পর আগামী নির্বাচনে তাঁর লড়ার সম্ভাবনা খুবই কম।

লো পেনের ওপর নিষেধাজ্ঞার পর তাঁর দলের প্রেসিডেন্ট ২৯ বছর বয়সী জর্ডন বারদেলাকে ২০২৭ সালের নির্বাচনে প্রার্থী করা হতে পারে বলে মনে করছেন কেউ কেউ। জনপ্রিয়তার নিরিখে লো পেনের থেকে বেশ কিছুটা পিছিয়ে থাকবেন তিনি।

আদালত লো পেনের সঙ্গে তাঁর দলের আরও আটজনকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। একই সঙ্গে ১২ জন পার্লামেন্টারি অ্যাসিস্ট্যান্টকেও দোষী সাব্যস্ত করেছেন আদালত।

রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

এই রায়ের পর ফরাসি প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বায়রুসহ একাধিক রাজনীতিবিদ আদালতের ভোটে লড়তে দেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সতর্ক মন্তব্য করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই রায়কে ‘খুব বড় বিষয়’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন ‘লো পেনের ওপর পাঁচ বছর ভোটে লড়ার নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আমাদের দেশেও এ রকম হয়েছে।’

রাশিয়া এ ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছে। তারা বলেছে এই রায় ইউরোপের গণতন্ত্রের পক্ষে ক্ষতিকর।

আরও পড়ুনদোষী সাব্যস্ত লো পেন, সরকারি দায়িত্ব পালনে ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা৩১ মার্চ ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র ওপর এই র য় কর ছ ন র জন ত

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’

তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’

অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’

পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’

তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’

আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’

ঢাকা/আসাদ/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
  • আমেরিকানদের হাতে সময় আছে মাত্র ৪০০ দিন
  • হুংকার দিয়ে জাতীয় নির্বাচন ঠেকান যাবে না: জাহিদ হোসেন
  • বাংলাদেশ পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে: আইরিন খান
  • কেমন সংবিধান চান, জানালেন এনসিপি নেতা আখতার হোসেন
  • বাংলাদেশে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় ইইউ