মৌসুমের শেষ ম্যানচেস্টার ডার্বির মঞ্চ প্রস্তুত। যেখানে রবিবার (৬ মার্চ) রাত সড়ে ৯টায় ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে সিটিকে আতিথ্য দেবে ইউনাইটেড। দুটি দলই ভিন্ন পরিস্থিতিতে একে অপরের বিপক্ষে নামছে।

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের (ইপিএল) পয়েন্ট টেবিলে বর্তমানে পঞ্চম স্থানে অবস্থান করছে পেপে গার্দিওলার ম্যানসিটি। লন্ডনের ক্লাব চেলসির চেয়ে এক পয়েন্ট পিছনে রয়েছে ম্যানচেস্টারের ব্লু’রা। চেলসি যদি ব্রেন্টফোর্ডের বিপক্ষে পয়েন্ট হারায় এবং সিটি তাদের নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের হারাতে পারে, তাহলে আবারও ইপিএলের শীর্ষ চারে উঠে যাবে গার্দিওলার দল।

অন্যদিকে, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড বর্তমানে ইপিএলের ১৩তম স্থানে অবস্থান করছে। শীর্ষ দশে প্রবেশ করতে গেলে, তাদের কঠিন এক যাত্রা মোকাবেলা করতে হবে। রেড ডেভিলরা তাদের শেষ চারটি লিগ ম্যাচের দুটিতে জয় পেয়েছে।

আরো পড়ুন:

ম্যানসিটি ছাড়ার ঘোষণা দিলেন ডি ব্রুইন

‘শেষ চারে টিকে থাকার যোগ্যতা, আকাশ থেকে পড়বে না’

এখন পর্যন্ত ১৯৫ বার এই দুই দল একে অপরের মুখোমুখি হয়েছে। যেখানে ইউনাইটেডের ৮০ জয়ের বিপরীতে সিটি জিতেছে ৬১ ম্যাচ। ২০০৮ সালে মালিকানা দুবাইয়ের শেখ মনসুরের কাছে যাওয়ার পরই অবশ্য নগরপ্রতিদ্বন্দীদের সঙ্গে ব্যবধান কমিয়েছে সিটি। ইতিহাদে সর্বশেষ ডার্বিতে সিটিকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়েছে রুবেন আমোরিমের ইউনাইটেড।

এই ম্যাচে ইউনাইটেডের লুক শ, জনি এভানস, লিসেন্দ্রো মার্তিনেজ, আমাদ ডায়ালো, কবি মাইনুকে পাচ্ছে না। তবে রেড ডেভিলদের দলে নেই কোন কার্ড জটিলতা। অন্যদিকে ম্যানসিটির রদ্রি চটের কারণে গোটা মৌসুমের জন্যই বাইরে। তাছাড়া অস্কার বব, ম্যানুয়েল আকানজি, জন স্টোনস, নাথান আকে এবং আর্লিং হালান্ড।

ম্যাচের আগে ইউনাইটেডের পর্তুগিজ কোচ আমোরিম বলেন, “আমার মনে হয়, আমাদের ম্যানচেস্টার সিটির চেয়ে বড় সমস্যা আছে। তারা সেই সময়ে কিছু সমস্যায় ভুগছিল, কিন্তু এখন তারা উন্নতি করেছে। তারা বিভিন্ন উপায়ে খেলতে পারে।”

ইউনাইটেড বস মেনে নিলেন যে, প্রতিপক্ষ কোচ এবং খেলোয়াড়রা বেশ এগিয়ে। তবে এই পর্তুগিজ কোচ সেসব নিয়ে মাথা ঘামাতে চান না। নিজ দলের উন্নিই এখন তার লক্ষ্য।

আমোরিম বলেন, “এটা বুঝা খুব কঠিন যে, তারা আমাদের বিপক্ষে কিভাবে খেলবে। তাদের কাছে বিশ্বের সেরা কোচ রয়েছে এবং শীর্ষমানের খেলোয়াড় রয়েছে। তাই এটি কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বীতা হতে যাচ্ছে। কিন্তু আমি যা বলেছি, আমি আমার দলের উন্নতি নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম যে, আমি সিটির উন্নতির বিষয়ে চিন্তা করছি না।”

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম র ম

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ