‘আক্রমণ করে গায়ের গোশত ঝাড়বেন, গোশত ছিনে নিয়ে আসব,’ বললেন ছাত্রদল নেতা
Published: 8th, April 2025 GMT
‘আপনারা যদি মনে করেন বিন্নাগনিকে মাইনাস করে, বিন্নাগনির ছেলেপেলেদের ওপর আক্রমণ করে আপনারা আপনাদের গায়ের গোশত ঝাড়বেন, আমরা আপনাদের গোশত ছিনে নিয়ে আসব। যদি আমাদের আর একটা নেতা-কর্মী, ছেলের গায়ে, বিএনপির নামধারী আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা হাত দেওয়ার চেষ্টা করেন, তাহলে সেই হাত আমরা কেটে নেব।’
নোয়াখালীর সেনবাগ থানার মোড়ে আয়োজিত এক পথসভায় এভাবে বক্তব্য দিয়েছেন উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো.
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি পাঁচ মিনিটের। পথসভায় দেওয়া বক্তব্যে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নিজের এলাকা বিন্নাগনির মানুষের ওপর হামলা নির্যাতন হয়েছে বলে উল্লেখ করেন সানাউল্লাহ। বিএনপির নামে এখন আবারও হামলাকারী আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সক্রিয় হয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
সেনবাগ পৌরসভার আরেক এলাকা অর্জুনতলার বাসিন্দাদের ৯০ ভাগ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত মন্তব্য করে সানাউল্লাহ বলেন, ‘এই অর্জুনতলা ১৬টি বছর বিন্নাগনিকে ফিলিস্তিন বানিয়ে রেখেছে। কিছু হইলেই বিন্নাগনি আক্রমণ। কিছুই হইলেই বিন্নাগনির ছেলেদের নামে, নেতাদের নামে মামলা। ১৬ বছর আমরা ঠিক মতে ঘরে ঘুমাইতে পারিনি’। তিনি বলেন, ‘এই অর্জুনতলার নেতৃত্বে ২০১৮ সালে আমাদের বিন্নাগনি কেন্দ্রে হামলা হয়েছে। ২৮ অক্টোবরের আন্দোলনের পরে আমাদের অনেক নেতা-কর্মীর গায়ে হাত দেওয়া হয়েছে। আমরা তখনো বিচার চাই নাই, এখনো বিচার চাই না ’
নতুন করে হামলার চেষ্টা হলে প্রতিহত করার কথা জানিয়ে সানাউল্লাহ তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘আমার কোনো ভাইয়ের ওপর, আমাদের কোনো নেতা-কর্মীর ওপর, যদি কেউ আক্রমণ করার দুঃসাহসও দেখান আপনারা বিএনপি নয়, যত বড় বিএনপি হন, যত বড় আওয়ামী লীগের দালাল হন, আপনাদের আমরা একবিন্দু পরিমাণও ছাড় দিব না।’
দলের একটি অংশের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘আপনারা কত বড় বিএনপি আমরা জানি। আপনারা আওয়ামী লীগের দালালি করেন। আপনারা মামলা থেকে বাঁচতেন। এখন কেউ কবির গ্রুপ, কেউ টিপু গ্রুপ, কেউ দুলাল গ্রুপ, কেউ মামুন গ্রুপ, কেউ রিপন গ্রুপ’। তিনি আরও বলেন, ‘আজ আট মাস সেনবাগের আওয়ামী লীগের যত নেতা আছেন, সবাই ঘরে ঘুমান। আমাদের দলের লোকেরাই তাঁদের দালালি করে। আপনারা কই ছিলেন ১৬ বছর? আপনারা বলেন, আমরা জুনিয়র, আপনারা বিদেশ করেছেন। আপনারা মামলা থেকে বাঁচার জন্য আওয়ামী লীগ নেতাদের টাকা দিতেন। আপনাদের শ্যালক-সমুন্দিরা আওয়ামী লীগ করে। কখনো মোরশেদ সাহেবের গ্রুপ, কখনো মানিক সাহেবের গ্রুপ। বিন্নাগনির এমন কোনো লোক নাই যারা আওয়ামী লীগ দ্বারা নির্যাতিত হন নাই।’
সানাউল্লাহ যখন বক্তব্য দিচ্ছিলেন তখন পুলিশের একটি গাড়ি পথসভার পাশ দিয়ে যেতে দেখা যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সানাউল্লাহর এই বক্তব্যের পর থেকে অর্জুনতলা এলাকার বাসিন্দাদের একটি অংশ আতঙ্কে রয়েছেন। তবে বিষয়টি নিয়ে তাঁরা নাম প্রকাশ করে মতামত দিতে রাজি হননি।
বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে মো. সানাউল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘৫ আগস্টের আগে বিএনপি করার লোক পাইনি। আগে যাঁরা আওয়ামী লীগ করত, তাঁদের পরিবার এখন বিএনপি পরিবার হয়ে গেছে। তাঁরা এখন বিএনপি নিয়ে মাথা ঘামান। তাঁদের ওপর ক্ষোভ ঝাড়তে গিয়ে কথাগুলো বলেছি। তবে এভাবে বলা ঠিক হয়নি, নেতা হিসেবে আরও সহনশীল হয়ে বক্তব্য দেওয়া উচিত ছিল।’
বিষয়টি নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্রদল নেতার বক্তব্যের ভিডিওটি তিনি দেখেননি। তিনি যে দিন বক্তব্য দিয়েছিলেন, ওই সময় তিনি ছুটিতে ছিলেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ন উল ল হ আপন দ র ছ ত রদল আম দ র র ওপর আপন র আওয় ম ব এনপ র একট
এছাড়াও পড়ুন:
অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন
প্ল্যান ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিয়ে চলছে আলোচনা। সেখানে দুই হাজার ফুলটাইম কর্মজীবীর ওপর একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়। পেশাগত কাজ বা চাপের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন, তাঁদের খাদ্যাভ্যাস তুলনামূলকভাবে অস্বাস্থ্যকর, তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপে ভোগেন বেশি। ঠিকমতো পানি খাওয়ার প্রবণতা কম। পরিবার, প্রকৃতি ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানোর প্রবণতাও কম। কম ঘুমান। আর যেকোনো মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ পান না। এই মানুষেরাই বেশি হতাশায় ভোগেন।
শুধু তা-ই নয়, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া এবং হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় অফিস করেন, তাঁদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক।
আরও পড়ুন২৫ বছর ধরে অফিসে যাননি তিনি১৩ মার্চ ২০২৫যদি ১১ ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকতেই হয়, তাহলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেনরাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তাতে শরীর ও মস্তিষ্ক দিনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।
কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। সবুজের দিকে তাকান। ডেস্কে গাছ রাখতে পারেন। উঠে একটু হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করুন। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট ছোট বিরতি কাজে মনোযোগ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে এবং কাজের গুণমান বাড়ায়।
দুপুরে খাওয়ার পর একটা ন্যাপ নিতে পারেন।
২ লিটারের একটা বোতলে পানি রাখবেন। প্রতিদিন ১ বোতল পানি অবশ্যই শেষ করবেন। তা ছাড়া পানি, শরবত, জুস, ডাবের পানি, তরমুজ, শসা, আনারস ইত্যাদি খাবেন। হাইড্রেটেড থাকলে এনার্জি ধরে রেখে কাজ করা সহজ হয়।
প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বোনেটেড ড্রিংক, চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন। এসব কেবল আপনার ক্লান্তি বাড়াবে।
আর সম্ভব হলে কর্মক্ষেত্রে কথা বলে আপনার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসতে পারলে তো কথাই নেই।
সূত্র: এনবিসি নিউজ
আরও পড়ুনঅফিসের বাড়তি কাজকে যেভাবে ‘না’ বলবেন১৩ মার্চ ২০২৫