হোয়াইট হাউস মঙ্গলবার ঘোষণা করেছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের ওপর ১০৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবেন না। এই পদক্ষেপটি চীনের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধকে আরও তীব্র করবে, কারণ চীনও পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোসণা দিয়েছে।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট সাংবাদিকদের বলেন, চীনের উচিত ছিল না পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়া। ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বাস করেন, যখন আমেরিকা আঘাত পায়, তখন আরও জোরালোভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়। সেই কারণে আজ রাত ১২টা থেকে চীনের ওপর ১০৪ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হবে। তবে প্রেসিডেন্ট মনে করেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও চীন একটি চুক্তি করতে চান, কিন্তু তারা জানে না কীভাবে শুরু করবে।

চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা ‘শেষ পর্যন্ত লড়াই করবে’ এবং যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নেবে। বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, এই শুল্ক যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।

লেভিট বলেন, যদি চীন আলোচনায় বসতে আগ্রহ দেখায়, প্রেসিডেন্ট দারুণ উদার মনোভাব দেখাবেন। লেভিট ট্রাম্পের বক্তব্য তুলে ধরে বলেন, চীন একটি চুক্তি করতে চায়, যা ট্রাম্পও ট্রুথ সোশ্যাল- এ আগেই বলেছিলেন, ‘চীন মরিয়া হয়ে একটি চুক্তি চায়, কিন্তু কোথা থেকে শুরু করবে তা জানে না। আমরা তাদের ফোনের অপেক্ষায় আছি। সেটা হবেই।’

ট্রাম্প এর আগের দিন ট্রুথ সোশ্যাল-এ হুঁশিয়ারি দেন, বর্তমানে বিদ্যমান ৫৪ শতাংশ শুল্কের ওপর আরও ৫০ শতাংশ যুক্ত করবেন। এর আগে ট্রাম্প গত সপ্তাহে চীনের ওপর ২০ শতাংশ শুল্কের সঙ্গে অতিরিক্ত ৩৪ শতাংশ কর আরোপ করেছিলেন।

চীনের পক্ষ থেকে পাল্টা হুমকি আসে সোমবার সন্ধ্যায়, তারা জানায়, আমরা শেষ পর্যন্ত লড়ব এবং আমেরিকার ওপর আরও কর আরোপ করা হবে। চীন বলেছে, ট্রাম্পের শুল্কের প্রতিক্রিয়ায় তারা ৩৪ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করবে, যা এই সপ্তাহেই কার্যকর হবে। তারা যুক্তি দিয়েছে, আমদানির ওপর ব্যাপক শুল্ক শুধু আমেরিকার স্বার্থ ক্ষুণ্ন করে না, বরং বৈশ্বিক অর্থনীতি, উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থার স্থিতিশীলতাও বিপন্ন করে।

হোয়াইট হাউস ও ট্রাম্প দাবি করেছেন, চীনে তৈরি হওয়া আইফোনের উৎপাদন আমেরিকায় স্থানান্তর করা যেতে পারে। তবে যদি অ্যাপল কর বহনের পরিবর্তে তা ভোক্তাদের ওপর চাপিয়ে দেয়, তাহলে আইফোনের দাম আকাশচুম্বী হয়ে উঠতে পারে।

লেভিট বলেন, ‘বিভিন্ন ধরনের চাকরি- প্রথাগত ম্যানুফ্যাকচারিং থেকে শুরু করে উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর কাজ- সবই প্রেসিডেন্ট দেশে ফেরাতে চান।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘তিনি বিশ্বাস করেন আমাদের সেই সক্ষমতা, শ্রমশক্তি ও সম্পদ আছে।’

এদিকে ট্রাম্প জানিয়েছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে একটি সম্ভাব্য বাণিজ্য চুক্তি হতে পারে। মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট জানিয়েছেন, ভিয়েতনাম ও জাপানও আলোচনার টেবিলে আসছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ ল ক আর প চ ন র ওপর ব যবস থ আম র ক

এছাড়াও পড়ুন:

অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন

প্ল্যান ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিয়ে চলছে আলোচনা। সেখানে দুই হাজার ফুলটাইম কর্মজীবীর ওপর একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়। পেশাগত কাজ বা চাপের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন, তাঁদের খাদ্যাভ্যাস তুলনামূলকভাবে অস্বাস্থ্যকর, তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপে ভোগেন বেশি। ঠিকমতো পানি খাওয়ার প্রবণতা কম। পরিবার, প্রকৃতি ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানোর প্রবণতাও কম। কম ঘুমান। আর যেকোনো মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ পান না। এই মানুষেরাই বেশি হতাশায় ভোগেন।

শুধু তা-ই নয়, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া এবং হৃদ্‌রোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় অফিস করেন, তাঁদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক।

আরও পড়ুন২৫ বছর ধরে অফিসে যাননি তিনি১৩ মার্চ ২০২৫যদি ১১ ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকতেই হয়, তাহলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন

রাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তাতে শরীর ও মস্তিষ্ক দিনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।

কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। সবুজের দিকে তাকান। ডেস্কে গাছ রাখতে পারেন। উঠে একটু হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করুন। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট ছোট বিরতি কাজে মনোযোগ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে এবং কাজের গুণমান বাড়ায়।

দুপুরে খাওয়ার পর একটা ন্যাপ নিতে পারেন।

২ লিটারের একটা বোতলে পানি রাখবেন। প্রতিদিন ১ বোতল পানি অবশ্যই শেষ করবেন। তা ছাড়া পানি, শরবত, জুস, ডাবের পানি, তরমুজ, শসা, আনারস ইত্যাদি খাবেন। হাইড্রেটেড থাকলে এনার্জি ধরে রেখে কাজ করা সহজ হয়।

প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বোনেটেড ড্রিংক, চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন। এসব কেবল আপনার ক্লান্তি বাড়াবে।

আর সম্ভব হলে কর্মক্ষেত্রে কথা বলে আপনার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসতে পারলে তো কথাই নেই।

সূত্র: এনবিসি নিউজ

আরও পড়ুনঅফিসের বাড়তি কাজকে যেভাবে ‘না’ বলবেন১৩ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ