এনসিপির সঙ্গে হেফাজতের বৈঠক, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ঐকমত্য
Published: 9th, April 2025 GMT
গণহত্যার দায়ে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার, বিচার না হওয়া পর্যন্ত রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে দলটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণার বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।
আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির সঙ্গে বৈঠক করেছে হেফাজতে ইসলাম। বৈঠকে এনসিপি ও হেফাজতের জ্যেষ্ঠ নেতারা অংশ নেন। হেফাজতে ইসলামের আগ্রহে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকেই দল দুটি আওয়ামী লীগের বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করে। এর আগে বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করে হেফাজত।
এনসিপির সঙ্গে বৈঠকে হেফাজতে ইসলামের পক্ষে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, নায়েবে আমির আহমেদ আবদুল কাদের, মাওলানা আহমেদ আলী কাসেমী ও মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানী।
আর এনসিপির পক্ষে অংশ নেন দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফ উদ্দীন মাহাদী, সংগঠক মো.
বৈঠক শেষে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘গণহত্যার দায়ে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার, বিচার না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের বিচারের দৃশ্যমান তৎপরতা এবং আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা—এসব বিষয়ে বৈঠকে ঐকমত্য হয়েছে।’ তবে নির্বাচনের বিষয়ে বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুননিবন্ধনের জন্য প্রস্তুতি শেষ হয়নি, ইসির কাছে সময় চাইবে এনসিপি৩ ঘণ্টা আগেবৈঠক সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ শাসনামলে আলেম ও বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলাগুলো প্রত্যাহারের বিষয়ে সবাই যেন একসঙ্গে কাজ করে, সে বিষয়েও হেফাজতের নেতারা আলোচনা করেছেন। পাশাপাশি ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরের নৃশংসতাসহ আওয়ামী লীগ আমলে গুম, খুনের বিচার ও সব মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে আগামী ৩ মে ঢাকায় অনুষ্ঠেয় হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশের প্রসঙ্গেও কথা বলেন হেফাজত নেতারা।
আরও পড়ুনবিএনপি নেতাদের বক্তব্যে ‘মৌলবাদ’ শব্দ নিয়ে আপত্তি হেফাজতের০৬ এপ্রিল ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এনস প র ঐকমত য আওয় ম ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
২ মে ঢাকায় এনসিপির বিক্ষোভ, প্রচারপত্রে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ৭ অপরাধ
‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচার ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে’ আগামী ২ মে (শুক্রবার) রাজধানী ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করবে নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। রাজধানীর গুলিস্তানে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ফটকে এনসিপির ঢাকা মহানগর শাখার উদ্যোগে এই সমাবেশ হবে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের উদ্যোগে গঠিত দল এনসিপি।
সমাবেশ উপলক্ষে তৈরি করা প্রচারপত্রে আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনামলের সাতটি অপরাধের কথা উল্লেখ করেছে এনসিপি। এগুলো হলো ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহ দমনের নামে ৫৭ সেনা কর্মকর্তার হত্যাকাণ্ড; গুম, খুন ও ক্রসফায়ারের মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহরণ; ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে তিনটি অবৈধ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার হরণ; ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে চালানো হত্যাযজ্ঞ; লাখ লাখ কোটি টাকার দুর্নীতি, লুটপাট ও পাচার; ২০২১ সালে নরেন্দ্র মোদিবিরোধী আন্দোলনে চালানো হত্যাকাণ্ড এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় চালানো নজিরবিহীন গণহত্যা।
এরপর চারটি দাবিও উল্লেখ করা হয়েছে প্রচারপত্রে। এগুলো হলো প্রতিটি অপরাধের জন্য আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ট্রাইব্যুনাল বা কমিশন গঠন করে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচারের ব্যবস্থা; আগামী নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগ প্রশ্নের মীমাংসা তথা আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল; বিচার চলাকালে আওয়ামী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ রাখা এবং ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার ও তাঁদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা।
দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, সমাবেশে প্রায় ২০ হাজার মানুষের জমায়েত হতে পারে। এই সমাবেশে এনসিপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
দলগতভাবে আওয়ামী লীগের বিচার, দলটির নিবন্ধন বাতিল ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে গত ২১ এপ্রিল থেকে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় বিক্ষোভ, সমাবেশ ও মশালমিছিল করছে এনসিপি। এর ধারাবাহিকতায় এবার কিছুটা বড় পরিসরে ঢাকা মহানগর শাখার ব্যানারে সমাবেশ হতে যাচ্ছে।
এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীন শিশির। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা মহানগরের থানা পর্যায়ে কিছুদিন ধরে এনসিপির যে কর্মসূচিগুলো হচ্ছে, এগুলোরই চূড়ান্ত সমাবেশটা হবে আগামী ২ মে।