গণহত্যার দায়ে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার, বিচার না হওয়া পর্যন্ত রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে দলটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণার বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।

আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির সঙ্গে বৈঠক করেছে হেফাজতে ইসলাম। বৈঠকে এনসিপি ও হেফাজতের জ্যেষ্ঠ নেতারা অংশ নেন। হেফাজতে ইসলামের আগ্রহে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকেই দল দুটি আওয়ামী লীগের বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করে। এর আগে বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করে হেফাজত।

এনসিপির সঙ্গে বৈঠকে হেফাজতে ইসলামের পক্ষে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, নায়েবে আমির আহমেদ আবদুল কাদের, মাওলানা আহমেদ আলী কাসেমী ও মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানী।

আর এনসিপির পক্ষে অংশ নেন দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফ উদ্দীন মাহাদী, সংগঠক মো.

সানাউল্লাহ ও রফিকুল ইসলাম আইনী।

বৈঠক শেষে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘গণহত্যার দায়ে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার, বিচার না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের বিচারের দৃশ্যমান তৎপরতা এবং আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা—এসব বিষয়ে বৈঠকে ঐকমত্য হয়েছে।’ তবে নির্বাচনের বিষয়ে বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুননিবন্ধনের জন্য প্রস্তুতি শেষ হয়নি, ইসির কাছে সময় চাইবে এনসিপি৩ ঘণ্টা আগে

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ শাসনামলে আলেম ও বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলাগুলো প্রত্যাহারের বিষয়ে সবাই যেন একসঙ্গে কাজ করে, সে বিষয়েও হেফাজতের নেতারা আলোচনা করেছেন। পাশাপাশি ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরের নৃশংসতাসহ আওয়ামী লীগ আমলে গুম, খুনের বিচার ও সব মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে আগামী ৩ মে ঢাকায় অনুষ্ঠেয় হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশের প্রসঙ্গেও কথা বলেন হেফাজত নেতারা।

আরও পড়ুনবিএনপি নেতাদের বক্তব্যে ‘মৌলবাদ’ শব্দ নিয়ে আপত্তি হেফাজতের০৬ এপ্রিল ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এনস প র ঐকমত য আওয় ম ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

কিছু রাজনৈতিক দল ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে ফাঁদে পড়েছে: জাপা মহাসচিব

কিছু রাজনৈতিক দল ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে ফাঁদে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী। তবে কারা, সেটা স্পষ্ট করেননি তিনি।

আজ শনিবার বিকেলে রংপুর নগরের সেন্ট্রাল রোডে জাপা কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শামীম হায়দার পাটোয়ারী এ মন্তব্য করেন।

শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু দল ইতিমধ্যে ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে বা স্বাক্ষর করে একধরনের ফাঁদে পড়ে গেছে। কিছু রাজনৈতিক দল বলছে, ঐকমত্য কমিশন প্রতারণা করেছে। এখানে প্রতারক ও প্রতারণা শব্দটি উচ্চারিত হচ্ছে। কিন্তু আমরা তো এ রকম সংস্কার চাইনি।’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ঐকমত্য তৈরিতে ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে জাপা মহাসচিব বলেন, কমিশন ৫৬টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে ৩০টি দলকে বাদ দিয়েছে। যে দলগুলো সেখানে গেছে, তাদের মধ্যে অনেকগুলো বিষয় নিয়ে মতবিরোধ আছে। এক ভাগকে ঐক্য প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, আরেক ভাগ ঐক্য প্রক্রিয়ায় সম্পূর্ণ অংশগ্রহণ করেছে। অন্য আরেক ভাগ ঐক্য প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে পরে সম্পূর্ণ দ্বিমত পোষণ করেছে।

বর্তমান প্রশাসনিক কাঠামো বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির বলে দাবি করেছেন শামীম হায়দার পাটোয়ারী। তিনি বলেন, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল। কারণ, নির্বাচিত সরকার সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে ভোট করেছে ও নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছে। এই মুহূর্তে দেশে যে প্রশাসনিক কাঠামো আছে, তার ব্যাপারে তথ্য উপদেষ্টা নিজেই বলেছেন, তাঁরা বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর কথামতো প্রশাসন সাজিয়েছে, তার সঙ্গে এনসিপি আছে। এই তিন দলের বাইরে অন্য কোনো দল যদি ভোটে আসে, এই প্রশাসনিক কাঠামো সেই দলকে সুষ্ঠু ভোট হতে দেবে না।

গণভোটের দাবি নজিরবিহীন উল্লেখ করে শামামী হায়দার পাটোয়ারী বলেন, সংবিধানে এই মুহূর্তে গণভোট কোনো প্রভিশনে নেই। বর্তমানে গণভোটের যে দাবি উঠেছে, সংসদে পাস হওয়ার আগে এই দাবি বাস্তবায়ন হলে ঐকমত্য কমিশনকে সংসদের মর্যাদা দেওয়া হবে। ঐকমত্য কমিশন সার্বভৌম নয়, নির্বাচিত নয় ও সংসদ নয়। সংসদকে এড়িয়ে গিয়ে কোনো আইন পাস করা হলে তা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে।

এ সময় জাপার কো–চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান, প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ইয়াসির, রংপুর জেলার আহ্বায়ক আজমল হোসেন, সদস্যসচিব হাজী আবদুর রাজ্জাক, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হাসানুজ্জামানসহ জাপা ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুদানের এল-ফাশের শহরে ‘চরম বিপদে’ বাসিন্দারা: ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস
  • সুদানে গণহত্যার প্রতিবাদে জাবি ও জবিতে মানববন্ধন
  • জুলাইবিরোধী শক্তির শাস্তি দাবিতে ইবিতে বিক্ষোভ
  • সুদানে আরএসএফের গণহত্যায় আরব আমিরাত ইন্ধন দিচ্ছে কেন
  • সনদ বাস্তবায়নে দ্রুত সিদ্ধান্ত, আরপিওতে পরিবর্তন আসছে
  • সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে
  • একাত্তরের গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: আলাল
  • তড়িঘড়ি না করে সংবিধান সংস্কারে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান
  • কিছু রাজনৈতিক দল ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে ফাঁদে পড়েছে: জাপা মহাসচিব
  • সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী