বেশির ভাগ সময় পথনবজাতকদের পথেই করুণ মৃত্যু হয়। তারা তাদের প্রকৃত মা–বাবাকে কখনো দেখার সুযোগ পায় না, যদিও তারা জন্মের পরে চোখ মেলে মা–বাবাকে দেখতে চায়। কথাগুলো বলেন পথনবজাতকদের নিয়ে করা ডা. মুজিব নিউবর্ন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মো. মজিবুর রহমান।

১২ এপ্রিল বিশ্ব পথশিশু দিবসের কর্মসূচি সামনে রেখে আজ বৃহস্পতিবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন পেশায় চিকিৎসক মজিবুর রহমান। সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।

মজিবুর রহমান বলেন, নবজাতক একটি চমৎকার ও আবেগপূর্ণ শব্দ। এই শব্দের সঙ্গে যখনই পথ শব্দটি যোগ হয়, তখন এটা হয়ে যায় করুণ এক গল্প। পথনবজাতকদের স্থান হয় মায়ের কোলের পরিবর্তে ধানখেত, ময়লার ভাগাড় কিংবা অন্য কোথাও। এই করুণ দৃশ্য বন্ধ করতে চান তাঁরা।

মজিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা এমন একটি ডেডিকেটেড এনআইসিইউ স্থাপন করতে চাই, যেখানে সব সরঞ্জামের পাশাপাশি মায়েদের বুকের দুধের ব্যবস্থাও থাকবে। কিছু জরুরি মুহূর্তে একজন নবজাতককে বাঁচাতে মায়ের বুকের দুধ একমাত্র ভরসা থাকে। আমরা সরকারের কাছে এই সহযোগিতা প্রদানের আহ্বান জানাই।’

পথনবজাতকদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়ার আহ্বান জানান সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সৈয়দ মো.

জিয়াউল করিম। তিনি বলেন, ‘পথনবজাতকদের রক্ষায় সামাজিকভাবে আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। নবজাতকদের মৃত্যুর দায়ে আইনি প্রক্রিয়া আরও জোরালো করলে অপরাধ কমে আসবে।’

বাংলাদেশ নবজাতক হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদা সুলতানা আসমা কোথাও কোনো নবজাতকের সন্ধান পেলে তাঁদেরকে জানানোর অনুরোধ করেন। কেউ যেন নবজাতককে ফেলে না যান, সে বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

সাংবাদিক মোস্তফা মল্লিকের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. হুমায়ুন কবির মঞ্জু ও সাংবাদিক এ কে এম সাখাওয়াত হোসেন।

সংবাদ সম্মেলন থেকে ১২ এপ্রিল বিশ্ব পথশিশু দিবস ২০২৫ উপলক্ষে পথনবজাতকের বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে শোভাযাত্রা আয়োজনের ঘোষণা দেওয়া হয়। শোভাযাত্রা আয়োজন করবে ডা. মুজিব নিউবর্ন ফাউন্ডেশন। এতে উপস্থিত থাকবেন নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

শরীয়তপুরে এনসিপি নেতার অফিসে ককটেল বিস্ফোরণ

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শরীয়তপুরে জেলার সিনিয়র যুগ্ম সমন্বয়কারী সবুজ তালুকদার অফিসে ককটেল নিক্ষেপ করেছে সন্ত্রাসীরা। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণের শব্দে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সোমবার (৩ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে সদর পৌরসভা ঈদগাহ মাঠের পাশে অবস্থিত অফিসটিতে ঘটনাটি ঘটে। 

পালং মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, “ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। সেখান থেকে একটি অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” 

আরো পড়ুন:

‎নামাজরত বাবাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ, ৩ পুলিশ আহত

মসজিদে ঢুকে হামলা ও ভাঙচুর, থানায় অভিযোগ

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র জানায়, সবুজ তালুকদার এনসিপি করেন। তিনি দলটির জেলার সিনিয়র যুগ্ম সমন্বয়কারী। সোমবার রাত ৮টার দিলে সন্ত্রাসীরা তার অফিস লক্ষ্য করে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায়। বিস্ফোরণের আওয়াজে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে ঘটনাস্থল থেকে একটি বিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করে পুলিশ। 

এনসিপির জেলা সিনিয়র যুগ্ম সমন্বয়কারী সবুজ তালুকদার বলেন, ‘শুরু থেকেই আমি এনসিপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। দীর্ঘদিন ধরেই আমাকে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন থেকে মোবাইলে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। পরিকল্পিতভাবে এই ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। আমি বলতে চাই—জুলাই আন্দোলনের সময় স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে আমরা ভয় পাইনি, তাই ভীতি দেখিয়ে কোনো ফল হবে না। দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”

ঢাকা/সাইফুল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ