পথনবজাতকের সহায়তায় এগিয়ে আসার আহ্বান
Published: 10th, April 2025 GMT
বেশির ভাগ সময় পথনবজাতকদের পথেই করুণ মৃত্যু হয়। তারা তাদের প্রকৃত মা–বাবাকে কখনো দেখার সুযোগ পায় না, যদিও তারা জন্মের পরে চোখ মেলে মা–বাবাকে দেখতে চায়। কথাগুলো বলেন পথনবজাতকদের নিয়ে করা ডা. মুজিব নিউবর্ন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মো. মজিবুর রহমান।
১২ এপ্রিল বিশ্ব পথশিশু দিবসের কর্মসূচি সামনে রেখে আজ বৃহস্পতিবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন পেশায় চিকিৎসক মজিবুর রহমান। সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।
মজিবুর রহমান বলেন, নবজাতক একটি চমৎকার ও আবেগপূর্ণ শব্দ। এই শব্দের সঙ্গে যখনই পথ শব্দটি যোগ হয়, তখন এটা হয়ে যায় করুণ এক গল্প। পথনবজাতকদের স্থান হয় মায়ের কোলের পরিবর্তে ধানখেত, ময়লার ভাগাড় কিংবা অন্য কোথাও। এই করুণ দৃশ্য বন্ধ করতে চান তাঁরা।
মজিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা এমন একটি ডেডিকেটেড এনআইসিইউ স্থাপন করতে চাই, যেখানে সব সরঞ্জামের পাশাপাশি মায়েদের বুকের দুধের ব্যবস্থাও থাকবে। কিছু জরুরি মুহূর্তে একজন নবজাতককে বাঁচাতে মায়ের বুকের দুধ একমাত্র ভরসা থাকে। আমরা সরকারের কাছে এই সহযোগিতা প্রদানের আহ্বান জানাই।’
পথনবজাতকদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়ার আহ্বান জানান সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সৈয়দ মো.
বাংলাদেশ নবজাতক হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদা সুলতানা আসমা কোথাও কোনো নবজাতকের সন্ধান পেলে তাঁদেরকে জানানোর অনুরোধ করেন। কেউ যেন নবজাতককে ফেলে না যান, সে বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
সাংবাদিক মোস্তফা মল্লিকের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. হুমায়ুন কবির মঞ্জু ও সাংবাদিক এ কে এম সাখাওয়াত হোসেন।
সংবাদ সম্মেলন থেকে ১২ এপ্রিল বিশ্ব পথশিশু দিবস ২০২৫ উপলক্ষে পথনবজাতকের বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে শোভাযাত্রা আয়োজনের ঘোষণা দেওয়া হয়। শোভাযাত্রা আয়োজন করবে ডা. মুজিব নিউবর্ন ফাউন্ডেশন। এতে উপস্থিত থাকবেন নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গুমের বিচারপ্রক্রিয়া ত্বরান্বিত চায় জাতিসংঘ, ঢাকায় তদন্ত কমিশনের সঙ্গে বৈঠক
জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এনফোর্সড অর ইনভলান্টারি ডিজঅ্যাপিয়ারেন্সের (ডব্লিউজিইআইডি) প্রতিনিধিদল গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেছে। সেখানে তাঁরা গুমের প্রতিটি ঘটনার তদন্ত, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচারপ্রক্রিয়া ত্বরান্বিতকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
সোমবার রাজধানীর গুলশানে কমিশনের কার্যালয়ে ডব্লিউজিইআইডির ভাইস চেয়ারপারসন গ্রাজিনা বারানোস্কা এবং সদস্য আনা লোরেনা ডেলগাদিয়ো পেরেজের সমন্বয়ে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী তাঁদের স্বাগত জানান এবং কমিশনের কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করেন। তিনি বলেন, কমিশনে অদ্যাবধি গুমসংক্রান্ত ১ হাজার ৮৩০টি অভিযোগ জমা পড়েছে। কমিশন সব অভিযোগ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করছে।
কমিশনের সভাপতি বলেন, গুমের শিকার হয়ে ফেরত না আসা ১০০ অভিযোগ পুলিশের কাছে তদন্তের জন্য দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ভুক্তভোগী ও তাঁদের পরিবারের সঙ্গে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে তিনটি কনসালটেন্সি (পরামর্শ) সভা করা হয়েছে। কমিশন ইতিমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে দুটি অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন হস্তান্তর করেছে।
কমিশনের সদস্য মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, লজিস্টিক, জনবলসংকট ও রাজনৈতিক নানা সীমাবদ্ধতার মাঝেও কমিশন দৃঢ়তার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। ভুক্তভোগী ও তাঁদের পরিবারের আকাঙ্ক্ষাকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছে।
ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে কমিশনের আরও দুই সদস্য বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী ও মো. নূর খান উপস্থিত ছিলেন।
তদন্ত কমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রতিনিধিদলের সদস্যরা কমিশনের কাজের প্রশংসা করেন। তাঁরা গুমের প্রতিটি ঘটনার তদন্ত, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচারপ্রক্রিয়া ত্বরান্বিতকরণ এবং প্রয়োজনীয় প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এ ছাড়া গুম থেকে ফেরত না আসা ব্যক্তিদের সন্ধানে সার্চ কমিটি গঠনে করণীয় সম্পর্কে সরকারের উচ্চপর্যায়ে আলোচনার কথা উল্লেখ করেন। পাশাপাশি সুষ্ঠু তদন্তের জন্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করাসহ কমিশনের কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগিতাদানের আশা প্রকাশ করেন।